জিভের রঙ নীল না কালো? জিভের রঙ দেখে বুঝে নিন আপনি কোন রোগে আক্রান্ত!

অনেকসময় মেডিসিন বা খাবারের কারণে জিভের রঙ বদলে যায়। আবার কিছু অস্বাভাবিক রকমভাবে জিভের রঙ পরিবর্তন হলে, বুঝবেন আপনার শরীরের অজান্তেই কোনও সমস্যা তৈরি হচ্ছে।

জিভের রঙ নীল না কালো? জিভের রঙ দেখে বুঝে নিন আপনি কোন রোগে আক্রান্ত!
ছবিটি প্রতীকী
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 13, 2021 | 11:52 AM

আপনি কি পুরোপুরি সুস্থ? গোপনে শরীরে কঠিন রোগ বাসা বাঁধছে কিনা বুঝতে পারছেন না। তবে প্রাথমিকভাবে বুঝতে না পারলেও, জিভের রঙ দেখে রোগ নির্ণয় করা সম্ভব। জিভের রঙ, অবস্থা দেখে শরীরের কোনও কঠিন রোগ বাসা বেধেছে কিনা, শারীরিক কোনও সমস্যা তৈরি হতে পারে কিন না জিভের রঙ দেখেই বোঝা যায়। আমরা অনেকেই এর খেয়াল রাখি না। প্রতিদিন জিভ পরিষ্কার রাখলে অনেক রোগের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে। রোজ সকালে দাঁত মাজার সময়ই জিভ ভালো করে পরিষ্কার করে নিন।

প্রাথমিকভাবে, চিকিত্সকরা রোগীর জিভ পর্যবেক্ষন করে রোগ নির্ণয় করেন। রঙ, আকার, অবস্থা শারীরিক সমস্যা সম্বন্ধে জানার চেষ্টা করেন। প্রসঙ্গত, কয়েক শতাব্দী পুরনো এই পন্থা চিনাদের চিকিত্সা পদ্ধতির একটি বিশেষ অঙ্গ ছিল। নিজের রোগ নিজেই নির্ণয় করতে পারবেন, জিভের রঙ দেখেই।

স্বাভাবিক জিভের রঙ

সাধারণত, সব মানুষের জিহ্বার রঙ হালকা গোলাপি রঙের হয়। আপনার জিভের রঙ যদি হালকা গোলাপি রঙের হয় এবং জিভের ওপর যদি পাতলা সাদা একটি আস্তরণ থাকে, তা হলে বুঝবেন হজমে কোনও সমস্যা নেই। পরিপাকতন্ত্র ঠিকমতো কাজ করছে। জিভ মূলত আমাদের পরিপাকতন্ত্রের খবরাখবর জানায়। কারণ জিভ থেকেই এই তন্ত্রে শুরু।

সাদা জিভ- জিভের উপর সাদা রঙের আবরণ তৈরি হলে বুঝবেন শরীরের কোনও সমস্যা দেখা দিয়েছে। মুখের ভিতর প্রতিদিন পরিস্কার রাখা সমান গুরুত্বপূর্ণ। শরীরের আর্দ্রতা হ্রাস পেলে জিভের উপর সাদা রঙের পুরু আস্তরণ পড়ে যায়। পনিরের মতো জিভের মধ্যে সাদা স্তর পড়লে বুঝবেন শরীরের জন্য বিপদ সংকেত। লিউকোপ্লাকিয়ার মতো রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। কখনও কখনও ফ্লু দেখা দিলে এমন অবস্থা হয় জিভের।

হলুদ জিভ- হালকা গোলাপী থেকে জিভের রঙ যদি হলুদ রঙের হয়ে যায়, তাহলে বুঝবেন, শরীরে পুষ্টির ঘাটতি ঘটেছে। হজমতন্ত্রের সমস্যা, লিভারের সমস্যা কিংবা পেটের সমস্যার জন্য জিভের রঙ হলুদ হয়ে যায়। এমন কিছু সমস্যা দেখা দেওয়ার আগে জিভের রঙ ধীরেধীরে হলুদ আকার ধারণ করে। মূলত জ্বর হলে জিভের ওপর হলুদ আস্তরণ পড়ে। দেহের তাপমাত্রা অনেক কারণে বাড়তে পারে। সেটা ব্যাক্টেরিয়া সংক্রমণ হতে পারে, শরীরের কোনও অংশ ফুলে গিয়ে থাকতে পারে।

বাদামি রঙের জিভ- অতিরিক্ত পরিমাণে ক্যাফাইন খেলে অনেকেরই জিভ বাদামি আকার ধারণ করে। ধূমপান করলেও ঠোঁট ও জিভের রঙ বদলে বাদামি হয়ে যায়। ধূমপান, কফি খাওয়ার ফলে অনেকেরই জিভের রঙ সারা জীবনের মতো বাদামি হয়ে যায়। যাঁরা অতিরিক্ত ধূমপান করেন. তাঁদের ক্ষেত্রে এই রঙের জিভ হয়ে যাওয়া স্বাভাবিক!

কালো রঙের জিভ- চেইন স্মোকারদের জিভের রঙ সাধারণত কালো হয়। যদি ধূমপান না করেও জিভের রঙ কালো হয়, তাহলে বুঝবেন আপনার শরীরে ক্যানসারের মতো মারণ রোগ বাসা বাধছে। এছাড়া ফাঙ্গাল ইনফেকশন, মুখ পরিস্কার না করার ফলে জিভের রঙে কালো হয়ে যায়। সাধারণ কারও কারও জন্ম থেকেই এ রকম রং থাকতে পারে। তবে যদি হঠাত্‍ কালো রং দেখেন তা হলে বুঝবেন এক সঙ্গে বিপুল পরিমাণ ব্যাক্টেরিয়া জমা হয়েছে জিভে। তবে শুরু থেকেই এমনটা হবে না, প্রথমে হলুদ, তার পরে ব্রাউন, তার পর কালো রং হবে।

লাল রঙের জিভ- যদি হঠাত করে জিভের রঙ লাল হয়ে যায়, তাহলে বুঝবেন স্বাস্থ্য়ের সমস্যা তৈরি হয়েছে। শরীরে ভিটামিন ডি ১২ বা ফলিক অ্য়াসিডের ঘাটতি হলে এমনটা হয়ে থাকে। যদি জিভের মধ্যে লাল লাল ছোপ দেখা যায়, তাকে বলে জিওগ্রাফিক এর অর্থ শরীরে এনার্জি বলতে কিছুই অবশিষ্ট নেই। কোনও অ্যালার্জির কারণেও এমনটা হতে পারে। চর্মরোগ, র‌্যাশ প্রভৃতি রোগের লক্ষণ হতে পারে। প্রথমে জিভের ডগার দিকটাই লাল থাকবে। পরে তা পুরো জিভে ছড়িয়ে পড়বে।

নীল রঙের জিভ- দীর্ঘ দিন ধরে শরীরে কোনও সমস্যা থাকলে জিভের রং পার্পল হতে শুরু করেন। এটার অর্থ শরীরে ভিটামিন বি-এর ভীষণ ঘাটতি রয়েছে। মনে রাখবেন, শরীরে অক্সিজেনের অভাব হলে জিভের রং পাল্টে গিয়ে নীল বর্ণ হতে থাকে। ডাক্তারি ভাষায় একে সায়ানোসিস বলে। যদি এমনটা দেখেন অবিলম্বে চিকিত্‍সকের কাছে যান। রক্তে সমস্যা, হৃদযন্ত্রের সমস্যার মতো রোগ থাকতে পারে। তাই দেরি করা ঠিক নয়।

আরও পড়ুন: এক গ্লাস গরম দুধে দুটি খেজুর! মাত্র ১০ দিনেই মিলবে উপকার