জলের অপর নাম জীবন! দেহ সুস্থ রাখতে পানীয় জলের গুরুত্ব কতটা, জানেন?
সারাদিন অফিসে কাজে ব্যস্ত থাকলে, তখন আরও বেশি জল পান করা মনে রাখা কঠিন।তবে এর জন্য আপনার দেহের এবং আপনার মনের স্বাস্থ্যের পক্ষে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সম্প্রতি ইউরো ২০২১ চ্যাম্পিয়নশিপের একটি সাংবাদিক বৈঠকে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর কীর্তি দেখে মুগ্ধ হয়েছেন ভক্তকূল। প্রেস কনফারেন্সের টেবিলে দুটি সফট ড্রিংকসের বোতল ও একটি জলের বোতল রাখা ছিল। রোনাল্ডো সেই টেবিলে বসতেই ওই দুটি ড্রিংকসের বোতল দূরে সরিয়ে, পানীয় জলের বোতলটি সামনে রেখে দেন। সেই সময় ক্যামেরার সমানে তাঁকে বলতে দেখা যায়, Drink Water! ক্ষনিকের এই বার্তার ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়। ক্রীড়াবিদ, সেলেব্রিটি- এঁরা সকলেই পর্যাপ্ত পরিমাণে পানীয় জল পান করার অভ্যেস রাখেন। কিন্তু আমজনতা! সাধারণ মানুষ পানীয় জল পান করা নিয়ে কতটা সচতেন? পানীয় জলের উপকারীতাই বা কী?
জলের অপর নাম জীবন। কথাতেই রয়েছে। চিকিত্সকদের মতে, প্রতিদিন একজন প্রাপ্ত বয়স্কের ৮ গ্লাস জল পান করা উচিত। অধিকাংশই জানেন না, সঠিক পরিমাণে জল পান না করলে শরীরের নানান সমস্যা তৈরি হতে পারে। যতক্ষণ না তেষ্টা পাচ্ছে, ততক্ষণ জল খান না অনেকে। আর এতেই শরীরের নানান সমস্যার সৃষ্টি হয়।
জল আমাদের শরীরের কী কী উপকারে লাগে, তা একবার দেখে নেওয়া যাক…
১. শরীরের প্রায় ৬০ শতাংশই জল। হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি, রক্ত সঞ্চালন, মুখে লালা তৈরিতে, পুষ্টি অনুঘটক, শরীরের তাপমাত্রা ঠিক রাখা- এই সব শারীরিক ক্রিয়াকলাপগুলি সচল রাখাতে জলের প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য
২. পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান না করলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে পেশিশক্তি হ্রাস পায়। সারাদিন ক্লান্তিভাব থেকে যায়। শরীরে তরলের ভারসাম্যরক্ষায় ঘাটতি শুরু হয়।
৩. কিডনির জন্য দরকার পর্যাপ্ত পরিমাণে জল। আর সেই জলের যোগান আপনাকেই দিতে হবে। কিডনিতে যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে জল না থাকে, তাহলে কিডনিতে পাথর তৈরি হতে পারে। কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।
৪. হজমক্ষমতা বৃদ্ধিতে জলের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। পানীয় জলের মধ্যে যে খনিজগুলি থাকে, সেগুলি হজমক্ষমতা কাজে লাগিয়ে শরীরে পুষ্টি জোগাতে সাহায্য করে।
আরও পড়ুন: দিনের কোন সময়ে শরীরচর্চা করলে মেদ ঝরবে বেশি, জানেন?
৫. পর্যাপ্ত পরিমাণে জল খাওয়ার ফলে ওজন হ্রাস হতে পারে। শরীরকে আর্দ্র রাখতে প্রতিদিন ৮ গ্লান জল খাওয়া প্রয়োজন। খাবার খাওয়ার ঠিক ৩০ মিনিট আগে জল পান করলে খিদে বাড়ে, বিপাকের হার বৃদ্ধি ঘটে, শরীরে ক্যালোরি ক্ষয় হতে সাহায্য করে। জল ছাড়া গ্রিন টির মতো পানীয়ও শরীরকে হাইড্রেট করতে সাহায্য করে।
৬. বাতের ব্যাথা দূর করতে জলের ভূমিকা অপরিহার্য। বাতের ব্যাথার জন্য পরিপূরক গ্লুকোসামাইন, কার্টিলেজ শরীর থেকে আরও জল শোষণে সহায়তা করে। তাই গাঁটে গাঁটে ব্যাথার উপশম পেতে প্রচুর পরিমাণে জল খান।
৭. প্রচুর পরিমাণে জল পান করলে ত্বক উজ্জ্বল ও পরিস্কার থাকে। বার্ধক্যের ছাপ পড়ে না, ত্বকের নানান সমস্যা মেটাতে জলই একমাত্র সমাধান। প্রচুর পরিমাণে জল পান করলে ক্লান্তিভাব, হাইড্রেশন বা ব্রণর মতো সমস্যা দূর হতে পারে নিমেষের মধ্যে।
৮. মানসিক দিক থেকেও জল অত্যন্ত উপকারী। মস্তিষ্কে জল সরবরাহে ঘাটতি থাকলে ডিহাইড্রেশনের মতো মারাত্মক সমস্যা তৈরি হয়। দেহে সোডিয়াম, ইলেক্ট্রোলাইট স্তরগুলিতে প্রভাবিত করতে জলের ভূমিকা রয়েছে। উদ্বেগ, মাথাব্যথা, সাধারণ ক্লান্তির জন্যও একমাত্র সমাধান হল জল।