Narendra Modi: নিন্দুকদের মুখে ছাই দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় রাজ নমোর
Narendra Modi: এ দেশে সোশ্যাল মিডিয়ায় সবথেকে জনপ্রিয় কোন নেতা, তা আর আলাদা করে বলার অপেক্ষা রাখে না। নরেন্দ্র মোদীই। কিন্তু আপনি কি জানেন, টুইটারে ভারতে দ্বিতীয় সবথেকে জনপ্রিয় রাজনীতিক কে? কী ভাবছেন? রাহুল গান্ধী? নাহ, একেবারেই নয়।
নয়া দিল্লি: মোদী হ্যায় তো মুমকিন হ্যায়। বিজেপির অন্দরে কথাটা ভীষণভাবে প্রচলিত। আর বিষয়টি যদি নমোর জনপ্রিয়তা নিয়ে হয়, তাহলে তো অবশ্যই। দেশে তো বটেই, বিদেশের মাটিতেও সমান জনপ্রিয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মার্কিন মুলুকের রাজপথেও তাই মোদী মোদী স্লোগান উঠতে দেখা যায়। বিশ্বের তাবড় রাষ্ট্রনেতাদের পিছনে ফেলে একাধিকবার জনপ্রিয়তার শীর্ষে উঠে এসেছেন নমো। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সোশ্যাল মিডিয়ায় ফলোয়ার দেখলেই তার কিছুটা আঁচ পাওয়া যায়।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ফলোয়ার্স সংখ্যার নিরিখে বিশ্বের সমস্ত রাষ্ট্রনেতাদের মধ্যে শীর্ষে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। উদাহরণ হিসেবে টুইটার হ্যান্ডেলই দেখা যাক। নমোর টুইটার ফলোয়ার সংখ্যা ৯ কোটি ৮০ লাখেরও বেশি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের টুইটার ফলোয়ার সেখানে ৩ কোটি ৭০ লাখ। পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায় নমোর জনপ্রিয়তা কোন মাত্রায়। সুতরাং, এ দেশে সোশ্যাল মিডিয়ায় সবথেকে জনপ্রিয় কোন নেতা, তা আর আলাদা করে বলার অপেক্ষা রাখে না। নরেন্দ্র মোদীই।
কিন্তু আপনি কি জানেন, টুইটারে ভারতে দ্বিতীয় সবথেকে জনপ্রিয় রাজনীতিক কে? কী ভাবছেন? রাহুল গান্ধী? নাহ, একেবারেই নয়। টুইটারে মোদীর পর ভারতীয় রাজনীতিকদের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বাধিক ফলোয়ার রয়েছে অমিত শাহর। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। ৩ কোটি ৩০ লাখ টুইটার ফলোয়ার। তৃতীয়? এবার নিশ্চয়ই রাহুল গান্ধী, তাই ভাবছেন তো? নাহ, তাও নয়। তালিকায় রাহুল গান্ধী রয়েছেন অনেক পরে। অমিত শাহর পর টুইটারে তৃতীয় জনপ্রিয় ভারতীয় রাজনীতিক অরবিন্দ কেজরীবাল। ২ কোটি ৭০ লাখ ফলোয়ার। চতুর্থ স্থানে রয়েছেন উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। ফলোয়ার্স সংখ্যা ২ কোটি ৫০ লাখ। তারপর পঞ্চম স্থানে রয়েছেন রাহুল। তাঁর টুইটারে ফলোয়ার সংখ্যা ২ কোটি ৪০ লাখ।
শুধু টুইটারের হিসেবেই মোদীর ফলোয়ার্স সংখ্যার ধারেকাছে নেই রাহুল। ৯ কোটি ৮০ লাখ বনাম ২ কোটি ৪০ লাখ। ব্যবধান ৭ কোটি ৪০ লাখ। এ তো গেল শুধু টুইটারের হিসেব। এবার দেখা যাক ইউটিউব চ্য়ানেলের হিসেব। সেখানেও একতরফাভাবে এগিয়ে নমো। ইউটিউবে প্রধানমন্ত্রী নমোর ১ কোটি ৬০ লাখ ফলোয়ার। রাহুলের মাত্র ২৬ লাখ। ইনস্টাগ্রামে? সেখানেও নমোর জনপ্রিয়তার ধারেকাছে ঘেঁষতে পারেননি রাহুল। ইনস্টায় মোদীর ফলোয়ার ৭ কোটি ৭০ লাখ। রাহুলের সেখানে এক কোটিও হয়ে ওঠেনি। মাত্র ৪০ লাখ। ফেসবুকেও নমোর ফলোয়ার্স ৪ কোটি ৮০ লাখ। সেখানে রাহুলের ৬৬ লাখ।
টুইটার হোক, ইউটিউব হোক, ইনস্টাগ্রাম হোক বা ফেসবুক… প্রতিটি সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মেই একতরফাভাবে এগিয়ে নমো। উত্তর প্রদেশের গ্রামাঞ্চলে একটি প্রচলিত কথা রয়েছে, কিউ পড়ে হো চক্কর মে, কোই নেহি হ্যায় টক্কর মে… বাংলা তর্জমা করলে মানে হয়, যখন কেউ অপ্রতিদ্বন্দ্বী, তখন কেন খামোখা প্রতিযোগিতায় নামার চেষ্টা! উত্তর প্রদেশের গ্রামাঞ্চলের এই প্রচলিত প্রবাদটি হয়ত কংগ্রেসের কানে এতদিনে পৌঁছয়নি।
একদিকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অন্যদিকে বিরোধী শিবিরের সবচেয়ে বড় মুখ রাহুল গান্ধী। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ায় জনপ্রিয়তার নিরিখে ফারাক বিস্তর। শুধু ফলোয়ার্স সংখ্যাই নয়, দুই রাজনেতার সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট বা ভিডিয়োগুলির ভিউজ়, লাইক বা রিটুইটের হিসেবেও একই প্রতিফলন দেখা যাবে।
অথচ কংগ্রেসের সোশ্যাল মিডিয়া টিম এটা বিশ্বাস করাতে উঠে পড়ে লেগেছে, যে মোদীর থেকে রাহুল ইউটিউবে অনেক বেশি লোক টানেন। কংগ্রেস বিষয়টি এমনভাবে উপস্থাপনা শুরু করেছে, যে একটি সর্বভারতীয় সংবাদপত্র তো এ নিয়ে প্রতিবেদনও প্রকাশ করে ফেলেছে। বোঝানোর চেষ্টা চলছে যে মোদীর থেকে রাহুলের ফলোয়ার্স সংখ্যা কম থাকলেও, রাহুলের ভিডিয়ো বেশি করে মানুষকে টানছে, সেই ভিডিয়োগুলিতে মানুষ বেশি সময় থাকছে। মোদীর জনপ্রিয়তা যেখানে বিশ্বের তাবড় রাষ্ট্রনেতাদের টেক্কা দিচ্ছে, তখন কংগ্রেসের এই দাবি বিশ্বাস করে নেওয়া একটু কঠিন তো বটেই। কংগ্রেসের দাবি, রাহুলের ভিডিয়ো গড়ে ৩ লাখ ৪৩ হাজার ভিউ পাচ্ছে। আর সেখানে মোদীর ভিডিয়োয় নাকি গড়ে ভিউ হচ্ছে ৫৬ হাজার। রাহুলের সৈন্য-সামন্তরা আরও দাবি করছেন, কংগ্রেস সাংসদের ভিডিয়োয় গড়ে ১৭০০ কমেন্ট আসে, আর মোদীর ভিডিয়োয় নাকি গড়ে কমেন্ট আসে ১৫০টিরও কম।
ব্যাপারটা কী? তাহলে কি কংগ্রেস মিথ্যা দাবি করছে? নাকি সত্যিই মোদীর থেকে রাহুলের ভিডিয়ো লোকে বেশি দেখছে? বিষয়টি একটু খোলসা করা যাক। এখানে একটি সূক্ষ্ম চাল রয়েছে। কংগ্রেস বলছে, ‘অ্যাভারেজ ভিউজ় পার ভিডিয়ো’-র কথা। অর্থাৎ, ভিডিয়োগুলির গড় ভিউ। এখন যাঁরা সোশ্যাল মিডিয়া সম্পর্কে ওয়াকিবহাল, সোশ্যাল মিডিয়ায় হিসেব নিকেশ কীভাবে হয় তা জানেন, তাঁরা বিলক্ষণ বোঝেন ‘অ্যাভারেজ ভিউজ় পার ভিডিয়ো’ একটি গ্রহণযোগ্য মাপকাঠি বলা যায় না। কারণ, এক্ষেত্রে গড় হিসেব নির্ভর করে চ্যানেলে কতগুলি ভিডিয়ো আপলোড হয়েছে তার উপর। ইউটিউবে পরিসংখ্যান অনুযায়ী বাস্তব তথ্য হল,নরেন্দ্র মোদীর ভিডিয়োয় ৩০০ কোটি ভিউ রয়েছে। আর সেখানে রাহুল গান্ধীর ভিডিয়োয় ভিউ রয়েছে ৪০ কোটি। এটাই হল বাস্তব চিত্র।
তাছাড়া যদি শুধু চলতি বছরের হিসেব ধরা হয়, তাহলেও ইউটিউবে মোদীর জনপ্রিয়তার ধারেকাছে নেই রাহুল। শুধু এই বছরেই ইউটিউবে নমোর ভিডিয়োয় ভিউ রয়েছে ৭৬ কোটি। সেখানে রাহুল গান্ধীর ২৫ কোটি। ব্যবধান তিন ভাগের এক ভাগেরও কম। তারপরও কংগ্রেস শিবির এই তাঁদের পছন্দমতো মেট্রিক ‘অ্যাভারেজ ভিউজ় পার ভিডিয়ো’ দেখিয়ে লম্ফঝম্প করে যাচ্ছে। কিন্তু বাস্তব চিত্র বলছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় জনপ্রিয়তায় মোদীর ধারেকাছেও কোথাও নেই রাহুল। দূরবিন দিয়ে খোঁজার জোগাড়।
কংগ্রেস আবার আজকাল অভিযোগ করছে ইভিএম নিয়ে। লোকসভায় হারের কারণ হিসেবে ইভিএমে কারচুপির তত্ত্ব তুলে ধরছে তারা। কিন্তু এই অভ্যেস তাদের নতুন নয়। জুতসই কিছু না হলেই সেখানে কিছু না কিছু অভিযোগ তুলে ধরার চেষ্টা। যেমন অতীতে বিভিন্ন স্যোশাল মিডিয়া প্লাটফর্মও পক্ষপাতদুষ্ট কাজ করছে বলে অভিযোগ তুলেছে কংগ্রেস। বেশিদিন আগের কথা নয়। এ বছরের মার্চেই ইউটিউবের কাছে চিঠি পাঠিয়েছিল কংগ্রেস। তাদের বক্তব্য ছিল, রাহুলের কিছু ভিডিয়ো নাকি কোনও এক বিশেষ উপায়ে চেপে দেওয়া হচ্ছে, ফলে সেগুলিতে ঠিকঠাক ভিউ আসছে না।
উনিশের লোকসভা ভোটের আগেও টুইটারের উপর ক্ষোভ প্রকাশ করেছিল কংগ্রেস। বক্তব্য ছিল, রাহুলের টুইটার হ্যান্ডেলে নাকি অতীতের কয়েক মাসে যেভাবে নতুন ফলোয়ার্স আসছিল, হঠাৎ করে তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে।