AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

মা-কে হারানোর শোক এখনও কাটেনি, করোনা আক্রান্তদের অক্সিজেন মেশিনের ব্যবস্থা অরিজিতের

অরিজিতকে কৃতজ্ঞতাও জানিয়েছেন  স্বাস্থ্য আধিকারিক চিকিৎসক । মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের সরকারি হাসপাতালে করোনা মোকাবিলায় ব্যবহৃত হবে এই মেশিন।

মা-কে হারানোর শোক এখনও কাটেনি, করোনা আক্রান্তদের অক্সিজেন মেশিনের ব্যবস্থা অরিজিতের
অরিজিৎ সিং।
| Updated on: May 23, 2021 | 1:47 PM
Share

দক্ষিণ কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি ছিলেন অরিজিৎ সিংয়ের মা। সোশ্যাল মিডিয়ায় গায়কের মায়ের জন্য সবাইকে রক্তদানের অনুরোধ জানিয়েছিলেন সৃজিত-স্বস্তিকারা। অনুরোধে সাড়াও মিলেছিল। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। কোভিড থেকে সেরে ওঠার পরে ব্রেন স্ট্রোক, ভেন্টিলেশন, একমো সাপোর্ট সব করেও পারেননি মাকে বাঁচাতে। গত বুধবার রাত এগারোটা নাগাদ শহরের হাসপাতালে মাত্র ৫২ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন অরিজিতের মা অদিতি সিং।

 

আরও পড়ুন ‘মানুষ ভাল নেই’, কঠিন সময়ে মনখারাপের সুর অনুপমের গানে

 

মা-কে হারানোরশোক এখনও কাটেনি। কিন্তু কঠিন সময়ে মাতৃহারা ছেলে মানুষের পাশে দাঁড়াল। দাঁড়াল তাঁর নিজের শহর মুর্শিদাবাদের মানুষের পাশে। করোনা পরিস্থিতিতে সারা দেশ জেরবার। হাসপাতালে বেড নেই। রক্তের অভাব। অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। চারিদিকে হাহাকার শুরু হয়েছে। করোনা আক্রান্তদের কথা মাথায় রেখে অরিজিৎ নিলেন এক উদ্যোগ। মুর্শিদাবাদ জেলা স্বাস্থ্য দফতরকে পাঁচ-পাঁচটিটি হাই ফ্লো নেজাল অক্সিজেন থেরাপি মেশিন দিয়ে সাহাযয় করলেন অরিজিৎ। ‘ধৃতী ফাউন্ডেশন’-এর মাধ্যমে মুর্শিদাবাদ জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক চিকিৎসক প্রশান্ত বিশ্বাস এর হাতে মেশিনগুলো তুলে দেন গায়ক। অরিজিতকে কৃতজ্ঞতাও জানিয়েছেন  স্বাস্থ্য আধিকারিক চিকিৎসক । মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের সরকারি হাসপাতালে করোনা মোকাবিলায় ব্যবহৃত হবে এই মেশিন।

 

এটি প্রথমবার নয়। অরিজিৎ আগেও বহুভাবে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। বাড়িয়ে দিয়েছেন সাহায্যের হাত। তবে গোটাটাই করেছেন প্রচারের আড়ালে থেকে। শুধু সাহায্যের হাতই বাড়াননি সময়ে-সময়ে, করোনা বিধিনিষেধ মেনে চলার আবেদনও জানিয়েছেন মানুষদের। অরিজিতের শেষ সোশ্যাল পোস্টেও মিলেছে তাঁর প্রমাণ।

তিনি লেখেন, ‘আমি আবার বলছি। দয়া করে নিজেরা লক ডাউন করুন। বাইরে বেরোবেন না। আমি জানি আমরা এমন একটি দেশ যেখানে একদিন কাজ না করলে মানুষ না খেতে পেয়ে মারা যাবে। তাই দয়া করে ডাবল মাস্ক পড়ুন। পারলে ফেস-শিল্ড পড়ুন। চোখ মুখ নাক কান এবং মুখ স্পর্শ করবেন না। যদি করেন তবে আগে হাত স্যানিটাইজ করুন। প্রতি আধ ঘন্টায় সাবান দিয়ে হাত ভালোভাবে পরিষ্কার করুন। আপনি যদি পাবলিক টয়লেট ব্যবহার করছেন তাহলে আগে স্যানিটাইজ করুন কিংবা সাবান জল দিয়ে ধুয়ে নিন। খালি পেট থাকবেন না। সর্বদা সতর্ক থাকুন। আপনাকে যদি বাইরে যেতেই হয় তাহলে মন শক্ত করে পরিবার এর থেকে দূরে থাকুন। আপনার লক্ষণ সম্পর্কে সচেতন হন।

 

 

লক্ষণ গুলো সম্পর্কে আপনার যদি এক শতাংশ ও সন্দেহ থাকে তাকে হাল্কা ভাবে নেবেন না। Prone পসিশন এ থাকুন। হালকা গরম জল খান। এই অভ্যেস সর্দি কে শক্ত হতে দেবেনা। কার্ভোল প্লাস ক্যাপসুল দিয়ে দিনে তিনবার বাষ্প নিন। এটি আপনার ফুসফুস এ সংক্রমণ রোধে সাহায্য করবে। (ডাক্তার এর পরামর্শ নিন। ) কপালভাতী, ভ্রামরি এবং অন্যান্য প্রাণায়াম করুন। (ইউটিউবে বিভিন্ন ভিডিয়ো রয়েছে ) তুলসীপাতা গিলোই পাতা আদা গোলমরিচ নীমপাতা হলুদ দারচিনি লবঙ্গ বাসক পাতা ইত্যাদি দিয়ে কারা বানিয়ে খান কিংবা এমনি খান। প্রথম দিকের রোদ থেকে ভিটামিন-ডি নিন কিংবা ডাক্তার এর পরামর্শ নিয়ে ট্যাবলেট খান। প্রতিদিন লেবু খান। অথবা ডাক্তার এর পরামর্শ নিয়ে ভিটামিন C ট্যাবলেট খান। রসুন এর দু টুকড়ো খান কিংবা ডাক্তার এর পরামর্শে জিঙ্ক ট্যাবলেট খান। প্রোটিন জাতীয় খাবার যেমন ডাল পনীর ছানা ডিম মাছ মুরগির মাংস খান। যারা এগুলো কিনতে পারছেনা তাদের খাবার দিয়ে সাহায্য করুন। প্রতিবার নিজের মূত্র এর রং পরীক্ষা করুন। নিশ্চিত করুন যে আপনি পর্যাপ্ত পরিমানে জল পান করছেন। ORS কিংবা নূন চিনি জল খান। এগুলো একে অপর কে মনে করিয়ে দিন। অতিরিক্ত চিনি জাতীয় খাবার বা প্যাকেট এর খাবার এড়িয়ে চলুন।যথেষ্ট ঘুম দরকার। অন্য ব্যক্তি থেকে কমপক্ষে ছ’ ফুট দূরত্ব বজায় রাখুন।ইতিবাচক হবেন এবং ভয় পাবেন না। আতঙ্কিত হবেন না। ইতিবাচক মনোভাব এবং লড়াই করার চেতনা এই রোগ থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করবে। যে মুহূর্তে জ্বর আসছে তৎক্ষণাৎ ডাক্তার এর সাথে পরামর্শ করুন, সময় নষ্ট করবেন না। টেস্ট করুন। চাপের কারণে রিপোর্ট আসতে দেরি হচ্ছে তাই ডাক্তার দ্বারা নির্ধারিত ওষুধ শুরু করুন। আপনার তাপমাত্রা এবং অক্সিজেন স্তর পরীক্ষা করুন। যদি আপনার অক্সিমিটার না থাকে তাহলে কারোর সাহায্য নিন। যদি অক্সিজেন এর স্তর ৯৪ শতাংশ এর নীচে নেমে যায় তাহলে অবিলম্বে ডাক্তার এর পরামর্শ নিন। সবাই সাবধানে থাকুন। আর কী বলতে পারি। এই বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে হবে আমাদেরই। ’