Manipur Violence: অন্ধকার থাকতেই হামলা, ফের অগ্নিগর্ভ মণিপুর! গত ২৪ ঘণ্টায় আরও লম্বা মৃত্যু-মিছিল
Fresh violence in Manipur: শনিবার, বিষ্ণুপুর-চুরাচাঁদপুর সীমান্তে দিনভর চলল গোলাগুলি, মর্টার, গ্রেনেড নিক্ষেপ। নতুন করে হিংসায় জ্বলছে মণিপুর। কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপর দায় চাপালেন বিজেপি বিধায়ক।
ইম্ফল: বাদল অধিবেশনের শুরু থেকে মণিপুরের হিংসা নিয়ে আলোচনার দাবিতে উত্তাল সংসদের দুই কক্ষ। কিন্তু এখনও পর্যন্ত, মণিপুরের হিংসা থামার কোনও ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে না। শনিবার (৫ অগস্ট) ফের নতুন করে বড় মাপের সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ল মেইতেই অধ্যুষিত বিষ্ণুপুর এবং কুকি অধ্যুষিত চুরাচাঁদপুর সীমান্ত এলাকায়। দিনভর হামলা-পাল্টা হামলার জেরে, গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ছয়জন নিহত হয়েছেন এবং প্রায় ১৬ জন আহত হয়েছে। এদিকে, দুষ্কৃতীদের ধরতে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এই এলাকায় চিরুনি তল্লাশি শুরু করা হয়েছে। সেনার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর এক বিদ্রোহী যোদ্ধাকে গ্রেফতার করা হয়। নতুন করে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায়, ইম্ফল পূর্ব এবং ইম্ফল পশ্চিম জেলা-সহ, রাজ্যের কোথাও কোনও কারফিউ শিথিল করা হবে না বলে জানিয়েছে মণিপুর পুলিশ।
গত সপ্তাহ দুয়েক ধরে মণিপুরের পরিস্থিতি অনেকটাই শান্ত হয়ে এসেছিল। ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরছিল উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে। কিন্তু, শনিবার সকাল থেকেই ফের বিষ্ণুপুর-চুরাচাঁদপুর সীমান্ত এলাকার বেশ কয়েকটি জায়গায় মর্টার এবং গ্রেনেড হামলা শুরু হয়। দিনভর, মেইতেই এবং কুকি দুই পক্ষের মধ্যে গুলি বিনিময় হয়েছে বলে জানা গিয়েছ। হিংসার শুরু হয়, ভোরের আলো ফোটার আগেই। সূত্রের খবর, বিষ্ণুপুর জেলার কোয়াকতা গ্রামে অন্ধকার থাকতেই হামলা চালানো হয়। এক পরিবারের বাবা-ছেলে-সহ মোট তিন গ্রামবাসীর মৃত্যু হয়। পুলিশ জানিয়েছে, প্রথমে তাদের ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়, তারপর খুব কাছ থেকে গুলি করা হয়েছিল। তাঁরা সকলেই ছিলেন নিরস্ত্র। হিংসা ছড়িয়ে পড়ার পর, এঁরা সকলেই গ্রাম ছেড়ে ত্রাণ শিবিরে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন। কিন্তু, শুক্রবার রাতে গ্রাম পাহারা দিতে ফিরে এসেছিলেন।
এই হত্যাকাণ্ডের খবর ছড়িয়ে পড়তেই ‘প্রতিশোধ’ নেওয়ার তোড়জোড় শুরু হয়ে গিয়েছিল। কোয়াকতার দুই পার্শ্ববর্তী গ্রাম, ফুজাং এবং সোংডোতে হামলা চালায় সশস্ত্র দুষ্কৃতীরা। দুটি গ্রামই চুরাচাঁদপুর জেলার অন্তর্গত। গুলি ছোড়ার পাশপাশি মর্টার শেল এবং গ্রেনেড ছোড়া শুরু হয়। এই পাল্টা আক্রমণে দুই জন নিহত এবং আরও কয়েকজন আহত হন। এরপরই দুই জেলার সীমান্তবর্তী এলাকার বিভিন্ন জায়গায় একের পর এক হামলা শুরু হয়। বিষ্ণুপুর জেলার তেরখাংসাংবিতে দুষ্কৃতীদের হামলায় আরও একজন নিহত হন। এক পুলিশ কমান্ডো-সহ আরও তিনজন গুলিবিদ্ধ হন। ইম্ফল পূর্ব জেলার সানসাবি এবং থামনাপোকপি গ্রামে হামলা চালায় অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীরা। যদিও কেউ হতাহত হননি। ইম্ফল পশ্চিম জেলার ল্যাংগোলে বেশ কয়েকটি বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়। ইম্ফল শহরে রাস্তায় নেমে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখান সাধারণ মানুষ।
শনিবারের এই হিংসার দায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপর চাপিয়েছেন মণিপুরের বিজেপি বিধায়ক তথা মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের জামাই, রাজকুমার ইমো সিং। তাঁর দাবি, বিষ্ণুপুর জেলায় হামলার ঘটনার ক্ষেত্রে নিরাপত্তাগত ত্রুটি ছিল। আধাসামরিক বাহিনীর জওয়ানরা তাঁদের কর্তব্যে অবহেলা করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। সেনার পক্ষ থেকে এই অভিযোগের কোনও জবাব দেওয়া হয়নি।