Ischemic Stroke: ১ সপ্তাহে ১০০টি স্ট্রোক ৬৫ বছরের প্রৌঢ়ের! তারপর…

Ischemic Stroke: প্রথমে সপ্তাহে ১ থেকে ২বার স্ট্রোক হত ওই প্রৌঢ়ের। এরপর প্রতিদিনই একাধিকবার করে স্ট্রোক হতে থাকে। গত সপ্তাহে এই স্ট্রোকের পরিমাণ মাত্রা ছাড়া জায়গায় পৌঁছয়। ১ সপ্তাহের মধ্যে অন্তত ১০০টি স্ট্রোক হয়েছিল তাঁর।

Ischemic Stroke: ১ সপ্তাহে ১০০টি স্ট্রোক ৬৫ বছরের প্রৌঢ়ের! তারপর...
প্রতীকী ছবিImage Credit source: Pixabay
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 27, 2023 | 1:44 PM

নয়া দিল্লি: বয়স তাঁর ৬৫। গত এক সপ্তাহে কমপক্ষে ১০০টি ‘মিনি-স্ট্রোক’ হয়েছিল তাঁর। কিন্তু, রাখে হরি তো মারে কে? একটা অস্ত্রোপচারেই সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে গিয়েছেন তিনি। নাটকীয়ভাবে উন্নতি হয়েছে তাঁর স্বাস্থ্যের। অস্ত্রোপচারের পর থেকে আর কোনও স্ট্রোক হয়নি তার। তার মস্তিষ্কের ডানদিকে অভ্যন্তরীণ ক্যারোটিড ধমনী সরু হয়ে গিয়েছিল। যার ফলে তাঁর মস্তিষ্কে রক্ত এবং অক্সিজেন পৌঁছচ্ছিল না। তার জন্যই পরপর স্ট্রোক হচ্ছিল। এই বাধা দূর করতে চিকিৎসকরা তাঁর মস্তিষ্কে একটি ইন্ট্রাক্রেনিয়াল স্টেন্টিং ব্যবহার করেছেন। তাঁদের মতে, এই ঘটনা চিকিৎসা বিজ্ঞানের ইতিহাসে অত্যন্ত বিরল।

তাঁরা জানিয়েছেন, দিল্লির বাসিন্দা ওই ব্যক্তি, গত এক সপ্তাহে ১০০ বারের বেশি ট্রানজিয়েন্ট ইসকিমিক অ্যাটাক বা মিনি-স্ট্রোকের শিকার হয়েছিলেন। তার ডান হাত ও পায়ের জোর চলে গিয়েছিল। এর পাশাপাশি গত ছয় মাস ধরেই তাঁর কথা বলতে এবং অন্যের কথা বুঝতে অসুবিধা হচ্ছিল। বেশ কয়েকজন ডাক্তার দেখিয়েছিলেন তিনি। তাঁর কী সমস্যা রয়েছে, কেউই ধরতে পারেননি। তবে, অস্ত্রোপচারের আগে, দিল্লির এক হাসপাতালের চিকিৎসকরা সমস্যাটি শনাক্ত করেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, অতিরিক্ত ধূমপানের কারণে ওই ব্যক্তির রক্তনালী সরু হয়ে গিয়েছিল। ফলে ফুসফুসের ডান দিকে মাত্র ৯০ শতাংশ রক্ত সরবরাহ হচ্ছিল। আর, বাম দিকটি ছিল পুরোপুরি বন্ধ, কোনও রক্তই যাচ্ছিল না সেই দিক দিয়ে। রক্ত সরবরাহে এই বাধার জন্যই তাঁর মস্তিষ্কে রক্ত ও অক্সিজেনের ঘাটতি হচ্ছিল। আর সেটাই ছিল তাঁর ঘন ঘন স্ট্রোকের কারণ।

প্রথম দিকে প্রতি সপ্তাহে ১ থেকে ২ বার তাঁর স্ট্রোক হত। মিনিট পাঁচেক অসুবিধার পর, আবার সুস্থ হয়ে যেতেন তিনি। কিন্তু, ধীরে ধীরে স্ট্রোকের সংখ্যা এবং অসুস্থতার সময় – দুইই বাড়তে থাকে। প্রতিদিনই একাধিকবার স্ট্রোক হতে থাকে। একেকবারে, ১০ থেকে ১৫ মিনিটেরও বেশি সময় ধরে সেই পর্ব চলত। গত সপ্তাহে এই স্ট্রোকের পরিমাণ মাত্রা ছাড়া জায়গায় পৌঁছয়। তারপরই তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। চিকিৎসকদের তৎপরতায় স্বাভাবিক জীবন ফিরে পেয়েছেন ওই ব্যক্তি।

চিকিত্সকরা জানিয়েছেন, স্ট্রোকের রোগীদের জন্য প্রাথমিক পর্যায়েই বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত। শুরুতেই লক্ষণগুলি শনাক্ত করা গুরুত্বপূর্ণ। ঠিক কী কারণে স্ট্রোক হচ্ছে, তা ধরতে পারলে তবেই চিকিত্সা করা সম্ভব। মিনি-স্ট্রোকের ফলে, অল্প সময়ের জন্য মস্তিষ্কের এক অংশে রক্ত ​​প্রবাহে ব্যাঘাত ঘটে। অনেক সময়ই এই মিনি স্ট্রোকগুলি, কোনও বড় মাপের স্ট্রোকের পূর্বাভাস দেয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এই রোগীদের অবিলম্বে চিকিৎসার প্রয়োজন। যদি কেউ এই সমস্যা ফেলে রাখেন, তাহলে স্থায়ীভাবে বিভিন্ন শারীরিক অক্ষমতা, এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

কীভাবে বুঝবেন মিনি স্ট্রোক?

মুখ, হাত বা পায়ে দুর্বলতা, শরীরের একপাশে অসাড়তা বা পক্ষাঘাত, ঝাপসা দৃষ্টি, কথা জড়িয়ে যাওয়া, অন্যদের কথা বুঝতে অসুবিধা হওয়া, এক বা দুই চোখেই অন্ধত্ব, বা জোড়া-জোড়া দেখা, ভারসাম্য হারানোর মতো, মিনি স্ট্রোকের বেশ কিছু লক্ষণ রয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, অতিরিক্ত ধূমপান, অনিয়মিত জীবনযাত্রা, উচ্চ কোলেস্টেরলের মতো, বিভিন্ন কারণে রক্তনালী সরু হয়ে যেতে পারে। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, জীবনযাত্রার পরিবর্তন, ওষুধ এবং ঝুঁকির কারণগুলি নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে মিনি স্ট্রোকের বিপদ দূর করা যেতে পারে। তবে, রক্তনালীগুলি খুব সরু হয়ে গেলে স্টেন্ট বসানো ছাড়া উপায় থাকে না।