Side Effects Of Garlic: দ্রুত ফল পেতে বেশি পরিমাণে রসুন খাচ্ছেন? জেনে নিন এতে কী কী ক্ষতি হতে পারে আপনার
রসুনকে অবশ্যই প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় যোগ করা ভাল, তবে নির্দিষ্ট পরিমাণে। কারণ আপনি দ্রুত ফলাফলের আশায় যদি বেশি পরিমাণে রসুন খাওয়া শুরু করেন তাহলে হিতে বিপরীতও হতে পারে।
রসুন হচ্ছে এমন একটি সবজি যা প্রায় সব রান্নাঘরেই থাকে। একাধিক গুণে ভরপুর রসুনের স্বাস্থ্য উপকারিতার শেষ নেই। ভিটামিন, মিনারেল ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ফাইটোনিউট্রিয়েন্টসের মত একাধিক যৌগ রয়েছে রসুনের মধ্যে। রসুন শুধু যে অভ্যন্তরীণ স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলে তা নয়, ত্বক ও চুলের স্বাস্থ্য বজায় রাখতেও ভীষণ ভাবে সহায়ক রসুন। ত্বকের ব্রণর সমস্যা হোক বা সর্দি কাশির সমস্যা- নিমেষের মধ্যে সব কিছুর সমাধান করে দেয় রসুন। তাই এই বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই যে, আপনি রসুনকে অবশ্যই আপনার খাদ্যতালিকায় রাখবেন। কিন্তু যদি বেশি পরিমাণে রসুন খেতে থাকেন তাহলে কী সমস্যা তৈরি হবে জানেন?
কোনও জিনিসেরই ওভারডোজ কখনোই শরীরের পক্ষে ভাল নয়। নিয়মিত পরিমাণের থেকে বেশি সেই খাদ্যটি খেলে স্বাভাবিক ভাবেই সেটা শরীরের ওপর প্রতিক্রিয়া ফেলবে। রসুনের ক্ষেত্রেও এই বিষয়টি ব্যতিক্রম নয়। রসুনকে অবশ্যই প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় যোগ করা ভাল, তবে নির্দিষ্ট পরিমাণে। কারণ আপনি দ্রুত ফলাফলের আশায় যদি বেশি পরিমাণে রসুন খাওয়া শুরু করেন তাহলে হিতে বিপরীতও হতে পারে। তাহলে চলুন দেখে নেওয়া যাক, বেশি রসুন খেলে কী কী সমস্যা দেখা দেয়।
পেন স্টেট ইউনিভার্সিটি এবং ভারতের একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে অত্যধিক পরিমাণে রসুন খেলে ক্ষতি হবে পারে আপনার লিভারের। লিভার বা যকৃৎ হচ্ছে আমাদের শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এর প্রধান কাজ গুলির মধ্যে হচ্ছে রক্ত পরিশুদ্ধ করা, কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাট, প্রোটিন মেটাবলিজম করা ইত্যাদি। তাই আমাদের এই অঙ্গের খেয়াল রাখা জরুরি। যদি অতিরিক্ত পরিমাণে রসুন খান তাহলে লিভারের বিষাক্ততা সৃষ্টি হয় যা আমাদের যকৃতের ক্ষতি হতে পারে।
অতিরিক্ত পরিমাণে রসুন খাওয়া হলে এটি মুখে তৈরি করতে পারে। দুর্গন্ধ হওয়ার প্রধান কারণ হল এতে উপস্থিত সালফার যৌগ। এটাও সত্য যে রসুনে উপস্থিত এই সালফার আমাদের মৌখিক স্বাস্থ্য বজায় রাখতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, কিন্তু এই যৌগের পরিমাণ অতিরিক্ত হয়ে গেলে এটি বিপরীত কাজ করতে পারে। শুধু মুখে দুর্গন্ধই নয়, এর ফলে শরীরের দুর্গন্ধও হতে পারে।
ন্যাশনাল ক্যান্সার ইনস্টিটিউট দ্বারা প্রকাশিত একটি গবেষণা অনুসারে, দেখা গেছে যে কাঁচা রসুনের কোয়া বা নির্যাস মৌখিকভাবে খেলে, বা খালি পেটে রসুনের তেল গ্রহণ করলে বমি বমি ভাব, বমি এবং অম্বল হতে পারে। হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুল দ্বারা প্রকাশিত আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে যে আমাদের খাদ্যতালিকায় রসুনের অত্যধিক সেবন আমাদের পেটে অ্যাসিডের মাত্রা বাড়িয়ে তুলতে দিতে পারে এবং এর ফলে অম্বল এবং গ্যাস্ট্রোইসোফেগাল রিফ্লাক্স রোগ হতে পারে।
রসুন ফাইবারের একটি ভাল উৎস যা একটি প্রাকৃতিক জোলাপ হিসাবে কাজ করে, অন্ত্রের চলাচল উন্নত করে এবং আমাদের শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ দূর করে। রসুনের এই উপকারিতা কোষ্ঠকাঠিন্য এবং অন্যান্য হজম সমস্যা যেমন অন্ত্রের গ্যাস, পেটে ব্যথা, স্ফীতভাব ইত্যাদি থেকে মুক্তি প্রদানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। রসুন অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে এই সুবিধাটাই অসুবিধায় পরিণত হতে পারে এবং এর ফলে ডায়রিয়া হতে পারে। এছাড়াও, রসুনে উপস্থিত সালফারের মতো আরও কিছু গ্যাস গঠনকারী যৌগ ডায়রিয়া ট্রিগার করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
রসুন রক্তকে পাতলা রাখে এবং রক্ত জমাট বাঁধতে দেয় না এবং এটি আমাদের কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেমকে সুস্থ রাখতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং হার্ট অ্যাটাক, হার্ট স্ট্রোক ইত্যাদির ঝুঁকি হ্রাস করে। রসুনের এই সুবিধাটি সেই ব্যক্তিদের জন্য ক্ষতিকারক প্রমাণিত হতে পারে যাঁরা ইতিমধ্যে ওয়ারফারিন, অ্যাসপিরিন ইত্যাদির মতো রক্ত পাতলা করার ওষুধ গ্রহণ করছেন। এর ফলে ছোট আঘাতেও অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হতে পারে।
আরও পড়ুন: নিয়মিত হলুদ-জল খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে! এছাড়া রয়েছে হাজারো গুণ