ভোট শেষ, বাড়ি-বাড়ি স্যানিটাইজ করছেন বামপ্রার্থী! অভিনেতা রাহুল বললেন “এটাই কাম্য”

শুভমের কাছে প্রশ্ন ছিল বাকি দুই প্রার্থীকে নিয়েই তো মানুষের পাশে দাঁড়ানো যেত। সবার পিঠেই থাকতে পারত স্যানিটাইজ স্প্রে। আপনি তাঁদের কাছে আবেদন রাখতে পারতেন। বলতে পারতেন—“চলুন একসঙ্গে মানুষের জন্যে কাজ করি?”

ভোট শেষ, বাড়ি-বাড়ি স্যানিটাইজ করছেন বামপ্রার্থী! অভিনেতা রাহুল বললেন এটাই কাম্য
কাজে ব্যস্ত। শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়। রাহুল (ইনসেটে)
Follow Us:
| Updated on: Apr 27, 2021 | 12:08 AM

পিঠে স্যানিটাইজারের ভারি স্প্রে মেশিন আর মুখে মাস্ক পরে রোজ সকালে বেরিয়ে পড়েন সোনারপুর কেন্দ্রের বাম প্রার্থী। তারপর ১৮ টি ওয়ার্ডের কোনও না কোনও ওয়ার্ডে চলে স্যানিটাইজেশনের কাজ, তো কখনও হাত হাতে মাস্ক তুলে দেয় শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়। ১০ এপ্রিল সোনারপুর দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের ভোটপর্ব শেষ হয়েছে। কিন্তু এখন থেকে রাস্তায় নেমে মানুষের জন্য কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন শুভম। ফোনে তাঁকে ধরা হলে তিনি বলেন, “বামপন্থী রাজনীতি মানেই মানুষের মধ্যে থেকে কাজ করা। করোনার মতো বিপদ আগে কখনও আসেনি। তা-ই বিশেষ পরিস্থিতিতে বিশেষভাবে কাজ তো করতেই হবে।” বললেন শুভম।

 

আরও পড়ুন প্রার্থীদের মোবাইল নম্বর শেয়ার করে পরে ডিলিট, কী বলছেন সেই তারকা-প্রার্থীরা?

 

 

দক্ষিণ সোনারপুর বিধানসভায় মোট ১৮টি ওয়ার্ড। প্রত্যেকটি ওয়ার্ডেই কমবেশি একবার করে হলেও পিঠে স্যানিটাইজার স্প্রে নিয়ে কাজ করছেন শুভম। শুধু স্যানিটাইজেশনই নয়। কোভিড পরিস্থিতিতে পাশে থাকার জন্য আরও অনেক উদ্যোগ নিয়েছেন শুভম।

“প্রথমত মানুষের মধ্যে সতর্কতা তৈরি করছি। কারণ এখনও বহু মানুষ মাস্ক পড়ছেন না, পড়লেও তা নাকের নিচে। দ্বিতীয়ত, যাঁদের মাস্ক কেনার ক্ষমতা নেই, তাঁদের হাতে মাস্ক তুলে দিচ্ছি। আবার পুরনো মাস্ক যাঁরা দীর্ঘদিন ব্যবহার করছেন, তাঁদেরও নতুন মাস্ক দিচ্ছি। আর ওয়ার্ডগুলো স্যানিটাইজ করছি নিয়মিত। দু’ভাবে করছি স্যানিটাইজ। ঘরের ভিতরে সাধারণ স্যানিটাইজার ব্যবহার করছি। ঘরের দরজা রাস্তা-গেট সোডিয়াম হাইপো-ক্লোরাইড সলিউশন দিয়ে স্যানিটাইজ করছি।”

 

 

২০০৭ সাল থেকে ছাত্র-রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত শুভম। স্কটিশচার্চ কলেজের ছাত্র ছিলেন। কলকাতা জেলার সেক্রেটারি পরে রাজ্য সেক্রেটারি আর এখন এআইএসএফ-এর সর্বভারতীয় সভাপতি শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়।

স্যানিটাইজেশনের ছবি এখন ফেসবুকে ভাইরাল। তিনটি ছবি জুড়ে একটি কোলাজ করা হয়েছে। পিঠে স্যানিটাইজার স্প্রে মেশিন নিয়ে শুভম, পাশের দুটি ছবিতে রয়েছে সোনারপুর বিধানসভায় দুই সেলেব প্রার্থী। তৃণমূলের লাভলি মৈত্র এবং বিজেপির অঞ্জনা বসু।

ক্যাপশনে লেখা, —‘সোনারপুর দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের তিন প্রার্থী সংযুক্ত মোর্চার বাম প্রার্থী শুভম ব্যানার্জী, বিজেপি প্রার্থী অঞ্জনা বসু এবং তৃণমূল প্রার্থী লাভলি মৈত্র। করোনা কালে বিজেপি এবং তৃণমূলের প্রার্থী হাওয়া। অথচ ভোটের আগে এদের মুখেই শুনেছিলাম এরা মানুষের জন্য কিছু করতে চায় তাই রাজনীতিতে আসা। যাই হোক ভোট শেষ হলেও বাম প্রার্থী শুভম ব্যানার্জীর দায়িত্ব শেষ হয়নি তিনি এলাকা স্যানিটাইজ করে বেড়াচ্ছেন। লাল সেলাম।’

শুভমের কাছে প্রশ্ন ছিল বাকি দুই প্রার্থীকে নিয়েই তো মানুষের পাশে দাঁড়ানো যেত। সবার পিঠেই থাকতে পারত স্যানিটাইজ স্প্রে। আপনি তাঁদের কাছে আবেদন রাখতে পারতেন। বলতে পারতেন—“চলুন একসঙ্গে মানুষের জন্যে কাজ করি?”

 

 

হাতে হাতে করি কাজ, হারি-জিতি নাহি লাজ!

“বিজেপির প্রার্থীর সঙ্গে আমার কথাবার্তা হয়েছে কিন্তু তৃণমূল প্রার্থী তো গাড়ি থেকেই তো নামেননি। ওঁর সঙ্গে সুযোগ হয়নি কথাবার্তার। বিজেপির প্রার্থী যদি যুক্ত হতে চান, তাহলে তো ভালই হয়। কিন্তু নির্বাচনের পর তাঁকেও আর এলাকায় দেখা যাচ্ছে না।” বললেন শুভম

শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। কমেন্টে ভেসে যাচ্ছে শুভেচ্ছাবার্তা। ভাইরাল হওয়া পোস্টটি শেয়ার করেছেন অভিনেতা রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায়।

Tv9 বাংলার পক্ষ থেকে ফোন করা হয় তাঁকে। রাহুল বলেন, “যাঁরা মানুষের পাশে দাঁড়াবে বলেছিলেন তাঁদেরকে আমি অন্তত কোথাও দেখতে পাচ্ছি না। শুভমকে সোনারপুর কেন্দ্রের বাড়ি-বাড়ির মানুষ দেখতে পাচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে ও যেটা করছে, সেটাই কাম্য ছিল। বাকিদের কিছু না করাটাই বিস্ময়ের!”