Winter Health Care: এবার শীতে ‘ট্রিপল’ হামলা! তিন ভাইরাসের প্রকোপ থেকে বাঁচার মূলমন্ত্র জানাল বিশেষজ্ঞরা

Triple threat: শীতের সময় ফুসফুসের সংক্রমণের সমস্যায় বেশি ভোগেন শিশু থেকে প্রবীণরা। ঘন ঘন জ্বর, সর্দি, কাশি, কফ ওঠা, শরীরে ব্যথা, বমি বমি ভাব হল ফুসফুসের সংক্রমণের সাধারণ লক্ষণ।

Winter Health Care: এবার শীতে 'ট্রিপল' হামলা! তিন ভাইরাসের প্রকোপ থেকে বাঁচার মূলমন্ত্র জানাল বিশেষজ্ঞরা
ছবি সৌজন্যে রয়টার্স
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 10, 2022 | 6:21 PM

উত্তুরে হাওয়া শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আবহাওয়া যেমন ঠান্ডার আমেজে মুড়ে যায়, তেমনি এই শতকালে বিভিন্ন সংক্রমণের জেরে শ্বাসযন্ত্রের নানা সমস্যা তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তাই শীতের শুরু থেকেই সতর্ক করছেন চিকিত্‍সকরা। ইনফ্লুয়েঞ্জা ও শ্বাসকষ্টের মত মরসুমি রোগের প্রাদুর্ভাব ইতোমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। শুধু ইনফ্লুয়েঞ্জার দাপট নয়, পাশাপাশি করোনার প্রকোপও এক সঙ্গে পাল্লা ভারী করছে। করোনাভাইরাস ও ইনফ্লুয়েঞ্জা, এই দুইয়ের প্রকোপের জের নিয়েই মাথাব্যাথা শুরু হয়েছে চিকিত্‍সাবিজ্ঞানীদের। এমন পরিস্থিতিতে অনেকেই ট্রিপলমেডিক বলে অভিহিত করেছেন। তবে এর বাস্তব রূপ কতটা মারাত্মক হতে চলেছে, সে ব্যাপারে সন্দিহান গবেষকরা।

গত দুবছর কোভিড অতিমারির সময়কালেই শীতকালে অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত একাধিক কোভিড তরঙ্গে ভাইরাসের আচরণের পরিবর্তন, ক্ষতিকারক রূপ দেখে সংক্রমণের তেজ পর্যালোচনা করাহয়েছে। গত শীতেও মহামারির মধ্যেও সাধারণ ফ্লু, জ্বর-কাশি-সর্দির প্রকোপের বাড়বাড়ন্ত দেখা গিয়েছিল। উদ্বেগ কাটেনি এখনও। কোভিডের তেজ কমলেও এখনও বিলীন হয়েনি এই ভয়ংকর ভাইরাস। পরবর্তীকালে কী কী ঘটতে পারে তা নিয়েও অন্ধকারে চিকিত্‍সকবিজ্ঞানীরা। ঠান্ডার দিনে কোভিড পরিস্থিতি কতটা খারাপ হতে পারে তা নিয়ে রয়েছে মিশ্র-প্রতিক্রিয়া। কারণ শীতের সময় ভাইরাসের দৌরাত্ম্য তুলনামূলকভাবে বেড়ে যায়। বদ্ধ ঘরের ভিতরে থাকার প্রবণতা থাকায় বায়ুচলাচলে হ্রাস পায়। তাতে ভাইরাসগুলি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।

শীতকালে সাধারণত ইনফ্লুয়েঞ্জার প্রকোপই বেশি দেখা যায়। এই ভাইরাসের প্রভাবে প্রথমেই যেটা হয় তা হল শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ। যার মধ্যে সাধারণ ও গুরুতব হিসেবে ধরা হয়। গুরুতর হলে রোগীকে হাসপাতালে ভরতি করতেই হয়। এমনকি এই ভাইরাসের প্রকোপে প্রাণহানির ঘটনাও ঘটে। বিশেষ করে দুর্বল বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যাঁদের কম, তাঁদের ক্ষেত্রে এই সময়টা যথেষ্ট সাবধানে থাকা উচিত। শীতকালে সংক্রমণের কারণের পিছনে রয়েছে একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ। ঠান্ডা হাওয়ার থেকে বাঁচতে বদ্ধ ঘরের ভিতরেই দিনের বেশিরভাগ সময়টা কাটান অধিকাংশ। প্রসঙ্গত ভাইরাস কম তাপমাত্রা ও কম আর্দ্র আবহাওয়ায় থাকতে বেশি পছন্দ করে। কোভিডের মত না হলেও , রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস করার ক্ষেত্র্রে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব যথেষ্ট। তাই নভেম্বরের গোড়া থেকে মার্চের শেষ পর্যন্ত এই ভাইরাসের তাণ্ডব চলে। এই সময়ের মধ্যে কোভিড ঠেকাতে যে যে বিধি-নিষেধ পালন করা দরকার, ফ্লুয়ের ক্ষেত্রেও সেই একইরকম নিয়ম মেনে চললে অন্যান্যদের থেকে সুরক্ষিত থাকতে পারবেন বলে পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিত্‍সকরা।

আরএসভি বা শ্বাসযন্ত্রে সংক্রমণ হল শীতকালীনন একটি সাধারণ ভাইরাস। মৃদু কাশি ও ঠান্ডা লাগার উপসর্গ দেখা যায় এই সময়। তবে এই ভাইরাসকে একেবারেই অবহেলা করা চলে না। গুরুতর হলে নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কাইটিসের মত রোগ শরীরের বাসা বাঁধে। বিশেষ করে এই ভাইরাস থেকে শিশুদের সুরক্ষিত রাখা জরুরি। শীতের সময় ফুসফুসের সংক্রমণের সমস্যায় বেশি ভোগেন শিশু থেকে প্রবীণরা। ঘন ঘন জ্বর, সর্দি, কাশি, কফ ওঠা, শরীরে ব্যথা, বমি বমি ভাব হল ফুসফুসের সংক্রমণের সাধারণ লক্ষণ। সমীক্ষা বলছে, প্রি-কোভিড অতিমারির আগে আরএসভি দ্বারা সংক্রমণে আক্রান্তের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে বেশি ঘটনা ঘটেছে। বিশেষ করে শীতের শুরুতেই এই ভাইরাসের দৌরাত্ম্য লক্ষ করা গিয়েছে।

শীতকালীন ফ্লু বা ভাইরাস ঠেকাতে কী কী ব্যবস্থা নেবেন, তা এখানে জেনে নিন…

– কোভিডের হাত থেকে বাঁচতে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। শীতকালে সংক্রমণ ঠেকাতে বাড়ির বাইরে বের হলেই মুখে সুতির কাপড় জড়িয়ে নিন। মাস্ক পরলে আরও ভাল।

– এই সময় যে যে খাবারে এলার্জি রয়েছে, সেগুলি এড়িয়ে চলুন। যেমন বেগুন, চিংড়ি-সহ যে খাবারে এলার্জি রয়েছে, সেগুলি খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দিন।

– রোগভোগ থেকে দূরে রাখতে সবুজ শাকসবজি, তাজা ফল খান প্রতিদিন।

– বাড়ির বাইরে বের হলে হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবহার কম করলে চলবে না। এমনটা করলে করোনার পাশাপাশি অন্যান্য ফ্লুগুলিও এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব।

– এই সময় ম্যাগনেসিয়াম-যুক্ত খাবার খান। যেমন মাছ, কলা, ডার্ক চকোলেট, সূর্যমুখীর বীজ, বাদাম, আমন্ড, কুমড়োর বীজ খেতে পারেন।

– শিশু ও প্রবীণদের যতটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার চেষ্টা করুন।

– শীতকালে গরম জামাকাপড় পরুন। প্রয়োজন ছাড়া রাতের সময় কনকনে ঠান্ডায় বের হবেন না।

– ধূমপান থেকে বিরত থাকুন। এই সময় আয়ুর্বেদিক কাড়া খেতে পারেন। তাতে ফুসফুস ও হৃত্‍পিন্ড সুস্থ থাকে।