সরকারি সম্পত্তি ও আত্মরক্ষায় গুলি চালিয়েছে আধাসেনা, বৈধ বলল কমিশন

কমিশন সূত্রে জানানো হয়েছে, সিআইএসএফ আত্মরক্ষার্থে এবং সরসারি সম্পত্তি রক্ষা করতে গুলি চালিয়েছিল। যে কারণে নির্বাচন কমিশন একে বৈধ বলে ঘোষণা করেছে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলি লেগেই যে চার ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে সেটাও কার্যত কমিশনের তরফে স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে।

সরকারি সম্পত্তি ও আত্মরক্ষায় গুলি চালিয়েছে আধাসেনা, বৈধ বলল কমিশন
ছবি- টুইটার
Follow Us:
| Updated on: Apr 10, 2021 | 10:25 PM

নয়া দিল্লি: চতুর্থ দফার ভোটে কোচবিহারের শীতলকুচিতে গুলি চালানোর ঘটনাকে বৈধ বলে ঘোষণা করল নির্বাচন কমিশন। এ দিন নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানানো হয়েছে, সিআইএসএফ আত্মরক্ষার্থে এবং সরসারি সম্পত্তি রক্ষা করতে গুলি চালিয়েছিল। যে কারণে নির্বাচন কমিশন একে বৈধ বলে ঘোষণা করেছে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলি লেগেই যে চার ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে সেটাও কার্যত কমিশনের তরফে স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে।

একই সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে নির্দেশিকা জারি করে জানানো হয়েছে, আগামী ৭২ ঘণ্টার জন্য কোনও রাজনৈতিক নেতা কোচবিহার জেলায় প্রবেশ করতে পারবেন না। আগামিকালই শীতলকুচিতে যাওয়ার কথা ছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। কমিশন বক্তব্য, রাজনৈতিক নেতারা এই অবস্থায় জেলায় ঢুকলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে।

শীতলকুচির ঘটনা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক আরিজ আফতাব জানিয়েছেন, ১২৬ নম্বর বুথে সকাল থেকে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া ৯ টা ৪৫ পর্যন্ত সুষ্ঠুভাবে চলছিল। কিন্তু, ভোটকেন্দ্রের কাছে এক যুবক হয়ে পড়েন। সেই সময় ২-৩ জন মহিলা তাঁর শুশ্রূষা করছিলেন। জেলা পুলিশের রিপোর্টে প্রকাশ পেয়েছে, সিআইএসএফের নিরাপত্তা কর্মীরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছে যুবকের স্বাস্থ্যের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছিলেন।

কিন্তু সেই সয়ম কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা মনে করেন, ছেলেটিকে মারধর করা হয়েছে। কিছু মানুষের এমন ভুল বোঝাবুঝির কারণে সেখানে উপস্থিত বাকিরা উত্তেজনা সৃষ্টি করে এবং প্রায় ৩০০-৩৫০ গ্রামবাসীকে জড়ো করা হয়। তাঁদের মধ্যে অনেকে ঘরোয়া কিছু অস্ত্রও নিয়ে আসেন এবং আধাসেনার অস্ত্র ও গোলাবারুদ ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। গ্রামবাসীরা পোলিং কর্মীদের উপর হামলার চেষ্টাও করেন বলে বলে অভিযোগ।

আরও পড়ুন: ‘বন্দুক ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছিল, ৩০০ জন ঘিরে ধরে, তারপরই চলে গুলি,’ ব্যাখ্যা পুলিশ সুপারের

এমন সময় সিআইএসএফ কর্মী এবং হোম গার্ড, যারা ডিউটিতে ছিলেন, তাদের মধ্যে কয়েকজন আহত হন। এরপর কুইক রেসপন্স টিমের সদস্যদের উপরও আক্রমণ করা হয় বলে অভিযোগ। এই অবস্থায় সিআইএসএফ কর্মীরা শূন্যে গুলি চালায় এবং কাউকে আঘাত না দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করে। কিন্তু এতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসনি। এরপরে সিআইএসএফকে সরাসরি ইভিএম, নির্বাচন কর্মী এবং ভোটদানের অন্যান্য সামগ্রীর মতো সম্পদ বাঁচাতে গুলি চালাতে হয়, কারণ গ্রামবাসীরা সবকিছু আগুন ধরিয়ে দিচ্ছিল। এমনটাই দাবি করা হয়েছে জেলা প্রশাসনের রিপোর্টে।

গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত চারজনকে স্থানীয়কে মাথাভাঙা মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হলে তাঁদের মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। সিআইএসএফ কর্মীদের মধ্যে হোমগার্ড এবং স্থানীয় আইসি এবং এসডিপিও-র মত পোলিং এজেন্টদের ঘটনাস্থল থেকে দ্রুত সরিয়ে দেওয়া হয়। ভোটিং সরঞ্জামগুলি নিরাপদ স্থানে সরানো হয়। মৃতগুলি ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠান হয়।

ঘটনার ভিত্তিতে এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়েছে এবং তদন্ত চলছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও পর্যবেক্ষণে রয়েছে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর পাশাপাশি পুলিশ ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: ‘রাস্তায় বাচ্চাকে মার, প্রতিবাদ করাতেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর এলোপাথাড়ি গুলি’, ৫ যুবকের মৃত্যুতে উত্তাল মাথাভাঙা সীমানা