‘কালিকাদাকে সামনে রেখেই কাজ করছি’, ‘দোহার’-এর জন্মদিনে বললেন রাজীব
Bengali Music: ২০১৭-এ কালিকাপ্রসাদের প্রয়াণ ‘দোহার’কে যেন স্তব্ধ করে দিয়েছিল। অসংখ্য অনুরাগীর পাশাপাশি ‘দোহার’ পরিবারও ভেঙে পড়েছিল। কিন্তু কালিকাপ্রসাদকে সামনে রেখেই ফের ঘুরে দাঁড়িয়েছে ‘দোহার’।
২২ বছর আগের ৭ অগস্ট। কলেজ স্ট্রিটে স্টুডেন্টস হল। গোলদিঘির পাশেই। প্রথম অনুষ্ঠান করলেন একঝাঁক শিল্পী। এখন হেরিটেজ হল হিসেবে বন্ধ রাখা হয়েছে সেই হল। ১৫০-২০০ জন দর্শকের সামনে অনুষ্ঠান করার মূল উদ্দেশ্য ছিল শিল্পী অনন্ত ভট্টাচার্যের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন। সে বছরই তিনি প্রয়াত হন। সম্পর্কে তিনি ছিলেন সঙ্গীতশিল্পী কালিকাপ্রসাদ ভট্টাচার্যের কাকা।
সেই শুরু। সেই পথ চলা আজও একই রকম গৌরবময়। সেই পথ চলার নাম ‘দোহার’। আজ সেই দলের জন্মদিন। প্রথম দিনের স্মৃতিচারণায় দোহারের অন্যতম সদস্য রাজীব দাস TV9 বাংলাকে বললেন, “সে সময় আমি এবং কালিকাদা দুজনেই আসাম থেকে কলকাতায় পড়াশোনা করতে এসেছিলাম। কলকাতায় এসে আমার কালিকাদার সঙ্গে পরিচয়। কালিকাদার ইচ্ছে ছিল কাকার যে বিপুল লোক গানের সম্ভার তা কলকাতার মানুষকে শোনাবেন। ওর বিশ্বাস ছিল, কলকাতার দর্শক সেই গানের সমাদর করবেন। কারণ সারা পৃথিবীর বাংলা গানের মক্কা কলকাতা। সে জন্য শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের জন্য অনুষ্ঠান করেছিলাম। দল তৈরি করার কোনও ভাবনা সে সময় ছিল না। তখন কালিকাদা মূলত তবলা বাজাত। আমি গান গাইতাম। সেই বন্ডিং তৈরি হয়ে গিয়েছিল। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অভীক মজুমদার আমাদের নাম দেন ‘দোহার’। আমাদেরও নামটা পছন্দ হয়ে যায়। সকলের ভাল লাগল সে অনুষ্ঠান। আরও কাজ করতে বললেন। আমরাও চেষ্টা শুরু করলাম।”
‘দোহার’ নাম কেন? রাজীব ব্যখ্যা করলেন, “লোক সঙ্গীতে মূল গায়েন থাকেন। বাকিরা কোরাস করেন। পদাবলী কীর্তনেও তাই হয়। গাজনেও তাই। আমরা সেই বাকিরা। সেই হিসেবে ‘দোহার’। কারণ আমার লোকগান সংগ্রহ করি। মূল গায়েন তাঁরাই।”
২০১৭-এ কালিকাপ্রসাদের প্রয়াণ ‘দোহার’কে যেন স্তব্ধ করে দিয়েছিল। অসংখ্য অনুরাগীর পাশাপাশি ‘দোহার’ পরিবারও ভেঙে পড়েছিল। কিন্তু কালিকাপ্রসাদকে সামনে রেখেই ফের ঘুরে দাঁড়িয়েছে ‘দোহার’। রাজীব বললেন, “২০১৭-র সেই দিন থেকেই কালিকাদাকে সামনে রেখেই আজ পর্যন্ত কাজ করছি। যতদিন ‘দোহার’ থাকবে, কালিকাপ্রসাদও ‘দোহার’ হিসেবে আর সবার মধ্যে থাকবে।”
২২ বছর ধরে দর্শকের ভালবাসা পাওয়া, এগিয়ে যাওয়া, টিকে থাকা তো সহজ কথা নয়। সেই স্ট্রাগল কতটা? রাজীব শেয়ার করলেন, “এটা হল একটা জিনিসের সঙ্গে লেগে থাকার লড়াই। আমরা থেমে থাকিনি। কিছু না কিছু করেছি। ১০ টা কাজের মধ্যে ছ’টা বিফলে গিয়েছে হয়তো। চারটে মানুষের সমাদর পেয়েছে। ওটাই থেকে গিয়েছে। আজ পিছনে ফিরে তাকালে মনে হচ্ছে, অনেক কাজই তো করতে পেরেছি। মানুষের শুভেচ্ছা, ভালবাসা, প্রশ্রয় ছাড়া এটা অসম্ভব। আমাদের দলের পরিবেশও পরিবারের মতোই। সেটাও খুব জরুরি।”
শুধু জন্মদিন নয়। আজকের দিনটা দোহারের কাছে অন্য কারণেই বিশেষ একটি দিন। রাজীব জানালেন, রিয়ালিটি শো ‘সুপার সিঙ্গার’-এর শুটিং আজ থেকে শুরু করছেন তাঁরা। এই প্রতিযোগীতায় লোকগানের প্রতিযোগীদের গ্রুমিং, মিউজিক অ্যারেঞ্জমেন্ট, প্রেজেন্টেশন পর্যন্ত পুরো দায়িত্বই সামলাবেন দোহারের সদস্যরা।
আরও পড়ুন, বম্বে আদালতে পিটিশন খারিজ, আপাতত জেলেই থাকছেন রাজ