Sikkim Flood: পুজোর আগে তিস্তার গ্রাসে উপার্জনের স্বপ্ন, কবে স্বাভাবিক হবে জীবন? প্রশ্ন ব্যবসায়ীদের
Tourism Crisis: সামনেই পুজো। প্রতি বছরই হাজার হাজার বাঙালি পুজোর লম্বা ছুটিতে দার্জিলিং, সিকিমে ভিড় জমান। কিন্তু এক রাতের হড়পা বানে ভেস্তে গিয়েছে সমস্ত পরিকল্পনা। কারণ পাহাড়ে যাবেন কী করে? ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের একটা বড় অংশই যে এখন তিস্তার পেটে।
গ্যাংটক: এমনিতেই খরস্রোতা তিস্তা। মাঝেমধ্যেই ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে। কিন্তু তাই বলে এরকম? মঙ্গলবারের রাতে ফুলে-ফেঁপে ওঠে তিস্তা নদী। জলস্তর বাড়তেই নিমেষে তা বিধ্বংসী রূপ নেয়। মরার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাঁড়ায় লোনক হ্রদের ফাটল। হিমবাহ ভেঙে নেমে আসা জলের তোড়ে ফাটল ধরে লোনক হ্রদের প্রাচীরে। হুড়মুড়িয়ে পাহাড়ের গা বেয়ে নেমে আসে জল। লাগাতার বৃষ্টিতে এমনিতেই জলস্তর বাড়ছিল তিস্তার, লোনক হ্রদের জল মিশতেই তা বিধ্বংসী রূপ নেয়। গতিপথের সামনে যা কিছু আসে, সব গিলতে শুরু করে তিস্তা। বাড়িঘর থেকে রাস্তাঘাট, মানুষ-গবাদি পশু-সবই তিস্তার গ্রাসে চলে গিয়েছে।
সামনেই পুজো। প্রতি বছরই হাজার হাজার বাঙালি পুজোর লম্বা ছুটিতে দার্জিলিং, সিকিমে ভিড় জমান। কিন্তু এক রাতের হড়পা বানে ভেস্তে গিয়েছে সমস্ত পরিকল্পনা। কারণ পাহাড়ে যাবেন কী করে? ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের একটা বড় অংশই যে এখন তিস্তার পেটে। গোটা দেশের সঙ্গেই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে সিকিমের। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কত, তা এখনও আন্দাজ করা যাচ্ছে না। নিম্নচাপের কারণে ফের বৃষ্টি হতে পারে পাহাড়ে, আরও বিপদ বাড়তে পারে সিকিমের। এই ধাক্কা কাটিয়ে ওঠা যে সহজ হবে না, তা আন্দাজ করা যাচ্ছে বর্তমান পরিস্থিতি দেখেই।
শুধু রাস্তাই নয়, ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হোটেলগুলিও। যেখানে সিকিমের রাজস্বের ৮০ শতাংশই পর্যটন শিল্প থেকে আসে, সেখানে মঙ্গলবারের হড়পা বান ও ক্ষয়ক্ষতির পর একাধিক হোটেল কর্তৃপক্ষের তরফেই চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত হোটেল খোলা সম্ভব নয়। কোনও পর্যটককে স্বাগত জানানো সম্ভব নয়। এদিকে, পুজোর বুকিং তো হয়ে গিয়েছে।
পর্যটন নির্ভর অর্থনীতির সিকিমে উৎসবের মরশুম থেকেই বড় অংশের আয় হয়। এই অবস্থায় যদি ব্যবসায়ীরা হোটেল-রিসর্ট খুলতে না পারেন তাহলে তাঁদের জীবন চলবে কী ভাবে? যারা হোটেল-গাড়ি বুকিং করেছেন, তাঁরাও টাকা ফেরত চাইছেন। কিন্তু হোটেল মালিকরাই বা টাকা ফেরত দেবেন কী করে? তাঁদের আয়ের উৎস, সম্বলটুকুই যে ভেসে গিয়েছে। তারা বলছেন, পুজোর আগে তিস্তার রুদ্র রূপ ভাসিয়ে নিয়ে গেল উপার্জনের স্বপ্নটাই।