নবাগতাদের সঙ্গে প্রচণ্ড দুর্ব্যবহার করতেন মহানায়িকা সুচিত্রা সেন, তিনি কি নতুন নায়িকাদের হিংসা করতেন?

Suchitra Sen : সুচিত্রা সেন সেই অভিনেত্রী, যাঁর নাম অনেক ক্ষেত্রেই যেত নায়কের আগে। তাঁর সঙ্গে কথা বলার দুঃসাহস দেখাতে পারতেন না কেউ। খোশ গল্প করা তো দূরের কথা। হঠাৎ-হঠাৎ মেজাজ পাল্টে যেত সুচিত্রার। এই নিয়ে অনেক গল্প রয়েছে টলিপাড়ায়। তবে যে ব্যক্তির সঙ্গে ঘটনাগুলো ঘটেছে, তাঁর চেয়ে ভাল করে বর্ণনা বোধহয় কেউ দিতে পারবেন না।

নবাগতাদের সঙ্গে প্রচণ্ড দুর্ব্যবহার করতেন মহানায়িকা সুচিত্রা সেন, তিনি কি নতুন নায়িকাদের হিংসা করতেন?
সুচিত্রা সেন।
Follow Us:
| Updated on: Apr 08, 2024 | 11:51 AM

৬ এপ্রিল ছিল সুচিত্রা সেনের জন্মদিন। মিসেস সেনকে নিয়ে তটস্থ থাকতেন প্রত্যেকে। তিনি ছিলেন বেশ দোর্দন্ডপ্রতাপ। সিনেমায় টাইটেল কার্ডে অভিনেত্রীদের নাম শেষে থাকার রেওয়াজ আজও। কিন্তু মিসেস সেন ছিলেন সেই যুগেও ব্যতিক্রমী। তিনি সেই অভিনেত্রী, যাঁর নাম অনেক ক্ষেত্রেই যেত নায়কের আগে। তাঁর সঙ্গে কথা বলার দুঃসাহস দেখাতে পারতেন না কেউ। খোশ গল্প করা তো দূরের কথা। হঠাৎ-হঠাৎ মেজাজ পাল্টে যেত সুচিত্রার। এই নিয়ে অনেক গল্প রয়েছে টলিপাড়ায়। তবে যে ব্যক্তির সঙ্গে ঘটনাগুলো ঘটেছে, তাঁর চেয়ে ভাল করে বর্ণনা বোধহয় কেউ দিতে পারবেন না।

তেমনই এক ব্যক্তি অভিনেত্রী কল্যাণী মণ্ডল। বাংলা ছবির স্বর্ণযুগে আবির্ভূত হয়েছিলেন এই অভিনেত্রী। তারপর ৯০-এর দশকে বাণিজ্যিক বাংলা ছবিতে তাঁকে দেখা গিয়েছে মা-জেঠিমা-কাকিমার চরিত্রে। এই মুহূর্তে তিনি চুটিয়ে অভিনয় করছেন সিরিয়ালে। চুলে পাক ধরেছে তাঁর। বয়স হয়েছে অনেকটাই। অভিনয় জগতে আসার পরই উত্তম-সুচিত্রা অভিনীত এক ছবিতে অভিনয় করার সুযোগ আসে কল্যাণী মণ্ডলের কাছে। প্রথম ছবিতেই তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ ঘটে মহানায়িকা সুচিত্রা সেনের।

কল্যাণী দিদি নম্বর ওয়ানে এসে বলেছিলেন, “আমার প্রথম দিনের শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা অদ্ভুত। মেকআপ রুমে গিয়ে দেখি উত্তমকুমার বসে আছেন। তিনি ছিলেন দরাজ মনের মানুষ। নতুন কোনও প্রতিভাকে চোখের সামনে দেখতে পেলে তাঁকে আদর করে গ্রহণ করতেন। আমাকেও করেছিলেন। আশীর্বাদ করেছিলেন বুক ভরে এবং বলেছিলেন ভাল করে কাজ করতে। কিন্তু সুচিত্রা সেনের সঙ্গে আমার যা অভিজ্ঞতা, তা এক কথায় বলে প্রকাশ করা যাবে না। তাঁর ঘরে গিয়ে তাঁর চাউনি দেখে তো গলা থেকে আওয়াজই বের হয়নি আমার। আমাকে যিনি নিয়ে গিয়েছিলেন তিনি বলেছিলেন, ‘চলো চলো বেরিয়ে যাই।’ তারপর আমরা বেরিয়ে আসি।”

কেমন ছিল কল্যাণীর সঙ্গে সুচিত্রা সেনের প্রথম শর্ট? তা ব্যক্ত করতে গিয়ে চোখ চিকচিক করছিল অভিনেত্রীর। বলেছিলেন, “আমার জীবনের প্রথম শর্ট সুচিত্রা সেনের সঙ্গে। আমার কথা ছিল তাঁকে গিয়ে জড়িয়ে ধরার। তেমনই বলা হয়েছিল আমাকে। আমি সুচিত্রা সেনকে জড়িয়ে ধরি এবং তারপরই তীব্র চিৎকার করে সুচিত্রা সেন ‘কাট’ বলে উঠেন। আমার তো ঠান্ডা হয়ে গিয়েছিল হাত-পা। কঠোর কণ্ঠে সুচিত্রা সেন বলে ওঠেন, ‘ডোন্ট টাচ। ম্পর্শ করবে না আমাকে।”

এখানেই শেষ নয়। সুচিত্রা সেন তারপরও ভিরমি খাইয়েছিলেন কল্যাণীকে। কল্যাণী সংযোজন, “পরের শটেও একই ঘটনা ঘটে। সুচিত্রাকে সেই শটে আমার ছোঁয়ারই কথা ছিল না। আমি যথারীতি অভিনয় করছি। হঠাৎই সুচিত্রা সেন বলে ওঠেন ‘কাঠ’। তারপরে বলেন, ‘কী গো আমাকে জড়িয়ে ধরো’ আমি তো আকাশ থেকে পড়েছি। এই মহিলাকে তো প্রেডিক্ট করা খুবই ডিফিকাল্ট!”