Ram Lalla Surya Tilak: রামকে বিজ্ঞানীদের উপহার ‘সূর্য তিলক’! কীভাবে তৈরি হল এই যন্ত্র?

Ram Lalla Surya Tilak: প্রাচীনকাল থেকেই ভারতে ধর্মীয় খোঁজ থেকেই অনেক বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার হয়েছ। একুশ শতকেও সেই ঐতিহ্য বজায় রয়েছে। বিজ্ঞান ব্যবহার করে অযোধ্যার রাম মন্দিরের গর্ভগৃহে উপবিষ্ট রামলালার মূর্তিকে, 'সূর্য তিলক' উপহার দিলেন ভারতীয় বিজ্ঞানীরা। কী এই সূর্য তিলক?

Ram Lalla Surya Tilak: রামকে বিজ্ঞানীদের উপহার 'সূর্য তিলক'! কীভাবে তৈরি হল এই যন্ত্র?
সূর্য তিলকে হবে রামলালার অভিষেক Image Credit source: ANI
Follow Us:
| Updated on: Jan 21, 2024 | 2:58 PM

নয়া দিল্লি: পশ্চিনী দুনিয়ায় বরাবরই ধর্মের সঙ্গে জিরাফের, অর্থাৎ, বিজ্ঞানের দ্বন্দ্ব রয়েছে। মানুষের জন্ম ভগবানের হাতে, না,বিবর্তনের মাধ্যমে, তা নিয়ে তর্ক রয়েছে। ভারতে অবশ্য একেবারে সৃষ্টির শুরু থেকেই ধর্ম আর বিজ্ঞান, একেবারে হাত ধরাধরি করে চলেছে। প্রাচীনকাল থেকেই ভারতে ধর্মীয় খোঁজ থেকেই অনেক বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার হয়েছ। একুশ শতকেও সেই ঐতিহ্য বজায় রয়েছে। মহাকাশযান উৎক্ষেপণের আগে, বালাজি মন্দিরে পুজো দেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা। একইভাবে, বিজ্ঞান ব্যবহার করে অযোধ্যার রাম মন্দিরের গর্ভগৃহে উপবিষ্ট রামলালার মূর্তিকে, ‘সূর্য তিলক’ উপহার দিলেন ভারতীয় বিজ্ঞানীরা। কী এই সূর্য তিলক? প্রতি রাম নবমীর দিন দুপুরে, সূর্যের আলোর একটি রশ্মি সরাসরি রামলালার মূর্তির কপালে এসে পড়বে।

তবে, এখনই এই সূর্য তিলক প্রতীয়মান হবে না। কারণ, মন্দিরটির শুধুমাত্র গর্ভগৃহ নির্মাণ সম্পূর্ণ হয়েছে। রুরকির সেন্ট্রাল বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ডিরেক্টর ড. প্রদীপ কুমার রমনচারলা জানিয়েছেন, ‘পূর্ণ মন্দিরটি নির্মাণ হলে, সূর্য তিলক প্রক্রিয়া সম্পূর্ণরূপে কার্যকর হবে। বর্তমানে শুধুমাত্র প্রথম তলা পর্যন্ত কাঠামো তৈরি করা হয়েছে। সূর্য তিলকের জন্য গর্ভগৃহে এবং নীচতলায় যে সমস্ত সরঞ্জাম স্থাপন করার কথা ছিল, তার কাজ শেষ হয়েছে। পুরো মন্দিরটি তৈরি হয়ে গেলে, প্রতি রামনবমীর দিন বেলা ১২টায় ৬ মিনিটের জন্য সূর্যের একটি রশ্মি রাম মূর্তির কপালে এসে পড়বে। একেবারে, মন্দিরের তৃতীয় তল থেকে সূর্যের রশ্মি বিভিন্ন আয়না এবং লেন্সের মধ্য দিয়ে গর্ভগৃহে এসে পৌঁছবে। আর এইভাবেই চারিদিক ঢাকা গর্ভগৃহে এসে পড়বে সূর্যের আলো।

তবে, সূর্য তিলক প্রক্রিয়াটি যাতে ঠিকভাবে হয়, তা নিশ্চিত করাটা বিজ্ঞানী এবং ইঞ্জিনিয়ারদের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। কারণ, হিন্দু ধর্মে তিথি নির্ধারণ করা হয় চন্দ্র ক্যালেন্ডার অনুযায়ী। রাম নবমীর দিনও স্থির হয়ে চন্দ্র ক্যালেন্ডার মেনেই। কিন্তু, ওই দিন সূর্য প্রতি বছর এক অবস্থানে থাকে না। ১৯ বছর পর পর, কোনও চন্দ্রতিথিতে আগের অবস্থানে ফিরে আসে সূর্য। মাঝের বছরগুলিতে থাকে অন্য অবস্থানে। তাই চন্দ্র ক্যালেন্ডার এবং সূর্য ক্যালেন্ডারের মধ্যে সামঞ্জস্য আনাটাই প্রধান সমস্যা ছিল বিজ্ঞানীদের জন্য। এর জন্য, ১৯টি বিশেষ গিয়ার স্থাপন করা হচ্ছে। এই গিয়ারগুলির সাহায্যে, প্রতি বছর রাম নবমীর দিন সূর্যের অবস্থানের সঙ্গে সঙ্গে বদলে যাবে লেন্স এবং আয়নাগুলির অবস্থানও।

তবে, এই গিয়ারগুলি স্বয়ক্রিয়ভাবে চলার জন্য কোনও বিদ্যুৎ বা ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়নি। বদলে, ব্যবহার করা হচ্ছে সৌরশক্তি। তবে, প্রথমে রাম মন্দিরের সমস্ত বিদ্যুতের চাহিদা সৌর শক্তি দিয়ে মেটানোর পরিকল্পনা করা হলেও, শেষ পর্যন্ত সেই পরিকল্পনা বাতিল করতে হয়েছে। মন্দির নির্মাণ কমিটির চেয়ারপার্সন, নৃপেন্দ্র মিশ্র জানিয়েছেন, ‘বানর সৈন্যের’ উপস্থিতির কারণেই এই সৌর শক্তি প্রকল্পটি বাদ দিতে হয়েছে। গিয়ারগুলি তৈরিতে লোহার বদলে পিতল ব্যবহার করা হয়েছে। পেরিস্কোপের সদৃশ এই যন্ত্রটির নকশা করেছে বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব অ্যাস্ট্রোফিজিক্স। আর, প্রযুক্তিগত সহায়তা দিয়েছে অপটিকা নামে বেঙ্গালুরুর এক সংস্থা। এই সংস্থা, লেন্স এবং ব্রাস টিউব তৈরি করে থাকে। তারাই, লেন্স, আয়না এবং গিয়ারগুলি তৈরি করেছে। পুরো প্রক্রিয়ার তত্ত্বাবধানে ছিল সিবিআরআই। এই কেন্দ্রীয় সংস্থাটি রাম মন্দিরের নকশাতেও সাহায্য করেছে।