Kaushik Ganguly: ‘শাহরুখও হয়তো এই বিষয় কিছু জানেন না’, বাংলা ছবি নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়

Bengali Movie: আমাদের হাতে মাত্র ৪০ থেকে ৫০টা থিয়েটর মাত্র। এখানেও যদি আমরা দেখাতে না পারি, তবে বাংলা ছবি কোথায় গিয়ে দেখাব।

Kaushik Ganguly: 'শাহরুখও হয়তো এই বিষয় কিছু জানেন না', বাংলা ছবি নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 25, 2023 | 11:53 AM

বুধবার রমরমিয়ে গোটা দেশজুড়ে মুক্তি পেল শাহরুখ খান অভিনীত ছবি পাঠান। তার জেরেই বেজায় বিপাকে বাংলা ছবি। একের পর এক প্রেক্ষাগৃহ থেকে সরে যাচ্ছে বাংলা ছবি। তা নিয়েই পাঠান ছবি মুক্তির আগে অর্থাৎ মঙ্গলবার রাতে সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইভে এলেন পরিচালক কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়। বর্তমানে চলছে তাঁর ছবি কাবেরী অন্তর্ধান। তবে কেবল নিজের ছবি নিয়ে নয়, এদিন গোটা বাংলা ছবির পরিস্থিতি নিয়ে মুখ খুললেন পরিচালক। টানা ১৯ মিনিটের একটি লাইভ করে তুলে ধরলেন একাধিক বিষয়।

কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের কথায়, ”আজ সারাদিন ছবির প্রচারে ব্যস্ত ছিলাম। আর ব্যস্তি ছিলাম দুশ্চিন্তা নিয়ে। আমাদের ছবি কাবেরী অন্তর্ধান যা আপনাদের খুব ভাল লাগছে, তা আজ চতুর্থ দিনে পড়ল। আগামী কাল ৫ দিন হবে। কাল আবার এক বড় ছবি মুক্তি পাচ্ছে, ছবির নাম পাঠান। আমরা এমন কেউ নেই যে পাঠান দেখব না। পাঠান দেখতেই হবে। এতো বড় ছবি শাহরুখ খানের মতো স্টারের, এতো বছর পর মুক্তি পাচ্ছে, সবাই উৎকণ্ঠায় আছেন। এবং বহু মানুষ আমাদের, যাঁরা এই ছবি দেখবেন, এমন কি যাঁরা এই ছবির জন্য ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন, তাঁরা চান এই ছবির সাফল্য যেটার খুব প্রয়োজন। সেটা অবশ্যই যেন হয়। এই ছবি ও বিশেষ করে শাহরুখ খানের বিরাট সাফল্য একজন সিনেমাকর্মী হিসেবে কামনা করছি। যেটা বলবার বিষয়, বলিউডের বড় বড় প্রযোজকেরা সিঙ্গল স্ক্রিনগুলোকে একটি শর্ত দিয়ে পাঠান। ছবি নিলে সব শো-এ আমাদের ছবি চলতে হবে। তাঁরা বলছেন না যে বাংলা ছবি চালিও না। কিন্তু প্রত্যেকটা শো-তে যদি ওদের ছবি না চালানো হয়, তবে সে ছবি ওরা দেবে না। ভেবে দেখবেন, যে ছবি হাজার হাজার কোটি কোটি টাকার ব্যবসা করবে, ভোর পাঁচটার শো-ও হাউসফুল হবে, এক্সিকিউটিভদের পক্ষে তা সম্ভব নয়, এমন একটা সুযোগ হাতছাড়া করা। নিরুপায় হয়ে তাঁদের ছবিতে হ্যাঁ বলতে হচ্ছে। কয়েকজন ব্যতিক্রমও আছেন। তাঁদের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ।

যাঁরা চালাচ্ছেন তাঁদের অবস্থাটাও আমরা বুঝতে পারছি। সমস্যা আমাদের তাঁদেরকে নিয়ে নয়। সমস্যা এই ডিস্ট্রিবিউটরদের নিয়ে। যাঁদের হাতে সারা দেশ জুড়ে ১০ হাজারটা থিয়েটর। আমাদের হাতে মাত্র ৪০ থেকে ৫০টা থিয়েটর মাত্র। এখানেও যদি আমরা দেখাতে না পারি, তবে বাংলা ছবি কোথায় গিয়ে দেখাব। এটা কিন্তু মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ুতে সম্ভব হয়। সব থেকে অবাক কাণ্ড হল, শাহরুখ খান তো আমাদের বাংলার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসডর, আমার মনে হয় তিনি নিজেও জানেন না যে এমনটা হচ্ছে। সেখানকার ভাষার ছবি সমস্যার মুখে। তবে এই প্রথম নয়, বিসর্জনের সময় অ্যাভেঞ্জার্স-এরও একই অবস্থা হয়েছিল। আমাদের প্রেক্ষাগহগুলো তো আর আমাদের নিয়ন্ত্রণ নেই।

আমি আমার ভাষায় বানানো আমার দর্শকদের দেখাতে পারছি না। আমি হয়তো কোনও দিনই এমন ছবি বানাতে পারব না যা সকাল সাততাতেও হাউসফুল হবে, প্রথম দিনে হাউসফুল হবে। আমার খুব সফর ছবি যেগুলো আছে সেগুলো সবই দ্বিতীয়-তৃতীয় সপ্তাহ থেকে বিরাট আকার ধারন করেছে। লোকের মুখে মুখে প্রচার হয়েছে।

আমার অনুরোধ যে শো-ই পাচ্ছেন আপনারা দেখুন। ১২টার শো হলে ১২টায় দেখুন। নয়তো পরের সপ্তাহে শুনব, টিকিট বিক্রি হয়নি তুলে দেওয়া হল। খারাপ লাগে যখন এতো পরিশ্রম করে একটা ছবি বানানোর চেষ্টা করি, যখন দেখি সেই ছবি নিজের জায়গাতেই দেখাতে পারছি না ভীষণ কষ্ট হয়। এই সাত দিনের লড়াইয়ের জন্য আমার এই ভিডিয়োটা করা। এমন হুলিয়া জারি করা যায় না। ওদের একটা ঘাগড়া চোলির যা টাকা তা দিয়ে এখানে তিনটে ছবি হয়ে যায়, আমাদের এখানে খুব বেশি হলে ২ কোটি বাজেটের ছবি হয়, কল্পনা করা যায়? ওখানে একজন ডিওপি এর থেকে বেশি টাকা পায়। সেই ছবিগুলো যদি এভাবে হারিয়ে যায়…। আমাদের হিরো বাঘ শিকার করতে পারবে না আমি জানি, আমাদের হিরো ডানা লাগিয়ে উড়বে না। আমরা বাস্তব জীবনের দুঃখ কষ্ট নিয়ে ছবি বানাই।”