ছোট্ট ডিসপোজাল ব্যাগে মুড়ে শ্মশানে এল দেহ, ঠিক একটা পুতুল! করোনা কাড়ল ৫ মাসের পরীকে
এলাকার একটি কারখানায় কাজ করতেন প্রহ্লাদ। ৯ হাজার টাকা মাইনে। গত বছর লকডাউন (Lockdown) ঘোষণার পর কাজ হারান। সেই থেকে ঘরে বসে।
নয়া দিল্লি: গত ৬ মে পাঁচ মাসের ছোট্ট শরীরে ধরা পড়েছিল করোনা (COVID-19)। ছ’ দিনেই লড়াই শেষ। ১২ মে থেমে গেল একরত্তি পরীর শ্বাসযন্ত্রটা। ভেন্টিলেটর থেকে বের করে প্লাস্টিকে মুড়ে নিয়ে যাওয়া হল পূর্ব দিল্লির সীমাপুরী শ্মশানঘাটে। ওখানেই শোওয়ানো রয়েছে পরীর নিথর দেহ। বাড়িতে ২ বছরের দাদা বার বার জানতে চাইছে, ‘মেরা বাবু কাহা হ্যয়’। ফুলের মত সুন্দর ছোট্ট বোনটাকে আদর করে ‘বাবু’ নাম দিয়েছে দাদা। কিন্তু সে বুঝতেই পারছে না, বাবু আর কোনওদিনই ফিরবে না।
এ মাসের শুরুতেই পরীর হঠাৎ একদিন জ্বরে গা পুড়ে যাচ্ছিল। পরীর বাবা প্রহ্লাদ (৩২) জানান, “আমরা দিলশান গার্ডেনে শিশু হাসপাতালে মেয়েকে নিয়ে যাই। সেখান থেকে চাচা নেহরু বাল চিকিৎসালয়ে নিয়ে যাওয়া হলে ওর শরীরে কোভিড-১৯ ধরা পড়ে। জিটিবি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় মেয়েকে। ৬ মে থেকে ভেন্টিলেটরে রাখা হয়েছিল। ১২ মে সব শেষ।”
Delhi: Family of Pari, a 5-month-old child who died due to #COVID19 on 12th May, mourns her demise at their residence. She died at GTB Hospital where she was under treatment and on ventilator since 6th May. She was cremated at Seemapuri crematorium. pic.twitter.com/h8ElqmoJy1
— ANI (@ANI) May 14, 2021
She was burning with fever. We had approached a children’s hospital in Dilshad Garden, then Chacha Nehru Bal Chikitsalaya where she was detected to be infected. Then she was referred to GTB Hospital where she was on ventilator since 6th May, she died on 12th: Pari’s father pic.twitter.com/5nBHtYOoJK
— ANI (@ANI) May 14, 2021
গত এক মাসে পরীকে নিয়ে কোভিডে মৃত তৃতীয় শিশুর শেষকৃত্য হল সীমাপুরী শ্মশানে। এখনও অবধি পরীই সব থেকে কম বয়সী, যার শেষকৃত্য এই শ্মশানে করা হয়েছে। ১২ মে সকাল ১১টা ৫৭ মিনিটে থেমে যায় ছোট্ট পরী। সে হাসপাতালে একজন বয়স্ক কোভিড রোগীরও মৃত্যু হয়েছিল সেদিন। পরী ও ওই ব্যক্তির দেহ একইসঙ্গে অ্যাম্বুলেন্সে তোলা হয়।
আগেই শ্মশানে পৌঁছে গিয়েছিলেন প্রহ্লাদ। সেখানে শেষকৃত্যের দায়িত্বে থাকা জিতেন্দ্র সিংয়ে হাতে দেহটি তুলে দেওয়া হয়। প্রথমটা খানিক হতবাকই হয়ে যান। ছোট্ট একটি ডিসপোজাল ব্যাগ এগিয়ে দেওয়া হয় তাঁর দিকে। যে মানুষটি সেই ব্যাগ এগিয়ে দেন, জিতেন্দ্র তাঁর কাছেই জানতে চান, ‘নাম?’। নীচু গলায় জবাব আসে, ‘পরী, আমার মেয়ে’।
আরও পড়ুন: এবার করোনা সংক্রমিত মৃতদেহ শ্মশানে পৌঁছে দিতে বিশেষ যান
এলাকার একটি কারখানায় কাজ করতেন প্রহ্লাদ। ৯ হাজার টাকা মাইনে। গত বছর লকডাউন ঘোষণার পর কাজ হারান। সেই থেকে ঘরে বসে। প্রহ্লাদের কথায়, তাঁরা মেয়েকে বাইরে কোথাও বের করেনি। কী করে জ্বর এল বুঝতেই পারেননি। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ছোট্ট পরী হারিয়ে গেল।