এ কেমন প্রথা! বৃষ্টির দেবতাকে তুষ্ট করতে ৬ নাবালিকাকে নগ্ন করে বের করা হল রাস্তায়
তাদের সঙ্গে ছিলেন বেশ কয়েকজন মহিলা। এই ঘটনায় রিপোর্ট তলব করেছে জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশন।
ভোপাল: ভারতীয় সংস্কৃতিতে আজও অনেক প্রাচীন রীতিনীতি মেনে চলা হয়। দেবতার রোষেই প্রকৃতিতে বিপর্যয় ঘটে, এমনটাও মনে করা হয়। কিন্ত, খরা কাটাতে, বৃষ্টির দেবতাকে তুষ্ট করতে নাবালিকাদের নগ্ন করে রাস্তা্য হাঁটানো হয়, এমন অদ্ভুত রীতির কথা আগে শোনা যায়নি। এমনই ঘটনা ঘটল মধ্যপ্রদেশে। দামো জেলার বানিয়া গ্রামের গ্রামবাসীরা সেই রীতিতে অংশ নেন। প্রবল খরা পরিস্থিতি কাটাতেই এমনটা করা হয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা। গত রবিবার এই ঘটনা ঘটে। ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসতেই এই ঘটনায় রিপোর্ট তলব করেছে জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশন। রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
দামো জেলার পুলিশ সুপার ডিআর তেনিওয়ার জানান, পুলিশের কাছে খবর এসেছে যে নাবালিকাদের নগ্ন করে রাস্তায় ঘোরানো হয়েছে। বৃষ্টির দেবতাকে তুষ্ট করতেই এমনটা করা হয়েছে বলে দাবি স্থানীয়দের। সমাজের অশুভ শক্তি দূর করতে নাকি এমন প্রথা প্রচলি আছে ওই অঞ্চলে। পুলিশ এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। কারা ওই নাবালিকাদের নগ্ন হতে বাধ্য করেছে, তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। জানা গেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে দাবি পুলিশের।
পুলিশ আরও জানিয়েছে যে, স্থানীয়রা মনে করেন এ ভাবে নগ্ন অবস্থায় নাবালিকাকে রাস্তা দিয়ে নিয়ে গেলে নাকি তুষ্ট হবেন বৃষ্টির দেবতা। পুলিশের হাতে আসা ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, ওই নাবালিকাদের কাঁধে চাপানো রয়েছে কাঠ, আর তাতে বাঁধা আছে একটা ব্যাং। সঙ্গে রয়েছে বেশ কয়েকজন মহিলা। তারা রাস্তা দিয়ে ভজন গাইতে গাইতে যাচ্ছে। দামো জেলার কালেকটর এস কৃষ্ণ চৈতন্য বলেন, স্থানীয় প্রশাসনের তরফে জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশনের কাছে একটি রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে। তিনি আরও জানিয়েছেন যে, এই প্রথা নিয়ে কোনও আপত্তি নেই স্থানীয় বাসিন্দাদের। শুধু তাই নয়, এই কাজে ওই নাবালিকাদের বাবা-মা’ও সায় দিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। নাবালিকাদের পরিবারকে এই কুসংস্কার নিয়ে সচেতন করা হবে বলে জানিয়েছেন কালেকটর।
কালেকটর জানান, এই ধরনের ঘটনায় সাধারণর প্রশাসনের তরফে থেকে গ্রামবাসী ও পরিবারগুলিকে সচেতন করতে হয়। এগুলো যে আসলে সবই কুসংস্কার। এতে সত্যি কোনও ফল পাওয়া যায় না। এ কথা বোঝানো হয় তাদের। এ ক্ষেত্রেও সেটাই করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
ইতিমধ্যেই ওই ঘটনার দুটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে। একটি ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, এক বছর পাঁচেকের নাবালিকা নগ্ন অবস্থায় হেঁটে যাচ্ছে। তার কাঁধে রয়েছে কিছু কাঠ আর তাতে বাঁধা ব্যাঙ। সঙ্গে কয়েকজন মহিলা ভজন গাইতে গাইতে যাচ্ছে। অন্য একটি ভিডিয়োতে কয়েকজন মহিলাকে বলতে শোনা যাচ্ছে যে চাষের জমিকে খরার হাত থেকে বাঁচাতে এই প্রথা মানা জরুরি। তারা বলাবলি করছে, ‘এই রীতি মানলে তবেই বৃষ্টি আসবে।’ জানা গিয়েছে, এ ভাবে নগ্ন নাবালিকাদের হাঁটানোর পর ওই এলাকার মানুষের কাছ থেকে কাঁচা খাবার সংগ্রহ করেন ওই মহিলারা। তারপর মন্দিরে গিয়ে সে সব রেঁধে ভোগ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। আরও পড়ুন: ‘আর কেউ সমস্যা তৈরি করতে চাইলেই…’, পঞ্জশীর দখল করেই হুংকার তালিবানের, খোঁজ শুরু প্রতিরোধ বাহিনীর