Mumtaz Sorcar: আমি ফেভারিটিজ়মের শিকার… সুড়সুড়ি ব্যবসায় আমি নেই: মুমতাজ

Tollywood Inside: যেটা হয়, সেটা হল ফেভারিটিজ়ম। যেটা আখছার হচ্ছে। আমার পেয়ারের লোক, আমার লবির লোক, আমার প্রোডাকশন মানে এই হিরোইনকেই চাই।

Mumtaz Sorcar: আমি ফেভারিটিজ়মের শিকার... সুড়সুড়ি ব্যবসায় আমি নেই: মুমতাজ
Follow Us:
| Updated on: Dec 13, 2022 | 2:50 PM
জয়িতা চন্দ্র
নেপোটিজ়ম হোক বা ফেভারিটিজ়ম, সিনেদুনিয়া কোন জ্বরে আক্রান্ত? অভিনেত্রী মুমতাজ সরকার একবাক্যে প্রতিবাদ করে উগরে দিলেন নিজের ক্ষোভ। কী জানালেন TV9 বাংলাকে…
ছবির চরিত্র বাছাইয়ের ক্ষেত্রে কোন-কোন দিকে নজর দেন? 
ছবির গল্পটা আমার কাছে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। আমি যদি ছবির চরিত্রগুলোর সঙ্গে সহমত না-হতে পারি, যদি রিলেট না-করতে পারি, সেই গল্প যদি আমাকে অনুপ্রাণিত না করে, সেই ছবি আমি করি না। যদি তেমনটা হয়, সেক্ষেত্রে আমি আর কিছুই ভাবি না, রাজি হয়ে যাই। এটাও অন্যতম কারণ, যে কারণে আমি কমার্শিয়াল ছবি করি না। আমি এগুলোর পিছনে কোনও যুক্তি খুঁজে পাই না।
টলিউডে আপনার উপস্থিতি এতটা কম হওয়ার কারণও কি এই বাছাই করে সিনেমায় অভিনয় করা?
দেখুন আমি তো শুধু টলিউডে কাজ করি না, দক্ষিণ, বলিউডেও কাজ করি। আমি অভিনেত্রী, বিশ্বজুড়ে সিনেমা করাই আমার লক্ষ্য। ভাষা যাই-ই হোক না কেন, মাধ্যম তো সেই সিনেমাই থাকবে। ফলে সেটার জন্য আমি নিজেকে সীমাবদ্ধ করে রাখতে চাই না। ছবি করে যাচ্ছি, করে যেতে চাই। কোথায় কম, কোথায় বেশি তা নিয়ে ভাবি না। কলকাতার বড় প্রযোজনা সংস্থার সঙ্গে কাজ করব, অমুক-অমুক অভিনেতার সঙ্গে কাজ করব, এমন বাছবিচার আমার কোনওদিনই ছিল না।
টলিউডের ভাল-খারাপ আপনি খুব কাছ থেকে দেখেছেন…
শুধু টলিউড নয়, সব ইন্ডাস্ট্রিরই ভাল খারাপ দুই-ই রয়েছে। দিনের শেষে এটা একটা প্রফেশনাল জায়গা, ফলে লড়াই জারি থাকবেই। যদি আপনি আপনার কাজ নিয়ে সিরিয়াস হন, তাহলে স্ট্রাগল থাকবেই। কঠিন লড়াইটাই যদি না-থাকে, তবে সাফল্যের আনন্দ কোথায়? একটা জিনিস হাতে পেয়ে যাওয়া, আর খেটে উপার্জনের মধ্যে তো তফাৎ থাকে। দেখুন… খামতি অল্প-বিস্তর সব ইন্ডাস্ট্রিতেই রয়েছে। এক-একটা জায়গার লড়াইটা এক-এক রকমের। টলিউডে ১৬ বছর কাজ করার পর আমার যে জায়গাটা তৈরি হয়েছে, সেটা তো আমি রাতারাতি বলিউডে আশা করতে পারি না। একটা সমস্যায় পড়লে বুম্বাদাকে (প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়) ফোন করে বলতেই পারি, তিনি সাধ্যমতো সাহায্য করবেন। যেটা আমি ওখানে (বলিউডে) আশাও করতে পারি না।
অনেকেই অভিযোগ করেন, টলিউডে তেমন কাজ মিলছে না অথবা নতুনদের কাজের সুযোগ কম। এই বিষয় আপনার কি মত? 
আমি সবার আগে জানতে চাই, কারা এই কথা বলছেন? তাঁরা কি বলিউড, দক্ষিণে গিয়ে কাজ করেছেন? সমস্যা সব জায়গাতেই রয়েছে। সব জায়গাতেই কাজের হাহাকার রয়েছে। কেবল ছবির জগত নিয়ে কথা কেন, অন্যান্য ক্ষেত্রে চাকরি আছে তো?
আর স্বজনপোষণ, সেটা নেই? 
সাম্প্রতিককালে বলিউডের সূত্র ধরে একটা কথা খুব শোনা যায়, নেপোটিজ়ম। নেপোটিজ়মের জন্যই নাকি ‘নিউ কামার’দের কাজ পেতে সমস্য়া হচ্ছে। কী এই নেপোটিজ়ম? একজন মধ্যবিত্ত পরিবারের সদস্য, তিনি খেটে তাঁর সন্তানকে ডাক্তারি পড়াচ্ছেন, এরপর সেই তিনিই যদি পরিচিত কাউকে বলেন, ‘বাবা, আমার ছেলেটার যেন একটা চাকরি হয় একটু দেখ’, তবে কি সেটা ভুল? সেটাকে আমি নেপোটিজ়ম বলব? তাহলে কেন শুধু ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির ক্ষেত্রেই নেপোটিজ়মের ট্যাগ দেব। ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে যাঁরা কষ্ট করে নিজের জায়গা করেছেন, তাঁদের সন্তানকে যাতে সেই কষ্ট পেতে না-হয়, সেই চেষ্টা করাটা কি সত্যি ভুল?
তবে সমস্যা কোথায়? 
যেটা হয়, সেটা হল ফেভারিটিজ়ম। যেটা আখছার হচ্ছে। আমার পেয়ারের লোক, আমার লবির লোক, আমার প্রোডাকশন মানে এই হিরোইনকেই চাই। এটা খুব খারাপ। আর আমি নিজে ফেভারিটিজ়মের শিকার। অনেক ছবি দেখে আমার মনে হয়েছে, আমার থেকে ভাল এই চরিত্রটা হয়তো কেউ করতে পারতেন না। আবারও এমনও হয়েছে আমার সঙ্গে যে, তাঁরা আমায় কাস্ট করতে চান, কিন্তু কোনও একটা কারণে আমার রেপ্লিকা খুঁজে বার করেন। আমায় নিয়ে উঠতে পারেন না। আরেকজন অভিনেত্রীকে যতটা সম্ভব আমার মতো করে সাজিয়ে তুলেছেন। তাঁদের টিমের লোকেরাই আমায় বলেছে দিদি, তোমার মতো করেই তোমার ছবি দেখিয়ে সাজানো হচ্ছে। কারণ তাঁর পেয়ারের নায়িকা তাঁকে বলেছে, ‘না, তোমাকে আমায় নিতেই হবে, তুমিই তো বলেছিলে…’। এই সুড়সুড়ি দেওয়াটা আমার আসে না, তাই-ই আমি পিছিয়ে। আমি অনিদ্রায় আরও কয়েকটা রাত কাটাতে রাজি, আরও একটা ধাপ এগিয়ে পরিশ্রমও করতে রাজি।
বাংলাদেশের বর্তমান ফিল্ম সিটির ছবিটা কেমন? কলকাতার শিল্পীদের ডাক কেমন?
এখন ছবি পাল্টাচ্ছে, ছবির বিষয়বস্তু পাল্টাচ্ছে। পরিচালক, ছবি-নির্মাতা সকলেই যথেষ্ট স্মার্ট, ফলে কোন চরিত্রে কাকে মানাবে, সেটা অনুমান করে খুঁজে নিতে পারবেন তাঁরা আশা করি। তবে এটা শুধু বাংলাদেশ নয়, সবক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। কালচারাল এক্সচেঞ্জটা বাড়ছে।
বলিউডে আপনাকে বেশ কিছু কাজ করতে দেখা যাচ্ছে। সেখানকার ছবিটা কেমন? 
বেশ কিছু কাজ আসছে, অতীতেও করেছি। ‘শালা খারুস’ আমার প্রথম বিটাউনে কাজ। তবে ওখানকার কাজ নিয়ে মুখ খোলা যায় না। আমি তাপসী পান্নু’র (‘সাবাস মিঠু’) ছবিতে রয়েছি। লোকে দেখছে, তবু আমি কিছু বলতে পারছি না। তবে ভালই কাজ হচ্ছে, এটুকু বলতে পারি।