Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Alapan Bandyopadhyay: হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণে রাজনীতির রঙ! আলাপন মামলায় সুপ্রিম কোর্টে প্রশ্ন তুলল কেন্দ্র

Supreme Court: হাইকর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল কেন্দ্র। সেই মামলার শুনানিতে এ দিন হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ প্রসঙ্গে রাজনৈতিক প্রভাবের কথা উল্লেখ করলেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা।

Alapan Bandyopadhyay: হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণে রাজনীতির রঙ! আলাপন মামলায় সুপ্রিম কোর্টে প্রশ্ন তুলল কেন্দ্র
সুপ্রিম কোর্টে আলাপন মামলার শুনানি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 29, 2021 | 3:47 PM

নয়া দিল্লি : সেন্ট্রাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনাল আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের মামলা দিল্লির প্রিন্সিপ্যাল বেঞ্চে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। কলকাতা হাইকোর্ট সেই নির্দেশ খারিজ করে দেয়। এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় কেন্দ্র। শীর্ষ আদালতে কলকাতা হাইকোর্টের এক্তিয়ার নিয়ে আগেই প্রশ্ন তুলেছিলেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। এবার তিনি সুপ্রিম কোর্টে ডিভিশন বেঞ্চের সামনে উল্লেখ করেছেন, আলাপন মামলায় হাইকোর্ট যে পর্যবেক্ষণ দিয়েছে, তাতে রাজনৈতিক প্রভাব রয়েছে। এই মামলায় আজ রায়দান স্থগিত রাখল সুপ্রিম কোর্ট।

সোমবার শীর্ষ আদালতে ছিল রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যসচিব তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের মামলার শুনানি। বিচারপতি এএম খানউইলকর ও বিচারপতি সিটি রবিকুমারের ডিভিশন বেঞ্চে চলে শুনানি। কেন্দ্রের তরফে সওয়াল করেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা ও আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের তরফে সওয়াল করেন আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি।

কী বলেছিল হাইকোর্ট?

আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের মামলা কেন দিল্লির প্রিন্সিপ্যাল বেঞ্চে সরানো হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল হাইকোর্ট। রাজ্যকেন্দ্রিক বিষয় দিল্লিতে পাঠানো নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিল আদালত। বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য ও রবীন্দ্রনাথ সামন্তের ডিভিশন বেঞ্চ পর্যবেক্ষণে উল্লেখ করেছিল, ‘প্রকৃত ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়।’ আলাপনের মামলা দিল্লিতে সরানো যাবে না বলে রায় দিয়েছিল হাইকোর্ট।

হাইকোর্টের মন্তব্যে রাজনীতির রঙ

আলাপন মামলা সরানোর নির্দেশ যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর পরিপন্থী বলে দাবি করেছিল হাইকোর্ট। আর সেই মামলায় সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বললেন, ‘এখানে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর কথা কোথা থেকে আসছে? ক্যাটের চেয়ারম্যান শুধু এক বেঞ্চ থেকে আর এক বেঞ্চে মামলা স্থানান্তরিত করেছে।’ এই ধরনের পর্যবেক্ষণে রাজনীতির প্রভাব আছে বলে দাবি করেন তিনি। তাঁর মতে, এই ধরনের পর্যবেক্ষণ এড়িয়ে চলা উচিৎ।

মন্তব্যের পাল্টা জবাবে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি বলেন, ‘পর্যবেক্ষণে কাউকে আঘাত করা হয়নি। এমন একজন ব্যক্তি যিনি বরাবরই কলকাতায় থেকেছেন। তিনি পশ্চিমবঙ্গ ক্যাডারের আইএস এফিসার। পশ্চিমবঙ্গেই বরাবর কাজ করেছেন। অবসরের পরও তিনি কলকাতাতেই থাকছেন।’ তাই এই মামলা কলকাতাতেই থাকা উচিৎ ছিল বলে দাবি করেছেন তিনি।

মামলার প্রেক্ষাপট

গত ২৮ মে ঘটনার সূত্রপাত। ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’এর পর ওই দিন কলাইকুণ্ডায় প্রধানমন্ত্রী একটি রিভিউ বৈঠক ডেকেছিলেন। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৎকলীন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিত থাকার কথা ছিল। কিন্তু, ক্ষয়ক্ষতি সামলানোর জন্য ব্যস্ত থাকায় তিনি প্রধানমন্ত্রীর সভায় উপস্থিত হননি আলাপন। এরপরই তাঁর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। তাঁকে দিল্লিতে ডেকে পাঠানো হয়। তাঁকে দিল্লিতে নর্থ ব্লকে হাজির হতে বলে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেখানে উপস্থিত না হয়ে অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়।

প্রধানমন্ত্রী তথা ন্যাশনাল ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটির চেয়ারম্যান নরেন্দ্র মোদীর বৈঠকে উপস্থিত না হওয়ায় আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বিপর্যয় মোকাবিলা আইন ভঙ্গ করার অভিযোগ ওঠে। বিপর্যয় মোকাবিল আইন ভঙ্গ করার জন্য কেন তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হবে না? সেই জবাব চাওয়া হয় আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। এরপরই অবসর নেন তিনি।

নির্ধারিত সময় দিল্লিতে যোগ না দেওয়ায় রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে শো-কজ করে কেন্দ্র। এরপর ডিপার্টমেন্ট অব পার্সোনেল অ্যান্ড ট্রেনিং-এর তরফে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু করা হয়। এই অনুসন্ধান প্রক্রিয়া খারিজ করার জন্য ‘সেন্ট্রাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনালে’র কলকাতা বেঞ্চে সম্প্রতি মামলা করেছিলেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়।

আলাপনবাবুর অভিযোগ,  অবসরপ্রাপ্ত কর্মী হিসেবে তাঁর যে সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্য, তা তিনি পাচ্ছেন না। এই দাবিতে কলকাতার ক্যাটের বেঞ্চে যান আলাপনবাবু।  কিন্তু দিল্লিতে নিয়ে যাওয়ার তোড়জোড় শুরু হয়। ২২ অক্টোবর সেন্ট্রাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনালের বা ক্যাটের (CAT) কলকাতা বেঞ্চ থেকে মামলা দিল্লিতে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেয় প্রিন্সিপাল বেঞ্চ। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েই  হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন আলাপন বন্দোপাধ্যায়।

গত ২৯ অক্টোবর হাইকোর্টে স্বস্তি পান মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের। কেন দিল্লিতে মামলা সরানো হবে? প্রশ্ন তুলে ‘ক্যাট’-এর চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্ত খারিজ করে দেয় কলকাতা হাইকোর্টের অবকাশকালীন বেঞ্চ। হাইকোর্ট স্পষ্ট করে দেয়, এই মামলা শুনবে কলকাতার ক্যাট। এরপর সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় কেন্দ্র।

আরও পড়ুন : রক্ষাকবচ তুলে নিল হাইকোর্ট! তবে কি এবার মমতার নির্বাচনী এজেন্ট শেখ সুফিয়ান গ্রেফতারির পথে?