Aindrila Sharma Death: ঐন্দ্রিলা-সব্যসাচীর বিয়ের পরিকল্পনা হয়েছিল ২০২৩-এর ফেব্রুয়ারি-মার্চ নাগাদ, জানাল মৃত অভিনেত্রীর পরিবার
Aindrila-Sabyasachi: TV9 বাংলা পরিবারের খোঁজ নিতে গিয়ে জানতে পারল বাবা-মা তাঁদের আদরে ছোট মেয়ের বিয়ের জন্য চিন্তাভাবনা শুরু করেছিলেন।
স্নেহা সেনগুপ্ত
ন’দিন হয়ে গেলে বাংলা সিরিয়ালের জনপ্রিয় অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মা প্রয়াত। তিনি পিছনে রেখে গিয়েছেন তাঁর বাবা-মা, দিদি, প্রেমিক সব্যসাচী চৌধুরী এবং কাছের কিছু বন্ধুকে। যাঁরা ঐন্দ্রিলাকে প্রাণের চেয়েও বেশি ভালবাসেন। কুদঘাটের ফাঁকা অ্যাপার্টমেন্টে এখন দিনরাত ডাকাবুকো মেয়েটার স্মৃতি আগলে মা। চিকিৎসক বাবার গলাও ধরে আসে কান্নায়। কেমন আছেন তাঁরা? TV9 বাংলা খোঁজ নিতে গিয়ে জানতে পারল বাবা-মা তাঁদের আদরে ছোট মেয়ের বিয়ের জন্য চিন্তাভাবনা শুরু করেছিলেন।
ফোনের ওপারে ঐন্দ্রিলার চিকিৎসক বাবা উত্তম শর্মা। কেঁপে ওঠা কণ্ঠ খানিক সামলে জানালেন, এখনও মেয়েকে হারানোর শোক কাটিয়ে উঠতে পারছেন না তাঁরা কেউই। মেয়ের স্মৃতির উদ্দেশে সেই কারণে এখনও পর্যন্ত কিছু করেও উঠতে পারননি তাঁরা। যদিও মুশির্দাবাদের বহরমপুরে (ছোটবেলায় সেখানেই বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকতেন ঐন্দ্রিলা) বুধবার ঐন্দ্রিলার স্মৃতিতে এক রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়েছে। উত্তমবাবু বললেন, “আমরা একে-অপরকে সামলানোর চেষ্টা করছি মাত্র।”
কথায়-কথায় সব্যসাচী এবং ঐন্দ্রিলার বিয়ে নিয়ে তাঁদের চিন্তাভাবনার কথাও জানালেন TV9 বাংলাকে। বললেন, “ভেবেছিলাম তো অনেক কিছুই। ইচ্ছে ছিল, আগামী বছর ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাস নাগাদ ঐন্দ্রিলা-সব্যসাচীর বিয়েটা দিয়ে দেব। ফোনে সব্যসাচীর বাবার সঙ্গে কথা হয়েছিল এ ব্যাপারে। সব্যসাচীর বাবা বলেছিলেন, আমাদের বাড়িতে এসে কথা বলবেন।”
কথা বলতে-বলতেই উত্তমবাবু ঐন্দ্রিলার মা শিখা শর্মাকে ফোনটা দেন। তিনিও জানালেন একই কথা। সেই সঙ্গে বললেন, “আমার মেয়ে এবং সব্যসাচী হরিহর আত্মা। আগামী বছর ফেব্রুয়ারি-মার্চ নাগাদ ওদের বিয়ে দেওয়ার একটা পরিকল্পনা করেছিলাম… (একটু থেমে জোর দিয়ে বললেন শুধু একটা শব্দ) ছিলাম…। বারবার সবাই বলছে ঐন্দ্রিলা ছিল…ছিল বলছে… সবটাই অতীত হয়ে গিয়েছে এর মধ্যেই, বলুন…” এতটুকু বলার পরই ফোনের ও পাশ থেকে শিখাদেবীর কান্নাভেজা গলা ভেসে এল। তারপর নিজেকে সামলে নিলেন এই মনে করে, বেশি কাঁদলে তাঁর মেয়েটাই যে কষ্ট পাবে। বাবা-মা তাঁর জন্য চোখের জল ফেলুক, সহ্য করতে পারতেন না ঐন্দ্রিলা, জানালেন শিখাদেবী।
হাতে-হাত ধরে সব কাজ করতেন ঐন্দ্রিলা-সব্যসাচী। লকডাউনে মানুষের পাশে থেকেছিলেন। কোন বাচ্চা খেতে পাচ্ছে না, কারা ওষুধ পাচ্ছেন না… সকলের দরকারে ছুটে-ছুটে গিয়েছেন দুই অভিন্ন হৃদয়ের মানুষ। মেয়ে ও তাঁর ভালবাসার মানুষের এই বিচ্ছেদ, সন্তান হারানোর যন্ত্রণা বুকে পাথরের মতো বসে গিয়েছে শিখাদেবী এবং উত্তরবাবুর। দু’চোখের পাতা এক করতে পারছেন না তাঁরা। বন্ধ করলে ভেসে আসছে মেয়ের শারীরিক যন্ত্রণার সবকটা ছবি। বাবা-মাকে ঐন্দ্রিলার আগলে রাখার অগুনতি স্মৃতি মনে করতে-করতে শিখাদেবী বললেন, “ও আমাদের পরিবারের প্রাণ ছিল… আমাদের মেরুদণ্ড… কী নিয়ে থাকব এখন…”