Electoral Bond: নির্বাচনী বন্ড কি আদৌ বৈধ? লোকসভার আগেই গুরুত্বপূর্ণ রায় দেবে সুপ্রিম কোর্ট
Supreme Court: নির্বাচনী বন্ড হল রাজনৈতিক দলগুলিকে নির্বাচনের আগে আর্থিক অনুদান দেওয়ার একটি পদ্ধতি। ২০১৭ সালে অর্থবিলে একাধিক সংশোধন করা হয় এই নিয়ম চালুর জন্য।ইলেকটোরিয়াল বন্ডের নিয়ম অনুযায়ী, কোনও ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কোনও রাজনৈতিক দলকে আর্থিক অনুদান দিতে চাইলে, স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া থেকে ইলেকটোরিয়াল বন্ড কিনে পছন্দের রাজনৈতিক দলকে দিতে পারেন।
নয়া দিল্লি: নির্বাচনী বন্ড বা ইলেকটোরাল বন্ড (Electoral Bond) কি আদৌ বৈধ? এই মামলার আজ রায়দান করতে পারে সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। লোকসভা নির্বাচনের আগে শীর্ষ আদালতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যপূর্ণ রায় হতে পারে এটি। নির্বাচনে কালো টাকা ঢালা রুখতেই ২০১৮ সালে কেন্দ্রীয় সরকার এই প্রকল্প এনেছিল। কিন্তু অস্বচ্ছতার অভিযোগ এনে তা চ্যালেঞ্জ করে বিরোধীরা। গত বছরই প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ এই রায় সংরক্ষিত রাখে। আজ সেই মামলারই রায়দান হতে পারে।
২০১৮ সালের ২ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে ইলেকটোরাল বন্ড বা নির্বাচনী বন্ড আনা হয়। নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলিকে নগদে আর্থিক অনুদান রুখতে এবং রাজনৈতিক ফান্ডিংয়ে স্বচ্ছতা আনতেই এই প্রকল্প আনা হয়েছিল। নতুন নিয়মে কোনও ব্যক্তি বা কর্পোরেট সংস্থা যদি নির্দিষ্ট কোনও রাজনৈতিক দলকে আর্থিক সাহায্য বা চাঁদা দিতে চায়, তবে তাদের বন্ড কিনে সংশ্লিষ্ট দলকে দিতে হবে। ১ হাজার, ১০ হাজার, ১ লক্ষ, ১০ লক্ষ এবং ১ কোটি টাকা মূল্যের বন্ড পাওয়া যায় স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ায়। রাজনৈতিক দলগুলি নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্টে সেই বন্ড ভাঙিয়ে নিতে পারবে। কিন্তু কে, কত টাকা অনুদান দিচ্ছেন, সেই তথ্য প্রকাশ করা হবে না।
তবে বিরোধীরা নির্বাচনী বন্ড চালু হওয়ার পরই স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। তাদের অভিযোগ, এই প্রক্রিয়াতে নির্বাচনে অস্বচ্ছতাই বাড়বে। বিশ্বের কোনও দেশেই এমন ব্যবস্থা নেই, যেখানে রাজনৈতিক দল বন্ড ভাঙিয়ে অর্থ সংগ্রহ করে। কোন কর্পোরেট সংস্থা কাকে ভোটে সাহায্য করছে, তার বিনিময়ে ক্ষমতাসীন দলের থেকে কী সুবিধা পাচ্ছে, সেই তথ্য জানারও উপায় নেই সাধারণ জনগণ বা ভোটারের। যেখানে শাসক দলের আর্থিক অনুদানের কোনও তথ্য থাকবে না, সেখানেই বিরোধী দলে কে কত অনুদান দিচ্ছেন, তা জানা সম্ভব। এই অভিযোগ নিয়েই মামলা দায়ের হয়।
নির্বাচনী বন্ড আদৌ স্বচ্ছ নাকি অস্বচ্ছ, তা নিয়েই শুনানি চলছিল এতদিন। গত বছরের ২ নভেম্বর প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় এই মামলার রায় সংরক্ষিত রাখে। আজ সেই মামলার রায়দান হতে পারে।
নির্বাচনী বন্ড কি?
নির্বাচনী বন্ড হল রাজনৈতিক দলগুলিকে নির্বাচনের আগে আর্থিক অনুদান দেওয়ার একটি পদ্ধতি। ২০১৭ সালে অর্থবিলে একাধিক সংশোধন করা হয় এই নিয়ম চালুর জন্য। ইলেকটোরাল বন্ডের নিয়ম অনুযায়ী, কোনও ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কোনও রাজনৈতিক দলকে আর্থিক অনুদান দিতে চাইলে, স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া থেকে ইলেকটোরিয়াল বন্ড কিনে পছন্দের রাজনৈতিক দলকে দিতে পারেন। অনুদানপ্রাপ্ত রাজনৈতিক দলগুলি ১৫ দিনের মধ্যে এসবিআই-র শাখায় গিয়ে বন্ড ভাঙিয়ে নগদ করতে পারে। কে অর্থ অনুদান দিচ্ছেন, তা গোপন রাখা হবে।
এই স্কিমের আরেকটি শর্ত হল যে রাজনৈতিক দল গত লোকসভা বা বিধানসভা নির্বাচনে কমপক্ষে এক শতাংশ ভোট পেয়েছে, তারাই এই প্রকল্পের মাধ্যমে আর্থিক অনুদান পেতে পারে। এতে নতুন রাজনৈতিক দলগুলির আর্থিক সাহায্য পাওয়ার রাস্তা সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়।
নির্বাচনী বন্ড নিয়ে বিরোধিতা-
২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসেই একটি এনজিও নির্বাচনী স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে পিটিশন দাখিল করে। এরপরে সিপিএমও নির্বাচনী বন্ডকে চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতে মামলা করে। আবেদনে বলা হয়েছিল, ইলেকটোরাল বন্ডে নির্দিষ্ট কিছু রাজনৈতিক দলের জন্য অগাধ তহবিলের দরজা খুলে গিয়েছে। ক্ষমতাসীন দল অনুদানের তথ্য গোপন করতে পারবে। বড় পুঁজিপতিরা আর্থিক অনুদানের বিনিময়ে নিজেদের পছন্দসই বা লাভজনক নীতি তৈরি করতে পারে। এক কথায় একে বলা হয়, অনুদানের বিনিময়ে রাজনীতিতে পুঁজিবাদীদের হস্তক্ষেপ।
বিরোধী দলগুলির, বিশেষ করে কংগ্রেসের সবচেয়ে বড় আপত্তি ছিল যে অনুদানদাতা তার পরিচয় গোপন রেখে অনুদান দিতে পারে। এটি মোটেও ঠিক নয়। নির্বাচনী বন্ড চালু হওয়ার পর ভারতীয় জনতা পার্টিকে নির্বাচনী অনুদানের ঐতিহাসিক বৃদ্ধি হয়েছে।