Diarrhea: শুধুমাত্র জলের মাধ্যমেই ছড়ায় না ডায়েরিয়া, একজনের থেকে অন্যজনের শরীরে ছড়ায় ড্রপলেটের মাধ্যমেও
Diarrhea Causes: সম্প্রতি গবেষণা বলছে, এই ভাইরাস শুধুমাত্র জলের মাধ্যমেই ছড়ায় না, একজনের থেকে অন্যজনের শরীরে ছড়ায় ড্রপলেটের মাধ্যমেই
যে কোনও সংক্রমণ ঠেকাতে মুখে মাস্ক আবশ্যক। যে কারণে কোভিড ঠেকাতে মাস্কই প্রধান হাতিয়ার। মাস্কের ব্যবহারে ঘাটতি পড়তেই বাড়তে শুরু করেছে কোভিড। হাঁচি-কাশির মধ্যে দিয়ে ছড়ায় করোনার ড্রপলেট। মাস্ক হল তাই সুরক্ষা কবচ। এমনটা হয়ে থাকে ডায়েরিয়ার ক্ষেত্রেও। শুনে অবাক লাগছে? অর্থাৎ মাস্ক ছাড়া ডায়েরিয়া রোগীর কাছে গেলেই বিপদ। ডায়েরিয়ার জন্য দায়ী হল রোটা ভাইরাস। যা মূলত জলবাহিত। সম্প্রতি গবেষণা বলছে, এই ভাইরাস শুধুমাত্র জলের মাধ্যমেই ছড়ায় না, একজনের থেকে অন্যজনের শরীরে ছড়ায় ড্রপলেটের মাধ্যমেই। আমেরিকায় এক বঙ্গসন্তানের গবেষণাতেই উঠে এসেছে এই তথ্য। এরপর সেই গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয় ‘নেচার’ পত্রিকাতেও।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ হেলথের রিসার্চ স্কলার সৌরীশ ঘোষের আওতায় ছিল এই প্রকল্প। তিনিই হলেন মুখ্য গবেষক। ১০ দিনের কম বয়সী ইঁদুর যারা রোটা ভাইরাসে আক্রান্ত সেই ছানা ও তার মায়েদের উপর এই গবেষণা চালানো হয়। রোটা ভাইরাস মূলত আক্রমণ করে বাচ্চাদেরকেই। আর বাচ্চাদের ক্ষেত্রে নোরো ভাইরাস। সেই গবেষণায় দেখা যায়, প্রথমে মায়ের শরীরে কোনও সংক্রমণ না থাকলেও ইঁদুর ছানাকে স্তন্যপান করাতে গিয়ে মা-ও সন্তানের থেকে সংক্রমিত হয়ে যান। সদ্যোজাত ইঁদুরের লালারসে উপস্থিত ভাইরাস-ই হানা দিয়েছে মায়ের স্তনগ্রন্থিতে। যেখান থেকে সহজেই আক্রান্ত হয়েছেন মা। পরবর্তীতে কোষ বিভাজন প্রক্রিয়ায় দেখা গিয়েছে এই ভাইরাস একই ভাবে সংক্রমণ ছড়াতে পারে মানুষের দেহেও।
এই বর্ষাতেই প্রকোপ বাড়ে ডায়েরিয়ার। তত্য বলছে প্রতি বছর বিশ্বজুড়ে প্রায় আড়াই কোটি শিশু শিকার হয় ডায়েরিয়ার। এর মধ্যে অন্তত দু’কোটি শিশুকে হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা করাতে হয়। রোটা ভাইরাস ছড়ায় অন্ত্রের মাধ্যমেই। জল দূষণই এর প্রধান কারণ। সাধারণত মল জলের সঙ্গে মিশলেই এই দূষণ বেশি হয়। যে কারণে বন্যা হলে ডায়েরিয়ার সম্ভাবনা আরও কয়েকগুণ বেড়ে যায়।
সংক্রমিতের লালারস থেকেও ছড়াতে পার ডায়েরিয়া। কোভিড বা মরশুমি সর্দি-কাশি ছড়ায় এই ভাবে। তবে ডায়েরিয়ার সংক্রমণের ক্ষেত্রেও যে এমনটা হতে পারে তা আগে জানা ছিল না। এতে ঝুঁকি বাড়ল আরও অনেক বেশি। অর্থাৎ কারোর ডায়েরিয়া হলে তাঁর পাশে বসে কথা বললে সেখান থেকেও ছড়াতে পারে সংক্রমণ। বাচ্চার থেকে সহজে সংক্রমিত হতে পারেন মা। ডায়েরিয়াতে আক্রান্তের এঁটো খাবার, একগ্লাস থেকে জল খেলেও থেকে যাচ্ছে জোরদার সংক্রমণের ঝুঁকি।
অতএব করণীয়
*মাস্ককে জীবনের সঙ্গী করে নিতে হবে। ডায়েরিয়া রোগীর সামনেও আসতে হবে মাস্ক পরে।
*ডায়েরিয়া আক্রান্তর ব্যবহার করা থালা, গ্লাস, চামচ আলাদা করুন। একই থালায় বা এঁটো খাবার খাবেন না।
*যতটা সম্ভব সাবধানে থাকার চেষ্টা করতে হবে।
মানুষের উপর বিশদে গবেষণার কাজ শুরু হয়েছে। ডায়েরিয়া আক্রান্ত শিশুদের লালারস সংগ্রহ করে কী ভাবে বিষয়টি এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় তা নিয়ে শিশু চিকিৎসকদের সঙ্গে কথাবার্তা চলছে বলে জানিয়েছেন সৌরীশ।