Covid Spike: ভারতের জন্যও বিপদসঙ্কেত! অস্ট্রেলিয়ায় বাড়ছে সংক্রমণ, পাল্লা দিয়ে বাড়ছে হাসপাতালে বেডের চাহিদা
Covid Spike: অস্ট্রেলিয়ান মেডিকেল অ্য়াসোসিয়েশনের তরফে খবর, বড় সংখ্যক স্বাস্থ্য কর্মী কোভিডে আক্রান্ত। তাঁরা ছুটিতে আছেন।
নয়া দিল্লি: এখনও মাস্ক না পরে দেদার হাটে বাজারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন মানুষ। প্রশ্ন করলে কেউ বলছেন, টিকার দু’ ডোজ়ই নেওয়া হয়ে গিয়েছে। কারও আবার যুক্তি, ‘ও একটু সর্দি হাঁচি হবে। পাঁচদিন ঘরে থাকলে সেরে যাবে।’ কিন্তু সত্যিই কি বিষয়টা একটা সহজ? বিশ্বের কোভিড-মিটার একবার দেখলেই বোঝা যাবে বিপদ কোথায়। অস্ট্রেলিয়ায় হু হু করে বাড়ছে সংক্রমণ। মঙ্গলবার সংক্রমণের রেকর্ড ছুঁয়েছে পৃথিবীর উন্নততম এই দেশ। আসল ধাক্কা এখানেই! চাপ বাড়ছে হাসপাতাল এবং নমুনা পরীক্ষা কেন্দ্রগুলিতে। ভারতে যে গতিতে সংক্রমণ বাড়ছে, তাতে অস্ট্রেলিয়ার মতো যদি লাফিয়ে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ে তাহলে এদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় কিন্তু বড়সড় আঘাত লাগতে পারে।
ভারতে গত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণ ১০ শতাংশ বেড়েছে
মঙ্গলবার দেশে কোভিডের দৈনিক সংক্রমণ ১০ শতাংশ বেড়েছে। কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৩৭ হাজার ৩৭৯ জন। মৃত্যু হয়েছে ১২৪ জনের। সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ১ লক্ষ ৭১ হাজার ৮৩০। প্রতিদিন যদি এই হারে সংক্রমণ বাড়ে তা হলে খুব কম সংখ্যক মানুষ হাসপাতালে ভর্তি হলেও ভারতের জনসংখ্যার নিরিখে তা মোটেই কম হবে না। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের কথা সকলেরই এখনও স্মৃতিতে টাটকা। কী ভয়ঙ্করভাবে স্বাস্থ্য পরিষেবার উপর চাপ পড়েছিল।
বাড়ছে ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যাও
উদ্বেগের বিষয় হল, ভারতে ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়তে শুরু করেছে। ইতিমধ্যে ১ হাজার ৮৯২ জন ওমিক্রন স্ট্রেনে আক্রান্ত। দিল্লি, মহারাষ্ট্রের ছবিটা ভয় ধরাচ্ছে। মহারাষ্ট্রে ওমিক্রন আক্রান্ত ৫৬৮ জন। দিল্লিতে ৩৮২ জন। দেশের ২৩টি রাজ্যে ওমিক্রন বাড়ছে পাল্লা দিয়ে।
সমস্যা কোথায় হতে পারে
চিকিৎসকদের মতে, এই অবস্থায় হাসপাতালে রোগী ভর্তির চাপ বাড়লেই পরিস্থিতি ঘুরে যেতে পারে। যে হারে সংক্রমণের গ্রাফ উঠছে, তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে হাসপাতালে শয্যার চাহিদা বাড়লে বর্তমান পরিকাঠামোয় তা জোগান দেওয়াই কার্যত অসম্ভব। সকলকে হাসপাতালে যেতে হবে এমন নয়, ঠিকই। তবে যে পরিমাণে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন তাতে নগন্য সংখ্যককেও যদি হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয় তা হলেও কিন্তু ত্রাহি ত্রাহি রব উঠবে।
অস্ট্রেলিয়ায় দ্রুত গতিতে বাড়ছে সংক্রমণ
প্রসঙ্গত, অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস-এ ২৩ হাজারের বেশি সংক্রমণ বেড়েছে। করোনা সংক্রমিত হওয়ার পর ১ হাজার ৩৪৪ জন হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। একদিনে ১৪০ জনের বেশি মানুষ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। পজিটিভিটি রেটও অনেকটাই বেড়েছে। ভিক্টোরিয়াতেও বাড়ছে সংক্রমণ। ১৪ হাজারের বেশি পজিটিভ সেখানে। ভিক্টোরিয়াতে ৫১৬ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এর মধ্যে আবার ১০৮ জনকে আইসিইউয়ে রাখা হয়েছে।
জনসংখ্যাটা ভারতের জন্য ফ্যাক্টর
অস্ট্রেলিয়ান মেডিকেল অ্য়াসোসিয়েশনের তরফে খবর, বড় সংখ্যক স্বাস্থ্য কর্মী কোভিডে আক্রান্ত। তাঁরা ছুটিতে আছেন। স্বভাবতই যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের উপর চাপ বাড়ছে। একই পরিস্থিতি ভারতেও হতেই পারে। চিকিৎসক অনির্বাণ দলুইয়ের মতে, “এখানে মৃত্যুহার বা সিভিয়ার ডিজিজের হার যদি ১ শতাংশও হয় এবং দৈনিক ১৫ হাজার যদি আক্রান্ত হন তা হলে রোজ ১৫০ জনের উপরে মানুষ মারা যাবেন। এই সংখ্যাটা খুব কম নিশ্চয়ই নয়? আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এই সংখ্যক মানুষকে পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে যথেষ্ট সমস্যাতেও পড়তে পারে। সুতরাং কম বিপদ বা মানুষ কম মারা যাচ্ছেন ভেবে নিশ্চিন্ত হওয়ার কোনও জায়গা নেই। কারণ, আমাদের এখানে জনসংখ্যাটাই একটা বড় ফ্যাক্টর।”
আরও পড়ুন: ‘ভ্যাকসিন নেওয়ার পর ১৫ দিন হাসপাতালে ছিলাম’! এরকম হওয়ার সম্ভাবনা কতটা, কী বলছেন চিকিৎসকরা