Bihar: পরার নেই গরম জামা, স্কুলে এসে ঠান্ডায় মরতে হল ১০ বছরের শিশুকে
Bihar 10-year-old child dies allegedly of cold: গোটা উত্তর ভারত জুড়ে তীব্র ঠান্ডা পড়েছে। আর তারই মধ্যে এক মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে গেল বিহারের পূর্ব চম্পারণ জেলায়। বুধবার (১০ জানুয়ারি) সকালে জেলার চাকিয়া আদর্শ সরকারি স্কুলে প্রার্থনা সঙ্গীত চলাকালীন জ্ঞান হারিয়েছিল ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্র। পরে হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
পটনা: চাঁদ-সূর্য নিয়ে গবেষণা করতে মহাকাশযান পাঠাচ্ছে ভারত। বিশ্বের তৃতীয় সর্ববৃহৎ অর্থনীতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে চাইছে। অথচ, আজও ভারতে ঠান্ডায় মরতে হচ্ছে শিশুদের। গোটা উত্তর ভারত জুড়ে তীব্র ঠান্ডা পড়েছে। আর তারই মধ্যে এক মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে গেল বিহারের পূর্ব চম্পারণ জেলায়। বুধবার (১০ জানুয়ারি) সকালে জেলার চাকিয়া আদর্শ সরকারি স্কুলে প্রার্থনা সঙ্গীত চলাকালীন জ্ঞান হারিয়েছিল ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্র। পরে হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। প্রবল ঠান্ডার মধ্যে, তার গায়ে কোনও গরম পোশাক ছিল না। ঠান্ডার জেরেই তার মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ।
মৃত শিশুটির নাম মণীষ কুমার, বয়স ১০ বছর। তার বাবা রাজেশ রাম চাকিয়ার জিরাত সুগার মিলের কর্মী। কারখানার কাছাকাছিই থাকে তারা। প্রতিদিনের মতো বুধবারও সকালে তীব্র ঠান্ডার মধ্যে সে স্কুলে গিয়েছিল। প্রার্থনা চলাকালীন হঠাৎ সংজ্ঞা হারিয়েছিল সে। শিক্ষকরা তাঁকে সঙ্গে সঙ্গে মহকুমা হাসপতালে নিয়ে গিয়েছিলেন। খবর দেওয়া হয় মণীষের বাড়িতে। কিন্তু, তার পরিবারের লোকজন হাসপাতালে এসে পৌঁছনোর আগেই তার মৃত্যু হয়। পূর্ব চম্পারণের জেলা শিক্ষা আধিকারিক সঞ্জয় কুমার বলেছেন, “শিশুটি খালি পেটে, কোনও গরম জামা না পরেই স্কুলে এসেছিল। এর জন্যই প্রার্থনা চলাকালীন সে জ্ঞান হারিয়েছিল বলে মনে হচ্ছে।” বস্তুত, পরিবারের দারিদ্রের কারণে, মনীষের স্কুলে পরে আসার মতো কোনও গরম জামা ছিল না বলে জানা গিয়েছে।
এদিকে, শিশুটির মৃত্যুর পর, মহকুমা হাসপাতালে তার পরিবারের লোকজন ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ। মণীষের দাদা চন্দন বলেছে, “আজ সকালে মণীষ স্কুলে গিয়েছিল। একটু পরেই এক ছাত্রকে নিয়ে একজন শিক্ষক আমাদের বাড়িতে এসেছিলেন। তারা জানায়, মনীষ অসুস্থ হয়ে পড়েছে এবং ওকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কিন্তু, হাসপাতালে গিয়ে আমরা ওকে খুঁজে পাইনি। পরে শুনলাম, ও আর বেঁচে নেই।” এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে হাসপাতালে আসে পুলিশ। মনীষের দেহ তারা ময়না তদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। ঠান্ডাতেই তার মৃত্যু হয়েছে, নাকি অন্য কোনও কারণে তাকে চলে যেতে হল, ময়নাতদন্তের রিপোর্টেই তা স্পষ্ট হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। চাকিয়া থানার ইনচার্জ ধনঞ্জয় কুমার বলেছেন, “আমরা দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছি। তবে, নিহত ছাত্রের পরিবারের পক্ষ থেকে এখনও কারও বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ করা হয়নি।”
তবে, দারিদ্রের কারণে মণীষের গরম জামা ছিল না বলে মানতে চাননি জেলা শিক্ষা আধিকারিক সঞ্জয় কুমার। তাঁর দাবি, বুধবার সকালে স্কুলে আসা নিয়ে বাবা-মায়ের সঙ্গে ঝামেলা করেছিল মণীষ। বাবা-মা তাকে মারধর করেছিল বলেই, রাগারাগি করে সে না খেয়ে এবং কোনও গরম জামা না পরে স্কুলে চলে এসেছিল। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে এই বিষয়ে আরও জানা যাবে বলে জানিয়েছেন তিনি। তিনি আরো জানিয়েছেন, এই বিষয়ে ব্লকের শিক্ষা আধিকারিকের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করেছেন তিনি। তিনি রো বলেছেন, শৈত্যপ্রবাহের জেরে কোনও শিক্ষার্থী যাতে অসুস্থ না হয়ে পড়ে, তা শিক্ষকদেরই দেখতে হবে। এর জন্য জেলার সকল স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের বলা হয়েছে, ক্লাস টিচারদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করতে।