Bhaswar Chatterjee: ‘লোকনাথ বাবা’ জিনস পরে টিকটক করছেন দেখেই আঁতকে উঠেছিলেন ওঁরা: ভাস্বর

আদপে একটি চরিত্র। অথচ দর্শকের দরবারে তাঁরা যেন সাক্ষাৎ ভগবান। কাছে ছুঁতে পাওয়ার উন্মাদনা আবার কখনও পায়ে হাত ধরে হাউহাউ করে কান্না— টেলিভিশনের আধ্যাত্মিক চরিত্রে অভিনয় করেছেন যারা তাঁদের এ হেন অভিজ্ঞতা কম-বেশি হয়েছে। সেই অভিজ্ঞতা নিয়েই অকপট ছোট পর্দার লোকনাথ ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়... কী বললেন তিনি? রইল...

Bhaswar Chatterjee: 'লোকনাথ বাবা' জিনস পরে টিকটক করছেন দেখেই আঁতকে উঠেছিলেন ওঁরা: ভাস্বর
অভিজ্ঞতা নিয়েই অকপট ছোট পর্দার লোকনাথ ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়... কী বললেন তিনি?
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 03, 2022 | 1:01 PM

আদপে একটি চরিত্র। অথচ দর্শকের দরবারে তাঁরা যেন সাক্ষাৎ ভগবান। কাছে ছুঁতে পাওয়ার উন্মাদনা আবার কখনও পায়ে হাত ধরে হাউহাউ করে কান্না— টেলিভিশনের আধ্যাত্মিক চরিত্রে অভিনয় করেছেন যারা তাঁদের এ হেন অভিজ্ঞতা কম-বেশি হয়েছে। সেই অভিজ্ঞতা নিয়েই অকপট ছোট পর্দার লোকনাথ ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়… কী বললেন তিনি? রইল…

ভাস্বরের বয়ানে…

আধ্যাত্মিক চরিত্রের সঙ্গে আমার আলাপ বহুদিনের। লোকনাথের আগে যখন সাঁইবাবা হতাম তখন ফল মিষ্টির বন্যায় রীতিমতো ভেসে দিতাম। সঙ্গে আবার পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম। এঁদের মধ্যে কিন্তু বয়স্ক লোকজনও ছিলেন। কী যে অস্বস্তি হত বলে বোঝাতে পারব না। লোকনাথের চরিত্র করার সময় তো আরও শোচনীয় অবস্থা। বাচ্চা বাচ্চা ছেলেমেয়েরা রাস্তায় দেখা হলেই ডেকে বলত, “আঙ্কল আমরা যখন পরীক্ষায় বসি ঠিক তখনই তোমার মুখটা ভেসে ওঠে। আর তোমায় প্রমাণ করেই পরীক্ষায় উত্তর লিখি”। এখানেই কিন্তু শেষ নয়। মজার কথা আরও আছে। কস্টিউম ছেড়ে যখন বাইরে যেতাম লোকজন আমায় দেখে রীতিমতো আঁতকে উঠত। তাঁরা ধরেই নিত ভাস্বরকে যে সারাদিন খালিগায়েই থাকতে হবে। সেখানে দাঁড়িয়ে সে জিনস পরে ঘুরছে, টিকটিক বানাচ্ছে– এ সব দেখে তো তাঁদের চক্ষু চড়কগাছ। আরও একটা ঘটনা মনে পড়ে গেল। করোনার পরে তখন আবারও শুট চালু হয়েছে। ফ্লোর থেকে সবাইকে স্যানিটাইজার দেওয়া হয়েছিল। আমাকেও হয়েছিল। একদিন কস্টিউম পরেই আমি শুটিং ফ্লোরের বাইরে হাতে স্যানিটাইজার দিচ্ছিলাম। সেটাই কেউ ছবি তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় দিয়ে দেয়। ব্যস, সঙ্গে সঙ্গে ভাইরাল। যা মিম হয়েছিল ও নিয়ে। লোকনাথ বাবা স্বর্গ থেকে নেমে এসে হাতে স্যানিটাইজার দিচ্ছেন– মস্করা করতে ছাড়েননি কেউই। আমার যদিও বেশ মজাই লেগেছিল।

তবে শুধু যে মজার ঘটনাই রয়েছে তা কিন্তু নয়। একবার শো করতে গিয়েছি বেশ দূরে। হঠাৎ এক বৃদ্ধ ভদ্রলোক এসে দেখা করেন। জানান, তাঁর নামও লোকনাথ। আর এও জানান ছোটবেলায় নাকি তাঁর দাদু লোকনাথ বাবাকে স্বচক্ষে দেখেওছেন। তাঁদের আদি বাড়ি বাংলাদেশে। বৃদ্ধ ভদ্রলোক জানান, তাঁর বাবা-মায়ের নাকি সন্তান হচ্ছিল না। সে সময় একদিন লোকনাথ বাবা তাঁদের বাড়ি আসেন। ভবিষ্যৎবাণী করে জান, সংসারে পুত্র সন্তান আসবে। এমনকি ছেলে হলে তাঁর কাছে নিয়ে আসার কথাও বলেছিলেন। তিনি জন্মাবার পর তাঁকে নিয়ে লোকনাথ বাবার কাছে নিয়েও নাকি যাওয়া হয় জানিয়েছিলেন সেই ভদ্রলোক। আর বাবাও মাথায় হাত রেখে আশীর্বাদ করেছিলেন তাঁকে। ঘটনাটা শুনে আমার গায়ে রীতিমতো কাঁটা দিচ্ছিল। যখন ধারাবাহিকটা শেষ হয়ে যায় তখন চাকলাধামে গিয়েছিলাম। মন্দিরে গিয়ে পুজো দিলাম। পুরোহিতমশাই চিনতে পেরে আমায় বলেন, “বাবাকে তো আমরা সামনে থেকে দেখিনি। তাঁর জীবন্ত রূপ আপনার মধ্যে দেখেছি। মনে হয়েছে বাবা যেন এভাবেই কথা বলতেন”। অথচ আমি যখন লোকনাথের চরিত্রে প্রথম অভিনয় করি এখনও মনে আছে ফার্স্টলুক বের হতেই আমায় নিয়ে কী ভীষণ ট্রোলিং। সোশ্যাল মিডিয়ায় হাসাহাসি। কিন্তু কিছু দিন যেতেই সেই মানুষগুলোই কিন্তু আমার প্রশংসা করেছিলেন। ওটাই আমার প্রাপ্তি। ধারাবাহিকটি শেষ হয়ে গেলেও চরিত্রটি আমায় ছেড়ে যায়নি। রয়ে গিয়েছে, রয়ে যাবেও আজীবন।