ভাঙ খেয়ে ৪৮ ঘণ্টা ঘুম, বরের হাতে প্রথম আবিরের ছোঁয়া, টলিপাড়ার ‘নতুন বউ’দের দোল কেমন কাটল?

রবিবার, সেই বসন্তের ছোঁয়াতেই রাঙা হলেন টলিপাড়ার নতুন বউয়েরা। প্রেমের রঙ আর ফাগের রঙ মিশে গেল অজান্তেই। কেউ স্মৃতি হাতড়ে শেয়ার করলেন ভাঙ খাওয়ার প্রথম অভিজ্ঞতার কথা, আবার কেউ বা ফিরে গেলেন ছোটবেলায়। TV9 বাংলা শুনল সে সব অভিজ্ঞতার কথা।

ভাঙ খেয়ে ৪৮ ঘণ্টা ঘুম, বরের হাতে প্রথম আবিরের ছোঁয়া, টলিপাড়ার 'নতুন বউ'দের দোল কেমন কাটল?
গ্রাফিক-অভীক দেবনাথ।
Follow Us:
| Updated on: Mar 28, 2021 | 8:23 PM

‘বাতাসে বহিছে প্রেম…নয়নে লাগিল নেশা…’

গেরুয়া-সবুজ-লালের আধিপত্য নয়, শহর আজ সেজেছিল রকমারি রঙের রঙমশালে। লাল পলাশ আর ফুটপাথে নুইয়ে পড়া কৃষ্ণচূড়া আগেই জানিয়েছিল, ‘বসন্ত এসে গেছে’। আর আজ রবিবার, সেই বসন্তের ছোঁয়াতেই রাঙা হলেন টলিপাড়ার নতুন বউয়েরা। প্রেমের রঙ আর ফাগের রঙ মিশে গেল অজান্তেই। কেউ স্মৃতি হাতড়ে শেয়ার করলেন ভাঙ খাওয়ার প্রথম অভিজ্ঞতার কথা, আবার কেউ বা ফিরে গেলেন ছোটবেলায়। TV9 বাংলা শুনল সে সব অভিজ্ঞতার কথা।

তৃণা সাহা

৪ ফেব্রুয়ারি দীর্ঘদিনের বন্ধু-প্রেমিক নীল ভট্টাচার্যের সঙ্গে সাতপাকে বাঁধা পড়েন অভিনেত্রী তৃণা সাহা। সে এক রূপকথার মতো বিয়ে। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী হাজির ছিল নীল-তৃণার বিয়ের অনুষ্ঠানে। বিয়ের পরে প্রথম দোল। আজ সারাদিন কীভাবে কাটল তৃণার? প্রেমিক নীল এবং বর নীলের মধ্যে কোনও পার্থক্য চোখে পড়ল কী? না, বাইরে পার্টি নয়। সময় কাটানোর জন্য তৃণা আজ বেছে নিয়েছেন শ্বশুরবাড়ি। কথায় কথায় জানালেন বেশ অনেক বছর পর বাইরে পার্টি নয়, বরং পরিবারের জন্যই সময় বার করে নিলেন ওঁরা। নীলের সঙ্গে বাইরে দেখা করার তাড়া নেই, বরং সকাল বেলাতেই দোল পূর্ণিমার পুজো এবং পরে শ্বশুরের হাতে মাটন কষা– তৃণার দোল জমে গেল একেবারেই।

সন্ধেবেলায় গেটটুগেদার আর জমিয়ে গল্প, প্ল্যান অনেক। এর মাঝেই তৃণার মনে পড়ে গেল ছোটবেলার কথা। জমিয়ে দোল খেলা হত বাড়িতে। আবির থেকে বাদুড়ে রঙ, বাদ যেত না কিছুই। জানালেন একবার নাকি ভাঙ খেয়ে ৪৮ ঘণ্টা ঘুমিয়ে ছিলেন তিনি। তৃণার কথায়, “তখন আমি ক্লাস নাইন বা টেন। কাজিনরা সবাই মিলে ভাঙ খাওয়ার প্ল্যান করেছিলাম। বেনারস থেকে সেই ভাঙের গুলি আনা হয়েছিল। ওদিকে বাড়িতে বলা যাবে না। ভাঙ তো খেয়ে নিলাম। অ্যাকশন শুরু হল কিছুক্ষণ পর। সেই যে ঘুমোলাম উঠলাম ৪৮ ঘণ্টা পর। মনে হল সব ঘুরছে, আমিও ঘুরছি সঙ্গে সঙ্গে।” এ বারের দোলে প্রাপ্তির ঝুলিতে কী ভরল তাঁর? তৃণার জবাব, “প্রথম বার আমার নতুন পরিবারের সঙ্গে দোল, এ এক অন্যরকমের অনুভূতি।”

 

প্রমিতা চক্রবর্তী

প্রেমের মাসে প্রেমের দিনেই রুদ্রজিৎ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে আইনি বিয়েটা সেরে ফেলেছিলেন প্রমিতা চক্রবর্তী। পুরুলিয়ায় বসেছিল তাঁদের বিয়ের আসর। টেলিপাড়ায় প্রথম ‘ডেস্টিনেশন ওয়েডিং’ সেরেছিলেন তাঁরা। এর পর থেকেই শহরের এক আবাসনে তাঁদের গুছনো নতুন সংসার শুরু হয়েছে। শ্বশুরবাড়ি পুরুলিয়ায়। বাপেরবাড়ি বেলগাছিয়া। তাই পায়ে আবির ছুঁয়ে প্রণাম প্রমিতা সেরেছিলেন ভিডিয়োকলেই। বাড়িতে আয়োজন করেছিলেন সত্যনারায়ণ পুজোরও। একা হাতে সব আয়োজন…কম ঝক্কির নয়। প্রমিতার কথায়, “ও খুব সাহায্য করেছে। নয়তো এত সব আয়োজন করতেই পারতাম না।” পোশাকেও ছিল রংমিলান্তি। উদ্যোগ যদিও তাঁরই। রুদ্রজিতের নাকি পছন্দ ক্যাজুয়াল। ওদিকে প্রমীতা চেয়েছিলেন আজকের দিনটা অন্তত তাঁর পছন্দে সাজুন রুদ্র । প্রমিতা বলছিলেন, “দোল তো আসলে রাধা-কৃষ্ণের প্রেম উদযাপনের অনুষ্ঠান তাই তার সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই ট্র্যাডিশনালে সেজেছিলাম”। সন্ধেবেলায় দু’জনের পছন্দের ডেস্টিনেশন প্রমিতার বাড়ি অর্থাৎ বেলগাছিয়া। দোল এলেই প্রমিতার মনে পড়ে ছোটবেলায় বাবা-মায়ের সঙ্গে ঘরোয়া দোলযাপনের সেই রঙিন পর্ব। হাসতে হাসতে বলছিলেন, “এমনও হয়েছে নিজেই বসে বসে নিজেকে রঙ মাখিয়েছি। দোল খেলা তো শুরু করলাম ‘বধুবরণ’-এর পর। তা যদিও ধারাবাহিকের স্বার্থে। তবে রুদ্র আসার পর চুটিয়ে দোল খেলেছি আগের বছর। তবে এ বছরেরটা খানিক আলাদা। এতদিন প্রেমিক হিসেবে রঙ লাগিয়েছিল রুদ্র। আজ বর হিসেবে… এই অনুভূতিটা না ঠিক বলে বোঝানো যাবে না।”

 

রুদ্র-প্রমিতা 

মিমি দত্ত

শুধু তৃণা বা প্রমিতাই নন ফেব্রুয়ারি মাসেই সাতপাকে বাঁধা পড়েছিলেন আরও এক সেলেব জুটি ওম সাহানি এবং মিমি দত্ত। এ বার তাঁদেরও প্রথম দোল। কেমন কাটল তাঁদের? মিমি জানালেন শনিবারই নাকি ‘মাম্মিজি’র সঙ্গে অর্থাৎ সোদপুরে শ্বশুরবাড়িতে রঙ খেলে ফেলেছিলেন ওঁরা। এ দিনটা রাখা ছিল বন্ধুবান্ধবদের জন্য। অথচ এই মিমিরই একটা সময় নাকি রঙ খেলতে একেবারেই ভাল লাগত না। দম বন্ধ হয়ে আসত। তবে ওমের ভালবাসা মিমির জীবনেও এনেছে ফাগের আগুন। তাই কাছের বন্ধুদের নিয়ে বিয়ের পর প্রথম দোল কাটল বেশ মজাতেই। মিমি রান্না করতে ভালবাসেন। তবে দোলের দিন আর রান্নার ঝামেলা নয়, সোমবার হতে চলেছে জমিয়ে খাওয়া দাওয়া।

ওম-মিমি 

মানালি দে

এ বছর নয়, গত বছর তখন ভরা লকডাউন। স্বাধীনতা দিবসের দিনেই বিয়ে করেছিলেন মানালি দে এবং অভিমন্যু মুখোপাধ্যায়। হিসেব মতো এ বার মানালিরও প্রথম দোল। এত দিন তাঁর দোল শুরু হত বাবার বাড়িতে। তবে এ বার সকালবেলা দোল খেলা চলল শ্বশুরবাড়িতেই। সেখানে একপ্রস্থ খেলে এসে বাবা -দাদুর সঙ্গে দেখা এবং দোল যাপন। দুপুরের রান্না করেছিলেন শাশুড়িমা-ই। তবে রাতের খাওয়া দাওয়া হতে চলেছে বাবা-দাদুর সঙ্গে। দোল স্পেশাল রান্না করবেন নাকি তিনি? মানালির উত্তর, “এই রে, দেখা যাক। পুরো রান্না আমি না করলেও সাহায্য তো করবই।”