উৎসবের মরশুম আসতেই রেকর্ড ভাঙছে ‘আর-ভ্যালু’, দ্বিতীয় ঢেউয়ের থেকেও ভয়াবহ পরিস্থিতি!

চেন্নাইয়ের ইন্সটিটিউট অব ম্যাথেমেটিক্যাল সায়েন্সের গবেষকরা জানান, যেখানে গত ১৪ থেকে ১৭ অগস্ট দেশের আর ভ্যালু ছিল ০.৮৯, সেখানেই বিগত ১৫ দিন অর্থাৎ গত ২৪ থেকে ২৯ অগস্ট অবধি দেশের আর ভ্যালু ছিল ১.১৭।

উৎসবের মরশুম আসতেই রেকর্ড ভাঙছে 'আর-ভ্যালু', দ্বিতীয় ঢেউয়ের থেকেও ভয়াবহ পরিস্থিতি!
দেশে ক্রমশ বাড়ছে সংক্রমণের হার। ছবি:PTI
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 04, 2021 | 10:20 AM

নয়া দিল্লি: উৎসবের মরশুম যত এগিয়ে আসছে, ততই উদ্বেগ বাড়ছে  উর্ধ্বমুখী করোনা সংক্রমণ নিয়েও। দেশের দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা বর্তমানে ৪৫ থেকে ৫০ হাজারের গণ্ডিতে ঘোরাফেরা করছে, এরমধ্যে ৮৫ শতাংশ আক্রান্তের খোঁজই কেরল থেকে মিলছে। বিগত ১৫ দিনে দেশের আর ভ্যালু অর্থাৎ একজন সংক্রমিতের  থেকে আরও কত জন সংক্রমিত হতে পারেন, সেই সূচকও বৃদ্ধি পেয়েছে। গবেষকরা জানিয়েছেন, এতদিন ১-র নীচে থাকলেও বর্তমানে আর ভ্যালু (R Value) ১.২ -এ দাঁড়িয়েছে।

আর ফ্যাক্টরের মাধ্যমে সংক্রমণ কোন গতিতে এগোচ্ছে, তা বোঝা যায়। অন্যদিকে, আর ভ্যালুর মাধ্যমে একজন করোনা আক্রান্তের থেকে আরও কতজন সংক্রমিত হতে পারে, তা জানা যায়। গত মাসেই এইমস প্রধান ডঃ রণদীপ গুলেরিয়া আর ভ্য়ালু বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। যে সমস্ত অঞ্চলে সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে, সেখানে কড়া বিধিনিষেধ আরোপ করা উচিত এবং সংক্রমণের শৃঙ্খল ভাঙতে টেস্ট, ট্রাক ও ট্রিট-এই নীতিই অনুসরণ করা উচিত।

সম্প্রতিই চেন্নাইয়ের ইন্সটিটিউট অব ম্যাথেমেটিক্যাল সায়েন্সের গবেষকরা জানান, যেখানে গত ১৪ থেকে ১৭ অগস্ট দেশের আর ভ্যালু ছিল ০.৮৯, সেখানেই বিগত ১৫ দিন অর্থাৎ গত ২৪ থেকে ২৯ অগস্ট অবধি দেশের আর ভ্যালু ছিল ১.১৭। গবেষক দলের প্রধান সীতাভ্র সিনহা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, “আর ভ্যালু কেবলমাত্র ১ -র বেশি মাত্রাতেই পৌঁছয়নি, তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা যখন করা হচ্ছিল, সেই সময়ও আর ভ্যালু ১.০৩ ছিল। বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১.১৭-এ। ”

একাধিক রাজ্যে সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ার কারণেই আর ভ্যালু বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানান তিনি। মূলত কেরল ও মহারাষ্ট্রে ব্যাপক হারে সংক্রমণ বৃদ্ধির কারণেই আর ভ্যালুও বৃদ্ধি পেয়েছে। একইসঙ্গে জম্মু-কাশ্মীর ও মিজোরামেও সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় অগস্ট মাসের আর ভ্যালুতে প্রভাব পড়েছে।

কোন রাজ্যে আর ভ্যালু কত?

গবেষণায় জানা গিয়েছে, কেরলের আর ভ্যালু বর্তমানে ১.৩৩। দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ সক্রিয় রোগীর সংখ্যাও কেরলেই। মিজোরামে আর ভ্য়ালু বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১.৩৬-এ, জম্মু-কাশ্মীরে ১.২৫, অন্ধ্র প্রদেশে ১.০৯ ও মহারাষ্ট্রে আর ভ্যালু ১.০৬ বলে জানা গিয়েছে।

দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় দেশের আর ভ্য়ালু-

চলতি বছরের মার্চ থেকে মে মাসেই দেশে আছড়ে পড়েছিল করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। দৈনিক চার লক্ষ আক্রান্তও হয়েছিল সেই সময়ে। ওই সময়কালে দেশের আর ভ্যালু ছিল ১.৩৭। মে মাসের ১৫ তারিখ থেকে জুনের ২৬ তারিখ অবধি দেশের আর ভ্যালু অনেকটাই কমে দাঁড়ায় ০.৭৮-এ। জুনের শেষ ভাগ থেকেই ফের আর ভ্যালু উর্ধ্বমুখী হয়। ৭ জুলাই অবধি দেশের আর ভ্যালু ছিল ০.৮৮, ৩ থেকে ২২ জুলাই অবধি আর ভ্য়ালু ০.৯৫ এবং ২৪ থেকে ২৭ জুলাই অবধি আর ভ্যালু ০.৯৬-এ পৌঁছয়।

আর ভ্যালু (R Value) ০.৯৫ হওয়ার অর্থ হল, প্রতি ১০০ জন করোনা আক্রান্ত গড়ে আরও ৯৫ জনকে সংক্রমিত করেন। যদি আর ভ্য়ালু ১ শতাংশের নীচে থাকে, তবে বোঝা যায় নতুন করে আক্রান্তদের সংখ্যা বর্তমানে সক্রিয় রোগীর তুলনায় কম। এর বিচারেই বলা হয় যে দেশে সংক্রমণ কমছে। আরও পড়ুন: দু’মাসেও ১৩ বছরের কিশোরীকে খুঁজে পায়নি যোগীরাজ্যের পুলিশ, ২ দিনেই উদ্ধার করল দিল্লি পুলিশ!