Supreme Court on Dishonour Killings: স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরেও জাতপাতের বেড়াজাল থেকে মুক্তি মেলেনি: সুপ্রিম কোর্ট
Supreme Court: জাতপাতের নামে সংঘটিত জঘন্য অপরাধগুলির বিষয়ে সুশীল সমাজের প্রতিক্রিয়া এবং "দৃঢ় প্রতিবাদ" জানানোর উপযুক্ত সময় এসেছে বলে মনে করছে সুপ্রিম কোর্ট।
নয়া দিল্লি : স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরে দেশ জাতপাতের বেড়াজাল ছিড়ে বেরিয়ে আসতে পারেনি। এমনটাই মনে করছে সুপ্রিম কোর্ট। আজ শীর্ষ আদালত (Supreme Court) জানিয়েছে, জাতপাতের কারণে হিংসার ঘটনাগুলি দেখেই বোঝা যায়, স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরেও দেশ থেকে জাতপাত নির্মূল করা যায়নি। জাতপাতের নামে সংঘটিত জঘন্য অপরাধগুলির বিষয়ে সুশীল সমাজের প্রতিক্রিয়া এবং “দৃঢ় প্রতিবাদ” জানানোর উপযুক্ত সময় এসেছে বলে মনে করছে সুপ্রিম কোর্ট।
আজ শীর্ষ আদালত ১৯৯১ সালের উত্তর প্রদেশের জাতপাতের জন্য হত্যা সংক্রান্ত মামলায় রায় জানাচ্ছিল। উত্তর প্রদেশের ওই ঘটনায় এক জন মহিলা সহ তিন জন নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছিল। রায় দানের সময় সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, এই ধরনের জাতপাতের কারণে হত্যা বন্ধ করতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষকে এর আগে বেশ কয়েকটি নির্দেশ দিয়েছিল। আর দেরি না করে ওই নির্দেশাবলী কার্যকর করা উচিত বলে মনে করছে শীর্ষ আদালত।
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এল নাগেশ্বর রাওয়ের নেতৃত্বে একটি বেঞ্চ আরও বলেছে, বিচার প্রক্রিয়া যাতে কলঙ্কিত না হয় এবং “সত্য যাতে কোনও দুর্ঘটনায় পরিণত হয়”, না নিশ্চিত করতে এবং সাক্ষীদের সুরক্ষা দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকারের একটি নির্দিষ্ট ভূমিকা থাকে। অন্তত ক্ষমতায় থাকা ব্যক্তিদের সঙ্গে জড়িত সংবেদনশীল মামলাগুলিতে এই ব্যবস্থা শুরু করার কথা বলেছে সুপ্রিম কোর্ট। বিশেষ করে যে মামলাগুলিতে রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা থাকতে পারে কিংবা অর্থ বল এবং বাহু বলের প্রয়োগ করা হতে পারে, সেগুলিতে নজর রাখতে বলা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্ট আজ জানিয়েছে, ভারতীয় সমাজে আজও ধর্মান্ধতা রয়েছে। আর এই ধর্মান্ধতা সংবিধানে সকল নাগরিকের জন্য সমতার যে উদ্দেশ্যের কথা বলা হয়েছে, তাকে বাধাগ্রস্ত করে।
আজ সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এল নাগেশ্বর রাও ছাড়াও বেঞ্চে ছিলেন বিচারপতি সঞ্জীব খন্না এবং বিচারপতি বি আর গভৈ। বিচারপতিরা ওই মামলার রায় দেওয়ার সময় জানিয়েছেন, “দুই যুবক এবং একজন মহিলাকে প্রায় ১২ ঘণ্টা ধরে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়েছিল এবং জাত-ভিত্তিক সামাজিক নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগে অভিযুক্তদের দ্বারা হত্যা করা হয়েছিল। দেশে জাতপাতের ভিত্তিতে হিংসার এই ঘটনাগুলি প্রমাণ করে যে স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরেও জাতপাত নির্মূল করা হয়নি।”
এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায়কে বহাল রেখে সুপ্রিম কোর্টও এই মামলায় ২৩ অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করে। পরিচয়ে অস্পষ্টতার কারণে তিনজনকে বেকসুর খালাস করা হয়েছে। মামলার রায়দানের সময়, সাক্ষীদের সুরক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করার কথাও উল্লেখ করে সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ।