Delhi High Court : ধর্ষিতাকে বিয়ে করলেই অপরাধ চাপা পড়ে না : দিল্লি হাই কোর্ট

Delhi High Court : ধর্ষণের পর নির্যাতিতাকে বিয়ে করলেও ধর্ষণের অপরাধ কাঁধ থেকে ঝেড়ে ফেলা যায় না। আইনের চোখে সে দোষীই। ধর্ষণে অভিযুক্ত যুবকের জামিনের আবেদনের ভিত্তিতে এক মামলার শুনানিতে এমনটাই পর্যবেক্ষণ দিল্লি হাই কোর্টের।

Delhi High Court : ধর্ষিতাকে বিয়ে করলেই অপরাধ চাপা পড়ে না : দিল্লি হাই কোর্ট
ফাইল ছবি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 24, 2022 | 5:56 PM

নয়া দিল্লি : ধর্ষণের পর নির্যাতিতাকে বিয়ে করলেও ধর্ষণের অপরাধ কাঁধ থেকে ঝেড়ে ফেলা যায় না। আইনের চোখে সে দোষীই। ধর্ষণে অভিযুক্ত যুবকের জামিনের আবেদনের ভিত্তিতে এক মামলার শুনানিতে এমনটাই পর্যবেক্ষণ দিল্লি হাই কোর্টের। আদালত জানিয়েছে, যৌন নির্যাতনের পর নির্যাতিতা ও অভিযুক্তের মধ্যে বিয়ে হলে বা তাদের কোনও সন্তানের জন্ম হলে তাতে দোষমুক্ত হয় না অভিযুক্ত।

২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে নির্যাতিতা নাবালিকা নিখোঁজ হয়। তার বয়স তখন ১৫ বছরের কম। নিখোঁজ হওয়ার দু’ বছর পর অভিযুক্তের বাড়ি থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। সেই সময় নাবালিকা ৮ মাসের সন্তানের মা। যুবকের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ২০১৯ সালে সে নাবালিকাকে অপহরণ করে তাকে ধর্ষণ করে। তারপর একটি মন্দিরে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। এক্ষেত্রে উল্লেখ্য, এই গোটা ঘটনার সময় মেয়েটি ছিল নাবালিকা। এই বিষয়টি উদ্ধৃত করেই বিচারপতি অনুপ কুমার মেন্দিরাত্তা অভিযুক্তের জামিনের আবেদন খারিজ করে দেন। তিনি বলেন, ‘নাবালিকাদের লোভ দেখিয়ে এই ধরনের শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের এই ঘটনা’ সাধারণ নিয়মে বিবেচনা করা যেতে পারে না। এক্ষেত্রে ধর্ষণ আইনের কথা মনে করিয়ে দেন বিচারপতি। ধর্ষণ আইনে যৌন সঙ্গমের ক্ষেত্রে নাবালিকার সম্মতিকে স্বীকৃতি দেওয়া হয় না। কোনও নাবালিকার সঙ্গে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হলে তা ধর্ষণ বলেই বিবেচিত হবে।

বিচারপতি অনুপ কুমার বলেছেন, ভারতীয় দণ্ডবিধি অনুযায়ী, ‘অপহরণকারীর প্রতি নাবালিকার আকর্ষণকেও ঢাল হিসেবে খাড়া করানো যাবে না’। অভিযুক্তের জামিনের আবেদনের এই শুনানিতে তিনি বলেছেন, ‘আবেদনকারী দাবি করেছে মন্দিরে নির্যাতিতার সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছে। তার মানে এই নয় যে সে নির্দোষ কারণ এই ঘটনার সময় নির্যাতিতা একজন নাবালিকা ছিল। তার বয়স ছিল ১৫ বছরের কম।’ আদালতের নির্দেশে বলা হয়েছে, ‘এর অন্যতম কারণ এই ধরনের ঘটনায় কোনও নাবালিকার সম্মতি অযৌক্তিক ও আইনের কাছে অপ্রয়োজনীয়।’

এক্ষেত্রে আদালত বাল্যবিবাহ আইনেরও উদাহরণ তুলে ধরেছে। যেহেতু বিবাহের সময় নির্যাতিতা একজন নাবালিকা, তাই আবেদনকারী এই আইনের বিধান লঙ্ঘন করেছে। আদালত আরও জানিয়েছে যে, নাবালিকা স্ত্রী-র সঙ্গে যৌন সঙ্গম ধর্ষণ হিসেবেই বিবেচিত হয়। এবং এটি একটি ঘৃণ্য অপরাধ। এতে নাবালিকা স্ত্রী-র সম্মতি অপ্রয়োজনী ও বিবেচনা করে হয় না। ফলে আবেদনকারীর এহেন ক্রিয়া পকসো আইনের মধ্যে পড়ে। এই সবদিক বিবেচনা করে দিল্লি হাই কোর্ট আবেদনকারীর জামিন খারিজ করে দিয়েছে।