Tripura: ত্রিপুরায় বিজেপির দুর্দান্ত জয়ের মধ্যে খোদ সভাপতির হার, কাঠগড়ায় সেই বিপ্লব

BJP Tripura president Rajib Bhattacharjee: এক বালতি দুধে এক ফোঁটা চোনার মতো ত্রিপুরায় দলের বিপুল সাফল্যের মধ্যে পরাজিত হয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য। পরাজয়ের জন্য তিনি কার্যত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবকেই দায়ী করলেন।

Tripura: ত্রিপুরায় বিজেপির দুর্দান্ত জয়ের মধ্যে খোদ সভাপতির হার, কাঠগড়ায় সেই বিপ্লব
রাজীব ভট্টাচার্য এবং বিপ্লব কুমার দেব
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Mar 03, 2023 | 10:16 PM

আগরতলা: ৬০ আসনের ত্রিপুরা বিধানসভায় ৩৩টি আসনে জিতে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে পরবর্তী সরকার গঠন করতে যাচ্ছে বিজেপি-আইপিএফটি জোট। এই দুর্দান্ত সাফল্যের মধ্যে একফোটা চোনার মতো, বনমালিপুর বিধানসভা কেন্দ্রে ত্রিপুরা রাজ্য বিজেপি সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্যের পরাজয়। এই প্রথমবার প্রার্থী হয়েছিলেন রাজীব। প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি গোপাল চন্দ্র রায়ের বিরুদ্ধে ১,৩৬৯ ভোটের ব্যবধানে হেরেছেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনে এই আসনেই জিতেছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা বিপ্লব কুমার দেব। রাজ্য জুড়ে গেরুয়া শিবিরের এই বিপুল সাফল্যের মধ্যে কেন হারতে হল খোদ সেনাপতিকেই? শুক্রবার, নিজের হারের জন্য কার্যত বিপ্লব দেবকেই কাঠগড়ায় তুললেন রাজীব।

টিভি নাইন বাংলার প্রতিনিধিকে রাজীব ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, চার বছর ধরে এই কেন্দ্রের বিধায়ক ছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। সম্ভবত এর ফলে যে প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা তৈরি হয়েছিল, তার জন্যই পরাজয় হয়েছে তাঁর। বস্তুত, বিপ্লব দেবের বিরুদ্ধে শুধু যে বনমালিপুর বিধানসভা কেন্দ্রেই ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল, তা নয়। রাজ্য জুড়েই বিপ্লব দেবের জনপ্রিয়তা ক্রমশ কমছিল। আর তা উপলব্ধি করেই দশ মাস আগে বিপ্লব দেবকে মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে সরিয়ে সেই জায়গায় মানিক সাহাকে এনেছিল বিজেপি তথা আরএসএস। একেবরে গুজরাট মডেল মেনে। গুজরাটেও নির্বাচনের কয়েক মাস আগেই বিজয় রুপানিকে সরিয়ে, তাঁর জায়গায় নয়া মুখ্যমন্ত্রী করা হয় ভূপেন্দ্র প্যাটেলকে। বিপ্লব দেবকে সামনে রেখেই যদি এইবারের নির্বাচন লড়ত বিজেপি, তাহলে যে তাদের জেতা কঠিন ছিল, তা গেরুয়া শিবিরও খুব ভাল করেই জানে।

তবে শুধুমাত্র যে বিপ্লব দেবের ক্রমহ্রাসমান জনপ্রিয়তাই রাজীব ভট্টাচার্যের হারের কারণ, রাজনৈতিক মহল তা মনে করছে না। স্থানীয় স্তরে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে, এর পিছনে রাজীবের নিজস্ব ভাবমূর্তিরও বড় ভূমিকা আছে। আসলে, এক বছর আগে এই বনমালিপুর কেন্দ্রেই সিপিআইএম-এর দলীয় কার্যালয়ে ভাংচুর চালানো হয়েছিল। খোদ রাজীব ভট্টাচার্য নিজে বাঁশ হাতে সিপিআইএম-এর কার্যালয় ভাঙতে নেমেছিলেন বলে শোনা যায়। এমনকি, তাঁর সেই রণংদেহী ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়েও পড়েছিল। এই দিক থেকে তাঁর ভাবমূর্তিও বিপ্লব দেবের তুলনায় মোটেই উজ্জ্বল নয়। নিজের হাতে সিপিআইএম অফিস ভাঙাও রাজীবের হারের বড় কারণ বলে মনে করা হচ্ছে। রাজীব ছাড়া, চারিলাম আসনে বিদায়ী উপমুখ্যমন্ত্রী জিষ্ণু দেব বর্মার হারও ত্রিপুরায় বিজেপির পক্ষে বড় পরাজয়। তিপ্রা মোথার সুবোধ দেব বর্মার কাছে ৮৫৮ ভোটের ব্যবধানে হেরেছেন তিনি।

অদ্ভুতভাবে, শুধুমাত্র রাজীব ভট্টাচার্যই নয়, হারতে হয়েছে মেঘালয়ের বিজেপি সভাপতি আর্নেস্ট মাওরিকেও। ভোটের আগে গরুর মাংস খাওয়া নিয়ে মন্তব্য করে সংবাদ শিরোনামে উঠে এসেছিলেন তিনি। পশ্চিম শিলং আসনে তিনি ইউডিপি-র পল লিংডোর বিরুদ্ধে হেরেছেন। বস্তুত, উত্তর-পূর্বের যে তিন রাজ্যে সদ্য ভোট হল, তার মধ্যে একমাত্র নাগাল্যান্ডে বিজেপির রাজ্য সভাপতি নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক জনপ্রিয় তেমজেন ইমা আলং। গত মাসে নির্বাচনী প্রচারের সময়, খোদ প্রদানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর প্রশংসা করেছিলেন। তবে, তেমজেনকেও জিততে হয়েছে বেশ কষ্ট করে।