দার্জিলিং-সুন্দরবনের প্রশংসা, কৃষকদের জীবনে ‘মিষ্টতা’ আনতে নয়া পথ দেখালেন নমো

কেরলে সেন্ট টেরেসা কলেজে পড়ুয়াদের পুরনো কাপড় দিয়ে খেলনা তৈরি করার উদ্যোগকেও কুর্নিশ জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী(Narendra Modi)।

দার্জিলিং-সুন্দরবনের প্রশংসা, কৃষকদের জীবনে 'মিষ্টতা' আনতে নয়া পথ দেখালেন নমো
ফাইল চিত্র।
Follow Us:
| Updated on: Mar 28, 2021 | 12:28 PM

নয়া দিল্লি: দেশের কৃষকদের আয়ের নতুন পথ দেখালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী(Narendra Modi)। মন কি বাত অনুষ্ঠানের ৭৫ তম অনুষ্ঠানে কৃষিকাজের পাশাপাশি বিকল্প হিসাবে মৌমাছি পালনে জোর দিলেন মোদী। এই বিষয়ে রাজ্যের দুই প্রান্ত- দার্জিলিং (Darjeeling) ও সুন্দরবন(Sundarban)-র প্রশংসা করতেও ভুললেন না তিনি।

“মন কি বাত” (Mann ki Baat) অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী একদিকে যেমন দেশের নানা সমস্যা তুলে ধরে তার সমাধানের উপায় নিয়ে আলোচনা করেন, তেমনই দেশের নানা প্রান্তে বসবাসকারী ভারতীয়দের সাফল্যকেও তুলে ধরেন তিনি। অনুষ্ঠানের শুরুতেই করোনা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। একই সঙ্গে “দাওয়াই ভি, কাড়াই ভি” মন্ত্র অনুসরণ করতে বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সকলের জীবনেই প্রয়োজন আধুনিকতার। বর্তমান পরিস্থতিতে কৃষিকাজে পুরনো পদ্ধতির পাশাপাশি নতুন ও আধুনিক পদ্ধতি আয় বাড়াতে বিশেষ সাহায্য করছে। এইরকমই একটি বিকল্প উপায় হল মৌমাঠি প্রতিপালন।

দার্জিলিংয়ের একটি পাহাড়ি গ্রামের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিংয়ে দুর্গম একটি পাহাড়ি অঞ্চলে অবস্থিত এই গ্রামের বাসিন্দারা মৌমাছি প্রতিপালন করেন ও মধু চাষ করেন। এছাড়া সুন্দরবনের মধু তো বিশ্ববিখ্যাত। দেশের গণ্ডি পার করে সেই মধু বিদেশেও পৌছে যায়। তাই আমি কৃষকভাইদের বলছি যে কৃষিকাজের পাশাপাশি আপনারা মৌমাছি প্রতিপালনও করুন। এতে কম পরিশ্রমেই অতিরিক্ত আয়ের সুযোগ পাবেন।”

আরও পড়ুন: ভেঙে পড়ল নির্মীয়মাণ উড়ালপুল, গুরুতর জখম কর্মীরা

মৌমাছি প্রতিপালনের গুরুত্ব বোঝাতে গিয়ে তিনি নিজের রাজ্য গুজরাটের প্রসঙ্গও টেনে আনেন। প্রধানমন্ত্রী জানান, কয়েক বছর আগে তিনি গুজরাটের বানাসাকাটায় একটি সভায় মৌমাঠি প্রতিপালনের পরামর্শ দিয়েছিলেন। আজ সেই চাষিদের উৎপাদিত বানাসা মধুই বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে ও লক্ষাধিক টাকা আয় হচ্ছে। মৌমাছি প্রতিপালনের নানা দিক আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, “কেবল মধুই নয়, মৌচাক থেকে যে মোম পাওয়া যায়, যা বি-ওয়াক্স নামে পরিচিত, সেগুলিও ওষুধ, কসমেকিট্স সহ নানা পণ্য উৎপাদনে বহুল পরিমাণে ব্যবহৃত হয়। তাই আমি চাই, কৃষকরা নিজেদের জমিতে চাষের পাশাপাশিই মৌমাছি প্রতিপালনও করুক। এতে তাঁদের আয় যেমন বৃদ্ধি পাবে, তেমনই জীবনে মিষ্টতাও আসবে।”

এছাড়াও আজকের অনুষ্ঠানে নারীশক্তির প্রশংসায় ভারতীয় মহিলা ক্রিকেটার মিথিলা রাজ, পিভি সিন্ধুর প্রশংসা করেন। দেশের মেয়েরা খেলাধুলোয় আগ্রহ দেখানো নিয়ে নিজের খুশিও বয়ান করেন প্রধানমন্ত্রী। আগের একটি পর্বে তিনি লাইট হাউস টুরিজ্যমের কথা বলেছিলেন। তার জবাবে দেশেরই বিভিন্ন লাইটহাউস সম্পর্কে যে অজানা তথ্যও তুলে ধরেন।

গুরুদাস নামক এক ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রীকে চেন্নাই ও মহাবলীপূরমের লাইটহাউস সম্পর্কে যে তথ্যগুলি জানিয়েছেন, তা সকলের সঙ্গে ভাগ করে নেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, “চেন্নাইয়ের লাইটহাউসটি এমন একটি লাইটহাউস, যার মধ্যে লিফ্টও রয়েছে। একইসঙ্গে এটিই দেশের একমাত্র লাইট হাউস, যা শহরের মধ্যে অবস্থিত।” মহাবলিপুরম লাইট হাউস সম্পর্কেও জানান গুরুদাসজী। সেখানে পুরনো দিনের বিভিন্ন ল্যাম্পের যে সংগ্রহ রয়েছে, সে সম্পর্কেও আলোচনা করেন। তিনি জানান, দেশে মোট ৭১টি লাইট হাউস চিহ্নিত করা হয়েছে, যা পর্যটনশিল্পে সাহায্য করতে পারে। গুজারাটের জিজ্জুওয়ারায় লাইট হাউস সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী জানান, এই লাইট হাউস থেকে সমুদ্র প্রায় ১০০ কিমি দূরে অবস্থিত। অর্থাৎ আগে হয়তো এখানেই বন্দর ছিল। বর্তমানে সমুদ্র পিছিয়ে যাওয়ায় তা গ্রামের মাঝে অবস্থান করছে।

এছাড়াও বারাণসীর এক ব্যক্তি নিজের বাড়িকেই চড়াই পাখির বাসা বানিয়ে ফেলা, ওড়িশার কেন্দ্রাপারায় একটি গ্রামের বাসিন্দা সাইক্লোন থেকে বাঁচাতে বিগত ১২ বছর ধরে গ্রামের বাইরে মানগ্রোভ অরণ্য তৈরি করার মহৎ প্রচেষ্টারও প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী।

আরও পড়ুন: দাউদাউ করে জ্বলছে কার্ডিওলজি বিভাগ, তড়িঘড়ি সরানো হল প্রায় ১৫০ রোগীকে