দক্ষিণেশ্বরকে পিছনে রেখে বাঙালি ভাবাবেগকে সামনে আনছেন মোদী?
এতদিন যখনই প্রধানমন্ত্রী এহেন সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন, তাঁর পিছনে ভারতের কোনও স্থাপত্যই শোভা বৃদ্ধি করে এসেছে। কিন্তু বাঙালির মনন ও আবেগের সঙ্গে জড়িত কোনও স্থাপত্যকে আন্তর্জাতিক স্তরে সম্ভবত প্রথমবার এতটা গুরুত্ব দিলেন প্রধানমন্ত্রী।
নয়াদিল্লি: শুক্রবার প্রথমবার ভারতের পক্ষ থেকে উজবেকিস্তানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে অংশ নিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। তবে সেই বৈঠকে মোদী যা বললেন, তার থেকেও বড় আলোচ্য বিষয় হয়ে উঠেছে প্রধানমন্ত্রীর পিছনে থাকা দৃশ্যপট। যেখানে দেখা গিয়েছে, দক্ষিণেশ্বরের (Dakhineswar Tample) ভবতারিণী মন্দিরের ছবি।
আন্তর্জাতিক শিখর সম্মেলনে যেভাবে প্রধানমন্ত্রী দক্ষিণেশ্বর মন্দিরকে প্রাধান্য দিয়েছেন, তা এক ধাক্কায় নজর টেনেছে আপামর বাঙালির। কেননা, এতদিন যখনই প্রধানমন্ত্রী এহেন সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন, তাঁর পিছনে ভারতের কোনও স্থাপত্যই শোভা বৃদ্ধি করে এসেছে। কিন্তু বাঙালির মনন ও আবেগের সঙ্গে জড়িত কোনও স্থাপত্যকে আন্তর্জাতিক স্তরে সম্ভবত প্রথমবার এতটা গুরুত্ব দিলেন প্রধানমন্ত্রী।
সাধারণত আন্তর্জাতিক মহলে ভারতের পরিচিতি হিসেবে এতদিন তাজমহল জায়গা নিয়ে রেখেছে। কখনও বা সেই প্রতীক হয়ে উঠেছে মুম্বইয়ের গেটওয়ে অব ইন্ডিয়া। সেই নিরিখে আজকের দিনের ঘটনা বিরল বলা চলে। যেখানে অন্য একটি দেশের রাষ্ট্র প্রধানের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী, এবং তাঁর পিছনে ফুটে উঠছে দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের ছবি।
এই ঘটনার পর বঙ্গ বিজেপির পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা হয়। সমগ্র বাঙালি জাতির এক আস্থার নিদর্শন এই মন্দির। বিজেপি মনে করছে, এই সম্মান বাঙালির জন্য অভূতপূর্ব।
Thank you PM Shri @narendrmodi ji for honouring the legacy of West Bengal by using the Dakshineswar temple as a backdrop of India-Uzbekistan summit. It is an honour for Bengal and Bengalees around the world. pic.twitter.com/3wAexloFTI
— BJP Bengal (@BJP4Bengal) December 11, 2020
তবে এরপরই রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন, বাঙালির আবেগের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর এত টান কি কিছুটা একুশের নির্বাচনের কথা মাথায় রেখেই? সাম্প্রতিক সময়ে বাংলার ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, পরম্পরা ইত্যাদির বিষয়ে কথা বলতে শোনা গিয়েছে নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ, জেপি নাড্ডাদের। কয়েকদিন আগেও ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে ঋষি অরবিন্দের কথা টেনে এনে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী।
অথচ লক্ষ্যণীয় বিষয় হল, এর আগে যখনই বাংলা ও বাঙালির কথা হয়েছে, বিজেপি নেতারা স্বামী বিবেকানন্দ থেকে বড়জোর কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সীমাবদ্ধ থেকেছেন। তবে নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে, ততই বাঙালির গভীরে অন্তস্থলে থাকা প্রথিতযশা ব্যক্তিত্বদের কথা শোনা যাচ্ছে বিজেপি নেতাদের মুখে। এবার মোদীর পিছনে দক্ষিণেশ্বর ভবতারিণী মন্দিরও যেন বাঙালি আবেগকেই কিছুটা উস্কে দিয়ে গেল।