National Emblame: ১৬০০০ কেজি বিশুদ্ধ ব্রোঞ্জ, ‘লস্ট ওয়াক্স’ পদ্ধতি! কেন অনন্য সদ্য স্থাপিত জাতীয় প্রতীকটি, জানেন?
national Emblame: বিশুদ্ধ ব্রোঞ্জের তৈরি ১৬,০০০ কেজির স্থাপত্য, তৈরি করা হয়েছে লস্ট ওয়াক্স পদ্ধতিতে। কেন এই স্থাপত্যটিকে অনন্য বলা হচ্ছে?
নয়া দিল্লি: সোমবার (১১ জুলাই), নয়া সংসদ ভবনের ছাদে একটি ৬.৫ মিটার উচ্চতার অশোক স্তম্ভের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অশোক স্তম্ভ ভারতের জাতীয় প্রতীক। ব্রোঞ্জের তৈরি এই স্তম্ভটির ওজন ১৬,০০০ কেজি। এটি তৈরি করেছেন ভারতীয় কারিগররাই। ব্যবহার করা হয়েছে, প্রায় ১০০ শতাংশ বিশুদ্ধ ব্রোঞ্জ। শুধু উপাদান নয়, নকশা থেকে কারুকার্য – বিভিন্ন দিক থেকেই এই স্থাপত্যটির অনন্য। এর আগে ভারতের জাতীয় প্রতীকের এমন স্থাপত্য কখনও তৈরি হয়নি। আসুন জেনে নেওয়া যাক, ভারতের জাতীয় প্রতীকের এই স্থাপত্যটি সম্পর্কে –
দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ১০০ জনেরও বেশি কারিগর এই প্রতীকটির নকশা, কারুকাজ এবং ঢালাইয়ের কাজ করেছেন। এর জন্য সময় লেগেছে ছয় মাসেরও বেশি। স্থাপত্যটি তৈরির পর সেটিকে নয়া সংসদ ভবনের ছাদে স্থাপনা করাটার ছিল আরও চ্যালেঞ্জিং। কারণ, নয়া সংসদ ভবনের উচ্চতা ৩২ মিটার। সারনাথ জাদুঘরে সংরক্ষণ করা হয়েছে সম্রাট অশোকের একটি স্তম্ভ। সেটি থেকেই ভারতের জাতীয় প্রতীকের এই বিরাট স্থাপত্যের নকশা করা হয়েছে। অশোক স্তম্ভে চারটি সিংহের মূর্তি বৃত্তাকারে সজ্জিত থাকে। তার নিচে বেদিতে রয়েছে একটি হাতি, একটি ছুটন্ত ঘোড়া এবং একটি ষাঁড়ের ছবি। আর এই তিন পশুর মাঝে থাকে একটি করে ধর্ম চক্র।
1860s :: Lion Capital of Emperor Ashoka In Sarnath .
It Is National Emblem Of India pic.twitter.com/1xRU8P7ROQ
— indianhistorypics (@IndiaHistorypic) July 11, 2022
ব্রোঞ্জের এই বিশেষ অশোক স্তম্ভটি তৈরির জন্য, শুরুতে স্থাপত্যটির একটি কম্পিউটার গ্রাফিক স্কেচ তৈরি করা হয়েছিল। ওই স্কেচের উপর ভিত্তি করে একটি মাটির মডেল তৈরি করা হয়েছিল। উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ সেই মডেল অনুমোদন করার পর, মোমের ছাঁচ তৈরি করে, ব্রোঞ্জের ঢালাই করা হয়। এর জন্য ব্যবহার করা হয়েছে ‘লস্ট ওয়াক্স কাস্টিং’ প্রক্রিয়া। প্রথমে মাটির মডেলটি থেকে একটি উল্টো ছাঁচ তৈরি করা হয়। পরে ওই উল্টো ছাঁচের ভিতরে গলানো মোমের পরত দেওয়া হয়। ব্রোঞ্জের চূড়ান্ত মডেলটি কতটা চওড়া হবে, সেই অনুযায়ী মোমের পরতটি পুরু করা হয়। ফলে যে মোমের ছাঁচ তৈরি হয়, তার মধ্যে একটি তাপ-প্রতিরোধী মিশ্রণ ঢালা হয়।
This morning, I had the honour of unveiling the National Emblem cast on the roof of the new Parliament. pic.twitter.com/T49dOLRRg1
— Narendra Modi (@narendramodi) July 11, 2022
এরপর, মোমের ছাঁচের বাইরের অংশে কয়েকটি মোমের নালি লাগানো হয়। এই নালিগুলি দিয়েই গলানো ব্রোঞ্জ ঢালা হয়। আবার, এই প্রক্রিয়ায় যে গ্যাস তৈরি হয়, সেগুলিও ওই মোমের নালি দিয়েই বেরিয়ে যায়। এরপর, মোমের ছাঁচটি তাপ-প্রতিরোধী ফাইবার দিয়ে সম্পূর্ণরূপে আবৃত করা হয়। তারপর পুরোটি উল্টে একটি চুল্লির উপর রাখা হয়। গরমে প্লাস্টার শুকিয়ে যায় এবং মোমের নালিগুলি দিয়ে মোম গলে বেরিয়ে যায়। বাইরের ফাইবারের ছাঁচটি এরপর বালি দিয়ে আবৃত করে, গলানো ব্রোঞ্জ ওই নালিগুলির মাধ্যমে ঢেলে দেওয়া হয়। ঠান্ডা হলে, বাইরের প্লাস্টারটি সরিয়ে দেওয়া হয়। একেবারে শেষে স্থাপত্যটি পালিশ করা হয়।