STSS Symptoms: দ্রুত সংক্রমণ ছড়াচ্ছে মাংসখেকো ব্যাকটেরিয়া, ৪৮ ঘণ্টাতেই হতে পারে মৃত্যু! কীভাবে রোগ চিনবেন জানুন
STSS Bacteria: স্ট্রেপ্টোকক্কাস ব্যাকটেরিয়া শরীরে প্রবেশ করলে রোগীর জ্বর এবং নিম্ন রক্তচাপের সমস্যা হয়। ব্যাকটেরিয়া এমনভাবে আক্রমণ করে যে টিস্যুগুলি মৃত্যু হতে শুরু করে। এর ফলে রোগীর শরীরের কোনও অংশ বিকল হয়ে যায়। এই ব্যাকটেরিয়া শরীরে প্রবেশ করতে এবং টিস্যু আক্রমণ করতে মাত্র কয়েক ঘণ্টা সময় নেয়।
কোভিড ভাইরাসের পর এবার ভয় ধরাতে শুরু করেছে মাংসখেকো ব্যাকটেরিয়া। যার বৈজ্ঞানিক নাম, স্ট্রেপ্টোকক্কাস। এই ব্যাকটেরিয়া মানুষের শরীরে প্রবেশ করে এবং টিস্যুগুলোকে ধ্বংস করে দেয়। সময়মতো চিকিৎসা না করা হলে রোগে আক্রান্ত হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে রোগী মারা যায়। এই রোগের নাম Streptococcal Toxic Shock Syndrome (STSS)। জাপানে দ্রুতহারে ছড়িয়ে পড়ছে এই রোগ। ইতিমধ্যে জাপানে STAS এর ৯০০টির বেশি কেস রিপোর্ট করা হয়েছে। জাপান ছাড়াও ইউরোপেও এই রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটেছে।
STSS রোগ কী? কিভাবে এটি ছড়ায় এবং কেন 48 ঘন্টার মধ্যে রোগী মারা যায়? আসুন বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে এ সম্পর্কে জানি।
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, সারা বিশ্বে অনেক ধরনের ব্যাকটেরিয়া রয়েছে। তার মধ্যে একটি হল স্ট্রেপ্টোকক্কাস, যা মানুষকে সংক্রমিত করে। এই ব্যাকটেরিয়া কোনও প্রাণী বা পোকা থেকে আসে এবং মানুষের শরীরে প্রবেশ করে। এই ব্যাকটেরিয়া রক্ত এবং টিস্যুতে প্রবেশ করে এবং তাদের কার্যকারিতা নষ্ট করে। সময়মতো চিকিৎসা না পেলে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে রোগী মারা যায়।
কীভাবে এই রোগ হয়?
দিল্লির সফদরজং হাসপাতালের বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. যুগল কিশোর জানান, STSS ব্যাকটেরিয়া শরীরে খোলা ক্ষত বা পোড়ার মাধ্যমে দেহে প্রবেশ করে। একইভাবে টিটেনাস সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়াও শরীরে প্রবেশ করে। এই ব্যাকটেরিয়া দেহে প্রবেশ করলে ধীরে-ধীরে শরীরের বিভিন্ন অংশ ফুলে যায় এবং অতিরিক্ত জ্বর হয়।
কীভাবে ৪৮ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়?
দিল্লির আরএমএল হাসপাতালের চিকিৎসক ডা.অঙ্কিত রাওয়াত জানান, স্ট্রেপ্টোকক্কাস ব্যাকটেরিয়া শরীরে প্রবেশ করলে রোগীর জ্বর এবং নিম্ন রক্তচাপের সমস্যা হয়। ব্যাকটেরিয়া এমনভাবে আক্রমণ করে যে টিস্যুগুলি মৃত্যু হতে শুরু করে। এর ফলে রোগীর শরীরের কোনও অংশ বিকল হয়ে যায়। এই ব্যাকটেরিয়া শরীরে প্রবেশ করতে এবং টিস্যু আক্রমণ করতে মাত্র কয়েক ঘণ্টা সময় নেয়। যদি সময়ের মধ্যে চিকিৎসা না হয়, তাহলে অঙ্গটি সম্পূর্ণ বিকল হয়ে যাবে, যা মৃত্যুর দিকে এগিয়ে দেয়। এই ব্যাকটেরিয়া হার্ট, কিডনি এবং লিভারের মতো যে কোনও অঙ্গকে আক্রমণ করে। যেহেতু এটি টিস্যু ধ্বংস করতে শুরু করে, তাই একে মাংসখেকো ব্যাকটেরিয়া বলা হয়।
কাদের ঝুঁকি বেশি?
অন্যান্য রোগের মতো STSS রোগেও শিশু এবং বয়স্কদের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। এছাড়া খোলা ক্ষতযুক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে STSS এর ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। এর মধ্যে যারা সম্প্রতি অস্ত্রোপচার করেছেন বা ভাইরাল সংক্রমণ হয়েছে তাদেরও ঝুঁকি রয়েছে।
রোগের উপসর্গগুলো কী?
STSS রোগে আক্রান্ত হলে প্রাথমিকভাবে গলা ব্যথা, শরীরের কোনও অংশে ফুলে যাওয়া, মুখে লাল এবং বেগুনি দাগ, ব্লাড প্রেসার কমে যাওয়া, অতিরিক্ত জ্বর দেখা দেবে।
কীভাবে শনাক্তকরণ করা হয়?
STSS নির্ণয়ের জন্য কোন নির্দিষ্ট পরীক্ষা নেই। আক্রান্ত স্থানে রোগী এই রোগের উপসর্গ দেখা গেলে চিকিৎসক রোগীর রক্তের নমুনা নেন এবং বিভিন্ন পরীক্ষা করেন। এর মধ্যে বিপি নেওয়া হয় এবং একজন ব্যক্তির একাধিক অঙ্গে সমস্যা থাকলে তাকে পরীক্ষা করা হয়।
কীভাবে বাঁচবেন?
১) ক্ষতস্থানের চারপাশে জ্বালাপোড়া থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। ২) হাত ধুতে থাকুন। ৩) জ্বর হলে ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন ৪) সংক্রমিত এলাকায় যাওয়া এড়িয়ে চলুন।