বাংলায় ভোট পরবর্তী হিংসা: গোধরা-পরবর্তী গুজরাটের কথা উল্লেখ করে ‘সিট’ গঠনের আবেদন সুপ্রিম কোর্টে
ধর্ষণের অভিযোগ এনে আবেদনকারী মহিলাদের দাবি পুলিশ এই সব ঘটনায় কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
নয়া দিল্লি: পশ্চিমবঙ্গে ভোট-পরবর্তী হিংসা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) একটি মামলা হয়েছে আগেই। এবার শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হলেন তিন মহিলা। ভোট পরবর্তী পরিস্থিতে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ এনে আদালতের হস্তক্ষেপ দাবি করলেন তাঁরা। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এনভি রামণের বেঞ্চে এই আবেদন করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের তত্ত্বাবধানে স্পেশাল ইনভে্টিগেশন টিম বা ‘সিট’ গঠন করার আর্জি জানিয়েছেন তাঁরা। আদালতে সেই আবেদন গৃহীত হয়েছে।
আদালতে দুই মহিলার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবেদন করেছেন বিশ্বজিৎ সরকার। অভিযোগ, হিংসা ও ধর্ষণের মতো ঘটনায় কোনও ব্যবস্থা নেয়নি রাজ্য পুলিশ ও রাজ্য সরকার। গুজরাটে গোধরা-পরবর্তী সাম্প্রদায়িক হিংসার কথা উল্লেখ করা হয়েছে আবেদনে। বলা হয়েছে, গুজরাটের মামলায় আদালত একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল, যেখানে আদালতের তত্ত্বাবধানে সিট গঠন করে তদন্ত হয়েছিল। এ বারও একই ভাবে তদন্তের আর্জি জানিয়েছেন তাঁরা।
এক ৬০ বছর বয়সী প্রৌড়া আবেদনে জানিয়েছেন ৬ বছরের নাতির সামনে তাঁকে গণধর্ষণ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাঁর বৌমাকেও মারধর করে অভিযুক্তরা। ঘটনা ৩ মে অর্থাৎ ভোটের ফল প্রকাশের পরের দিনের। আবেদনে বলা হয়েছে, ‘ওই মহিলার বাড়ি ঘিরে ফেলেন ১০০-২০০ জন লোক। এর মধ্যে ছিল তৃণমূল সমর্থকেরাও। পরিবারকে ঘর ছাড়তে বলা হয়। নির্যাতিতার বৌমাকে নৃশংসভাবে মারধর করা হয়।’ ৪ মে রাত সাড়ে ১২ টা নাগাদ তৃণমূলের পাঁচ কর্মী আবেদনকারীর বাড়িতে আসে বলে অভিযোগ। অভিযোগ ওই মহিলাকে চড় মেরে, ধর্ষণ করা হয়।
অন্য দিকে, আর এক কিশোরীর অভিযোগ, চারজন মিলে তাঁকে জঙ্গলে টেনে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেছে। পরিবারের রাজনৈতিক পরিচয়ের জন্যই তাঁকে এই ঘটনার শিকার হতে হয়েছে বলে অভিযোগ। তাঁকে এফআইআর তুলে নিতে চাপ দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগে জানিয়েছেন ওই মহিলা। দ্বিতীয় আবেদনকারী এক ১৭ বছরের কিশোরী। অভিযোগ জানিয়েছেন এক ১৯ বছরের যুবতীও। তাঁর দাবি, কোনও বিচারের ব্যবস্থা নেই, বদলে মুখ বন্ধ রাখার চেষ্টা চলছে।
আরও পড়ুন: ‘আমি কিছু বলিনি…’, টুইট ‘ডিলিট’ করে জল্পনা আরও বাড়ালেন প্রণব-পুত্র
এর আগে পশ্চিমবঙ্গে ভোট পরবর্তী হিংসার অন্য একটি মামলায় রাজ্যকে নোটিস দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। হিংসার ঘটনায় ‘সিট’ গঠন করে তদন্তের আর্জি জানিয়ে ওই মামলা হয়েছিল শীর্ষ আদালতে। আর সেই মামলায় আজ, মঙ্গলবার রাজ্য ও কেন্দ্র উভয়কেই নোটিস দেওয়া হয়েছে। এই মামলায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, মহিলা কমিশন ও এসসিএসটি কমিশনকে পার্টি হিসেবে যুক্ত করার আবেদন জানিয়েছেন আবেদনকারীদের পক্ষের আইনজীবী পিঙ্কি আনন্দ।