‘আর কেউ সমস্যা তৈরি করতে চাইলেই…’, পঞ্জশীর দখল করেই হুংকার তালিবানের, খোঁজ শুরু প্রতিরোধ বাহিনীর

জাবিদুল্লাহ বলেন, "যারা কাবুল ছেড়ে পালিয়েছিল, তারা ভেবেছিল তালিবানের সঙ্গে যুদ্ধ করতে পারবে। আশা করছি এ বার শান্তি বজায় থাকবে।"

'আর কেউ সমস্যা তৈরি করতে চাইলেই...', পঞ্জশীর দখল করেই হুংকার তালিবানের, খোঁজ শুরু প্রতিরোধ বাহিনীর
ফাইল চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 06, 2021 | 2:14 PM

পঞ্জশীর: অবশেষে লক্ষ্যপূরণ হয়েছে তালিবানের, দখল নিতে পেরেছে ‘অপ্রতিরোধ্য’ পঞ্জশীরের। ৩৪ তম প্রদেশ দখল নিয়েই আসল রূপ ধরল তালিবান। হুংকার দিয়ে বলল, “এ বার কেউ সমস্যা তৈরি করতে চাইলেই তাঁকে পঞ্জশীরের কায়েদাতেই শায়েস্তা করা হবে”।  প্রতিরোধ বাহিনীর সদস্যদের খোঁজেও তল্লাশি শুরু করা হয়েছে, যে কোনও মুহূর্তে বইতে পারে রক্তগঙ্গা।

সোমবার সকালেই তালিবানের তরফে দাবি করা হয় পঞ্জশীরের দখল নিতে সফল হয়েছে তালিবান। এরপরই কাবুলে সাংবাদিক বৈঠক করে তালিবানের মুখপাত্র জাবিদুল্লাহ মুজাহিদ বলেন, “অবশেষে যুদ্ধ শেষ হল। আশা করছি এ বার শান্তিপূর্ণ আফগানিস্তান গঠন করতে পারব আমরা। যারা হাতে অস্ত্র তুলে নেবে, তারা সাধারণ মানুষ ও দেশের শত্রু বলেই বিবেচিত হবে।”

জাবিদুল্লাহ বলেন, “সাধারণ মানুষের জেনে রাখা ভাল যে অনুপ্রবেশকারীরা কোনও দিনই আমাদের দেশের পুনর্গঠন করেনি।আমাদেরই দায়িত্ব নিজেদের দেশকে সুন্দরভাবে গড়ে তোলা।” পঞ্জশীর দখলের প্রসঙ্গে তিনি জানান, তালিবানের তরফে শান্তিপূর্ণভাবেই সমস্য়ার সমাধান করতে চেয়েছিল, কিন্তু প্রতিরোধ বাহিনী সেই প্রস্তাব মানেনি। তবে পঞ্জশীর দখলের সময়ও যাতে সাধারণ মানুষের কোনও ক্ষতি না হয়, সেই দিকটি নিশ্চিত করেছে তালিবান, এমনটাই দাবি করেন জাবিদুল্লাহ মুজাহিদ।

একইসঙ্গে তালিবানের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ করলে তার ফল যে ভাল হবে না, তা স্পষ্টভাবে বোঝাতে জাবিদুল্লাহ বলেন, “যারা কাবুল ছেড়ে পালিয়েছিল, তারা ভেবেছিল তালিবানের সঙ্গে যুদ্ধ করতে পারবে। আশা করছি এ বার শান্তি বজায় থাকবে। যারাই সমস্যা তৈরি করার চেষ্টা করে, তাদের একইভাবে সামলানো হবে, যেভাবে পঞ্জশীরকে সামলানো হল।”

এ দিন সকালেই প্রতিরোধ বাহিনীর নেতা আহমেদ মাসুদকে বন্দি বানানোর দাবি জানালেও প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট আমিরুল্লাহ সালেহ কোথায় রয়েছেন, সে বিষয়ে নিশ্চিতভাবে জানাতে পারেননি জাবিদুল্লাহ মুজাহিদ। যারা প্রতিরোধ বাহিনীর হয়ে লড়াই চালাচ্ছিল এতদিন, তাদের খোঁজ করছে তালিবান, এমনটাই জানান তালিব মুখপাত্র।

তিনি বলেন, “দেশের পলাতক শত্রুদের শেষ লুকনোর জায়গাও বর্তমানে আমাদের দখলে। যারা আমাদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়েছিল, তাদের খোঁজে তল্লাশি অভিযান শুরু হয়েছে। তবে এখনও আমরা ক্ষমা করে দিতে পারি।”

গতকালই লড়াই শেষ করতে চেয়ে প্রতিরোধ বাহিনীর নেতা আহমেদ মাসুদ তালিবানের সঙ্গে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দিয়েছেন।  নিজেদের ফেসবুক পেজেই আলোচনার প্রস্তাব দিয়ে তিনি পোস্টে লেখেন, “জাতীয় প্রতিরোধ বাহিনী বর্তমান সমস্যা সমাধান করতে যুদ্ধ শেষ করে তালিবানের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যেতে রাজি হয়েছে। তালিবানরা যদি পঞ্জশীর ও আন্দারাবে হামলা চালানো বন্ধ করলে তবেই তারাও যুদ্ধ শেষ করবে। উলেমা কাউন্সিলের উপস্থিতিতে দুই পক্ষের তরফেই বড় বাহিনী নিয়ে আলোচনা করতে পারে।”

এরই জবাবে এদিন সাংবাদিক বৈঠকে তালিব মুখপাত্র বলেন, “আমরা যখন আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছিলেন, তখন প্রতিরোধ বাহিনী রাজি হয়নি। এখন পঞ্জশীর দখলের পর বৈঠকের কী লাভ?” আরও পড়ুন: স্বপ্নের থেকেও সুন্দর! অথচ পরিচয় গড়েছে শিরদাঁড়ার জোরেই, পঞ্জশীর দখল নিয়েও কেন অস্বস্তিতে তালিবান?