Tollywood Cinema: ‘কলকাতা কল্লোলিনী হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন জীবনানন্দ, আজও তা হল না’
Bratya -Jaya: এই বছর কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে ছবির প্রিমিয়ার হয়। পরিচালকের মতে, জীবনানন্দ ১৯ শতকে যেমন অপরিহার্য ছিলেন, আজও রয়েছেন। তাঁর মত প্রতিবাদী শিল্পী খুব এসেছেন বাংলায়।
বাংলা সিনেমা নানা বিষয় নিয়ে তৈরি হচ্ছে। কিন্তু জীবনানন্দ দাশকে নিয়ে কোনও কাজ হয়নি এর আগে। অথচ তাঁর ভুমিকায়ও বাংলা সাহিত্যে কম নেই। এবার প্রথমবার বাংলা ছবিতে উঠে আসছেন কবি-সাহিত্যিক জীবনানন্দ দাশের জীবনের নানা কাহিনি। তিনি বরাবরই প্রতিবাদী। কখনও কোনও অন্যায়ের সামনে মাথা নত করেননি। বরং তাঁর লড়াই ছিল সিস্টেমের বিরুদ্ধে। এমন একজন মানুষ ব্রাত্য বাংলা সিনেমা জগতে। এই মানুষটাই সবসময় চাইতেন কলকাতা হয়ে উঠুক কল্লোলিনী। কিন্তু আজও তা হয়নি। বরং কুৎসিত হয়ে উঠছে শহরটি। মানুষ দিনের পর দিন অসহিষ্ণু হয়ে উঠছেন। কথাগুলো বললেন সায়ন্তন মুখোপাধ্যায়। জীবনানন্দ দাশের জীবনের কাহিনি উঠে আসবে তাঁর পরিচালনায়। ছবির নাম ‘ঝরা পালক’। ছবিতে জীবনানন্দ দাশের চরিত্রে অভিনয় করছেন রাহুল অরুনোদয় বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ব্রাত্য বসু। কবি-শিল্পী যখন রূপসী বাংলা লিখছেন, সেই সময়ের চরিত্রে অভিনয় করছেন রাহুল। এরপর পুরোটাই ব্রাত্য বসু এগিয়ে নিয়ে যাবেন জীবনানন্দকে।
দুইদিন আগে পার্ক সার্কাসের ঘটনা কথা উল্লেখ করে সায়ন্তন বলেন, “কলকাতা কল্লোলিনী হবে কোনও এক দিন, স্বপ্ন দেখতেন জীবনানন্দ। অথচ কী ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে শহরটা দিনকে দিন। কবি-শিল্পীর স্বপ্ন বাস্তব হওয়ার কোনও লক্ষণ নেই”। পরিচালকের আরও দাবি, “দাশ পদবী হওয়া সত্ত্বেও মানুষটি কখনও কারও দাসত্ব করেননি। অথচ আজ শিল্পীরা সিস্টেমের দাস। প্রতিবাদের ভাষা হারিয়ে ফেলেছেন সবাই। আমার ছবি কবির লড়াকু জীবনকে তুলে ধরবে”।
২০১৮ সালে শুরু হয়েছিলেন ছবির শুটিং। ২০১৯ সালে শেষ হয় ছবির কাজ। মুক্তির আগেই এসে পরে ২০২০ সাল থেকে কোভিড। এমন পরিস্থিতির কারণে পিছিয়ে যায় ছবি মুক্তির তারিখ। এই বছর কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে ছবির প্রিমিয়ার হয়। পরিচালকের মতে, জীবনানন্দ ১৯ শতকে যেমন অপরিহার্য ছিলেন, আজও রয়েছেন। তাঁর মত প্রতিবাদী শিল্পী খুব এসেছেন বাংলায়। শিল্পী জীবন ঘিরে রয়েছে অনেক ওঠানামা।
জীবনানন্দের লেখা তাঁর আত্মজীবনী ‘মাল্যবান’। সেই আত্মজীবনী থেকে তৈরি হয়েছে চিত্রনাট্য। কবি তাঁর জীবদ্দশায় এই বই প্রকাশ করতে পারেননি। এমনকী তাঁর স্ত্রী লাবণ্যপ্রভাও চাননি এই বই প্রকাশ করতে। তবে সেই সময় বাংলা কিছু কবি-সাহিত্যিকদের উদ্যোগে মুক্তি পায় গল্পটি। কবির জীবনে তাঁর স্ত্রী লাবণ্যপ্রভার অনেকটাই প্রভাব রয়েছে। এই চরিত্রে অভিনয় করছেন জয়া এহেসান।
বাংলা সাহিত্যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আলোর দিকটি যেমন তুলে ধরেছিলেন, জীবননান্দ লেখায় উঠে এসেছে অন্ধকার দিক। তাঁর জীবনও নানা ঘটনায়ভরপুর। সেই কাহিনিই পরিচালক সায়ন্তন তুলে ধরেছেন তাঁর ছবিতে। পরিচালক জানিয়েছেন, তাঁর জীবনে জীবনানন্দের প্রভাব প্রবল। তাই সিনেমা জগতে আসার পর থেকেই তিনি তাঁর প্রিয় কবিকে নিয়ে ছবি করতে চাইছিলেন। অবশেষে তাঁর জীবনে এসেছে কবির জীবনকে পর্দায় দর্শকদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার সুযোগ পেয়েছেন।
ব্রাত্য, রাহুল, জয়া ছাড়াও দেবশঙ্কর হালদার, কৌশিক সেন, শান্তিলাল মুখোপাধ্যায়, বিপ্লব বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ অভিনয় করেছেন ‘ঝরা পালক’ ছবিতে অভিনয়।