PM Narendra Modi: পুরনো সংসদ ভবন ব্রিটিশরা করলেও, খরচ হয়েছে ভারতের টাকা: মোদী

Parliament Building: মঙ্গলবার থেকে নতুন সংসদ ভবনে অধিবেশন শুরু হবে। তবে এই পুরানো সংসদ ভবন ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে রয়ে যাবে বলেও জানান নরেন্দ্র মোদী। তাঁর কথায়, "এটা ভারতের গণতন্ত্রের স্বাধীন যাত্রার এক মহত্মপূর্ণ অধ্যায়। আমরা নতুন ভবনে গেলেও পুরানো সংসদ ভবন থাকবে।"

PM Narendra Modi: পুরনো সংসদ ভবন ব্রিটিশরা করলেও, খরচ হয়েছে ভারতের টাকা: মোদী
পুরানো সংসদ ভবনের ইতিহাস স্মরণ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর।Image Credit source: TV9 Bangla
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 19, 2023 | 10:01 AM

নয়া দিল্লি: দেশের স্বাধীনতার অমৃতকালের সঙ্গেই সংসদ ভবন ৭৫ বছর পূর্ণ করেছে। সেই সংসদ ভবনের আজ শেষ দিন। নতুন সংসদ ভবনে যাওয়ার আগে সেই ৭৫ বছর অতিক্রান্ত, গণতন্ত্রের পীঠস্থান, পুরানো সংসদ ভবনের (Old Parliament Building) ইতিহাস তুলে ধরলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এই সংসদ ভবন ব্রিটিশ শাসকদের তৈরি হলেও এর পিছনে আদতে দেশবাসীরও ঘাম রয়েছে এবং দেশবাসীর টাকাতেই তৈরি হয়েছিল বলে মন্তব্য করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (PM Narendra Modi)।

এদিন পুরানো সংসদ ভবনেই বসে বিশেষ সংসদীয় অধিবেশন। সেই অধিবেশনের শুরুতে বক্তব্য দিতে উঠেই দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু থেকে শুরু করে লাল বাহাদুর শাস্ত্রী, পিভি নরসিমহা রাও, অটল বিহারী বাজপেয়ীকে স্মরণ করে তাঁদের শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তারপর দেশের ৭৫ বছরের সংসদের যাত্রা স্মরণ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর কথায়, “নতুন সংসদ ভবনে যাওয়ার আগে দেশের ৭৫ বছরের সংসদের যাত্রা স্মরণ করা উচিত। ইতিহাসের মাহাত্ম্য স্মরণ করেই সামনের দিকে এগোনো সম্ভব।”

স্বাধীনতার আগে এই সংসদ ভবন ‘ইম্পিরিয়াল লেজিসলেটিভ কাউন্সিল’ ছিল। স্বাধীনতার পর এটা সংসদ ভবন রূপে পরিচিত হয়। সেকথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, “এই ভবনের নির্মাণ বিদেশি শাসকেরা করেছিল ঠিকই। কিন্তু, একটা কথা আমরা কখনও ভুলতে পারি না, আমরা গর্বের সঙ্গে বলতে পারি যে, এই ভবন নির্মাণে দেশবাসীর ঘাম ঝরেছে, দেশবাসীর পরিশ্রম রয়েছে। এমনকি সংসদ ভবন নির্মাণের টাকাও দেশবাসীর।” অর্থাৎ ইমারতটি ব্রিটিশ শাসকদের তৈরি হলেও আদতে এই সংসদ ভবন ভারতের টাকাতেই নির্মিত বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

ইতিহাস ঘাঁটলে জানা যায়, পরাধীন ভারতে ব্রিটিশ শাসকদের পরিকল্পনাতেই ১৯২১ সালে এই সংসদ ভবনের নির্মাণকাজ শুরু হয়। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন লন্ডনের রানি ভিক্টোরিয়ার ছেলে প্রিন্স আর্থার। ব্রিটিশ শাসকদের পরিকল্পনায় নির্মাণকাজ শুরু হলেও নির্মাণকর্মীরা সকলেই ছিলেন ভারতীয়। তারপর ৫ বছর ধরে কাজ চলার পর ১৯২৭ সালে নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়। এই ভবন তৈরিতে খরচ পড়েছিল ৮৩ লক্ষ টাকা। এই ভবনের নাম দেওয়া হয়, ‘ইম্পিরিয়াল লেজিসলেটিভ কাউন্সিল’। তৎকালীন বড়লাট লর্ড আরউইন এই ভবনের উদ্বোধন করেন। এই ভবনে বসেই দেশ শাসনের কাজকর্ম করতেন ব্রিটিশ শাসকেরা। কিন্তু, দু-বছরের মধ্যেই ১৯২৯ সালে ব্রিটিশ শাসকের বিরুদ্ধে শ্লোগান তুলে এই ভবনের ভিতরেই বোমা নিক্ষেপ করেন দুই বাঙালি বিপ্লবী ভগৎ সিং ও বটুকেশ্বর দত্ত। তাঁরা ইনকিলাব ধ্বনিও তোলেন। যদিও শেষপর্যন্ত তাঁরা আত্মসমর্পণ করেন এবং ফাঁসিতে মৃত্যুবরণ করেন ভগৎ সিং। তারপর দেশ স্বাধীন হওয়ার পর এই ভবনটিই গণতন্ত্রের পীঠস্থান সংসদ ভবন হিসাবে পরিচিত হয়। এই সংসদ ভবনের সেন্ট্রাল হলেই ভারতীয় সংবিধান প্রণীত হয়।

দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে ৭৫ বছরের অনেক গণতান্ত্রিক ইতিহাসের সাক্ষী হয়েছে এই সংসদ ভবন। পুরানো সংসদ ভবনের শেষ অধিবেশনে একথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, “৭৫ বছরের যাত্রায় অনেক গণতান্ত্রিক রীতিনীতির সাক্ষী হয়েছে এই সংসদ ভবন। এই সংসদ ভবনে উপস্থিত সকলে সেই রীতিনীতিতে যোগদান করেছেন এবং অনেক ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী হয়েছেন।”

আগামিকাল, মঙ্গলবার থেকে নতুন সংসদ ভবনে অধিবেশন শুরু হবে। তবে এই পুরানো সংসদ ভবন ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে রয়ে যাবে বলেও জানান নরেন্দ্র মোদী। তাঁর কথায়, “এটা ভারতের গণতন্ত্রের স্বাধীন যাত্রার এক মহত্মপূর্ণ অধ্যায়। সারা বিশ্বে ভারতকে গণতান্ত্রিক দেশ হিসাবে পরিচয় করানোর কাজ এই ভবন থেকেই হয়েছে। তাই আমরা নতুন ভবনে গেলেও পুরানো সংসদ ভবন থাকবে এবং আগামী দিনে এটা সবসময় সকলকে প্রেরণা দেবে।”

স্বাধীনতার অমৃতকালে দেশ বিভিন্ন ক্ষেত্রে গৌরবের শিখরে উন্নীত হয়েছে। এপ্রসঙ্গে জি-২০ সামিটের সফলতা থেকে চন্দ্রযান-৩ -র সাফল্য তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। চন্দ্রযান-৩ -এর সাফল্য গোটা বিশ্বে ভারতের নয়া রূপ, আধুনিকতা, বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ও আমাদের বৈজ্ঞানিকের সামর্থ্যকে তুলে ধরেছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাই পুরানো সংসদ ভবন থেকে দেশের বিজ্ঞানীদের কোটি কোটি অভিনন্দন জানান তিনি।