Body odour in Summer: ঘাম হবে না, দূর হবে গায়ের গন্ধও! গ্রীষ্মের ডায়েটে রাখুন এই ৬টি খাবার
গ্রীষ্মকাল। চলছে দাবদাহ। শুয়ে, বসে, হেঁটে, কাজ করে শান্তি নেই। দরদর করে শুধু ঝরছে ঘাম! প্যাচপ্যাচ করছে বগল, গলা, পিঠ... তার সঙ্গে গা থেকে বেরচ্ছে কটু গন্ধ। অথচ চাইলেই শুধু কয়েকটা খাবার খেয়েই গায়ের গন্ধ করে তোলা যায় মিষ্ট!
‘আম পাকে বৈশাখে’— একথা আমরা সকলেই জানি। কিন্তু কোমল শরীর যে রোদে ভাজা আর ঘামে সেদ্ধ হয়ে যাচ্ছে তার বেলা? বাসে ট্রেনে ওঠা দায়! হাত তুলে হাতল ধরলেই দুর্গন্ধের ঠেলায় পাশের লোক পগার পার! আসলে গরম, সেইসঙ্গে বাতাসে অতিরিক্ত জলীবাষ্পের মাত্রা দেহে ঘামের উদ্রেক ঘটায়। তার সঙ্গে ত্বকে থাকা কিছু ব্যাকটেরিয়া ঘামের প্রভাবে দ্রুত বেড়ে ওঠে। ঘাম ও ব্যাকটেরিয়ার সম্মিলিত আয়োজনে একধরনের কটুগন্ধ তৈরি হয় ত্বকে। অথচ জানলে অবাক হবেন, বেশ কিছু খাদ্য রয়েছে যেগুলি খেলে গায়ের গন্ধ (Body odour)শুধু দূর হবে তাই নয়, তার সঙ্গে গা থেকে বেরবে ‘মধুর ‘ গন্ধ!
নিশ্চিতভাবে কিছু খাদ্য রয়েছে যা গায়ের গন্ধে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে। তবে তার আগে কতকগুলি বিষয় জেনে নেওয়া দরকার—
বেশি ঘামের সমস্যাকে চিকিৎসা পরিভাষায় বলা হয় হাইপারহাইড্রোসিস। এই ধরনের সমস্যায় আক্রান্তদের উচিত প্রতিদিন দু’বার স্নান করা। সকালে একবার। অন্যবার সন্ধেবেলায় বা ঘুমোতে যাওয়ার আগে।
বেশি ঘাম হওয়ার কারণ
• ডায়াবেটিস। • মেনোপজ হট ফ্ল্যাশ। • সংক্রমণ। • লো ব্লাড প্রেশার। • থাইরয়েডের সমস্যা (হাইপারথাইরয়েডিজম)। • লিউকেমিয়া। • কিছু কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। • স্ট্রেস, উদ্বেগ, অবসাদ। • স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চলা।
অত্যধিক ঘামের সমস্যা বহু মানুষের জীবন দুর্বিষহ করে তোলে। তাই মাত্রাতিরিক্ত ঘামের সমস্যা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া দরকার ও অসুখ থাকলে তার চিকিৎসা করা দরকার। তবে স্বাভাবিক অবস্থায় কিছু নিয়ম মেনে চললে আর কিছু খাদ্য রোজকার ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত করলে উপকার মেলে।
জল- প্রতিদিন পর্যপ্ত মাত্রায় জল পান করলে শরীর ঠান্ডা থাকবে। এছাড়া মাত্রাতিরিক্ত ঘামের কারণে হওয়া জলশূন্যতা ও ডায়ারিয়া থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।
ফাইবারযুক্ত খাদ্য- ওটস, গমজাতীয় খাদ্য হজম ক্ষমতা বাড়ায়। শরীরের তাপমাত্রাও স্বাভাবিক থাকে ও বেশি ঘাম হয় না।
অলিভ অয়েল- রান্নার সময় অলিভ অয়েল ব্যবহারে ভালো ফল মিলতে দেখা গিয়েছে। অলিভ অয়েল মেটাবলিজম (বিপাকক্রিয়া) বাড়াতে সাহায্য করে। হজমেও সহায়তা মেলে। অলিভ অয়েলে রয়েছে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। ফলে দেহের তাপমাত্রা অস্বাভাবিকরকমভাবে বেড়ে যাওয়া যেমন প্রতিরোধ করে, তেমনই মাত্রাতিরিক্ত ঘাম বেরনও বন্ধ হয়।
ফল – আপেল, আঙুর, তরমুজ, আনারস এবং লেবুতে জলের ভাগ থাকে অনেকখানি। ফলে দেহে জলশূন্যতা প্রতিরোধ করে। শরীরে জলের জোগান বজায় থাকে বলে শরীরও ঠান্ডা থাকে। এছাড়া লেবু, আনারসের মতো ফল খেলে ত্বকেও তার প্রভাব পড়ে। ত্বক উজ্জ্বল থাকে। গায়ের দুর্গন্ধও দূরে থাকে।
শাকসব্জি – গরমের সময় যে কোনও ধরনের শাক ও সব্জি পাতে রাখলে হজমের সমস্যা হয় না। পেট ভালো থাকে। এছাড়া শাকসব্জিতে প্রচুর রাফেজ থাকে। ফলে অনেকটা জল শোষণ করে ও শরীরে জলের জোগান বজায় রেখে ডিহাইড্রেশন হওয়া রোধ করে। দেখা গিয়েছে নিয়মিত শাকসব্জি খেলে মাত্রাতিরিক্ত ঘাম বেরনোর সমস্যা কম হয়। গায়ের দুর্গন্ধও দূর হয়।
গ্রিন টি- প্রতিদিন উষ্ণ গ্রিন টি পান করলে মেটাবলিজম উন্নত হয়। এছাড়া গ্রিন টি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট দ্বারা পূর্ণ যা অক্সিডেটিভ স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণ করে। অক্সিডেটিভ স্ট্রেস বাড়ে গুরুপাক খাদ্যে যথা পোড়া মাংস, অত্যাধিক মশলাযুক্ত খাদ্য খেলে। তাই নিয়মিত গ্রিন টি খেলে তা শরীরকে নানাভাবে সুরক্ষা প্রদান করে। নার্ভকেও রক্ষা করে। শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক থাকে। মাত্রাতিরিক্ত ঘাম হওয়া রোধ হয়।
কী কী খাবেন না
কফি, অ্যালকোহল মতো পানীয় বাদ দিন। এই ধরনের পানীয় স্নায়ুতন্ত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তাই শরীরে বেশি পরিমাণে ঘাম তৈরি হয়। গায়ের দুর্গন্ধও বাড়ে।
আরও পড়ুন: Bedtime Rituals: মুক্তোর মত চকচকে সাদা দাঁত পেতে রাতে শোওয়ার আগে এই নিয়মগুলি মানতেই হবে