Two-Finger Test: ধর্ষিতার ‘দুই আঙুল পরীক্ষা’ নিষিদ্ধ, গুরুত্বপূর্ণ রায় সুপ্রিম কোর্টের
Supreme Court bans Two-Finger Test: সোমবার (৩১ অক্টোবর) ধর্ষণের মামলায় 'টু ফিঙ্গার টেস্ট' বা 'দুই আঙুলের পরীক্ষা' ব্যবস্থা নিষিদ্ধ ঘোষণা করল বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচুর ও হিমা কোহলির সমন্বয়ে গঠিত সুপ্রিম কোর্টের একটি বেঞ্চ।
নয়া দিল্লি: সোমবার (৩১ অক্টোবর) এক ধর্ষণের মামলায় গুরুত্বপূর্ণ রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট। ধর্ষিতার ‘টু ফিঙ্গার টেস্ট’ বা ‘দুই আঙুলের পরীক্ষা’ নিষিদ্ধ ঘোষণা করল বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় ও বিচারপতি হিমা কোহলির বেঞ্চ। বেঞ্চ আরও জানিয়েছে, এরপর কোনও ধর্ষণ মামলায় ‘টু ফিঙ্গার টেস্টের’ নির্দেশ দেওয়া হলে, তাদের অভব্য আচারণের জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হবে। নিম্ন আদালতে ধর্ষণের দায়ে দোষী সাব্যস্ত এক ব্যক্তির সাজা বহাল রেখেছিল তেলঙ্গানা হাইকোর্ট। হাইকোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতে আবেদন করা হলে, সেই মামলার শুনানির শেষে গুরুত্বপূর্ণ রায় দিল আদালত।
বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ বলেছে, “এই আদালত বারবার ধর্ষণ এবং যৌন নিপীড়নের অভিযোগের মামলায় দুই আঙুলের পরীক্ষার ব্যবহারকে অস্বীকার করেছে। এই পরীক্ষার কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। এর ফলে মহিলাদের ফের যৌন হেনস্থার শিকার হতে হয়। দুই আঙুলের পরীক্ষা করা উচিত নয়। যৌনতায় ক্ষেত্রে সক্রিয় কোনও মহিলাকে ধর্ষণ করা যায় না, এমন একটি ভুল ধারণার উপর ভিত্তি করে এই পরীক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু, কোনও মহিলার সাক্ষ্যের বিশ্বাসযোগ্যতা তাঁর যৌনতার ইতিহাসের উপর নির্ভর করে না। যখন কোনও মহিলা দাবি করেন যে তাঁকে ধর্ষণ করা হয়েছে, তখন, শুধুমাত্র তিনি যৌন ক্ষেত্রে সক্রিয় বলেই তাঁকে অবিশ্বাস করা, একটি পুরুষতান্ত্রিক এবং লিঙ্গ বৈষম্যমূলক কাজ।”
আদালত সাফ জানিয়েছে, আর কোনও ধর্ষিতা বা যৌন নির্যাতনের শিকার হওয়া মহিলার ‘দুই আঙুল পরীক্ষা’ করা যাবে না। এই বিষয়টা নিশ্চিত করার জন্য কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রককে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এই বিষয়ে একটি নির্দেশিকা তৈরি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই নির্দেশিক যাতে দেশের সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে পৌঁছে যায়, সেই বিষয়টা নিশ্চিত করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারগুলিকে। প্রসঙ্গত, এতদিন পর্যন্ত ধর্ষণের মামলার ডাক্তারি পরীক্ষার অংশ হিসেবে এই পরীক্ষা করা হত। আঙুলের মাধ্যমে নির্যাতিতার যৌনাঙ্গের শিথিলতা পরীক্ষা করা হত।
একই সঙ্গে আদালত, এই বিষয়ে স্বাস্থ্যকর্মীদের নিয়ে কর্মশালা আয়োজনের নির্দেশও দিয়েছে। ওই কর্মশালায় স্বাস্থ্যকর্মীদের যৌন নির্যাতনের শিকার হওয়া মহিলাদের যথাযথ পরীক্ষা পদ্ধতি শেখানো হবে। মেডিক্যাল স্কুলগুলির পাঠ্যক্রমও নতুন করে পর্যালোচনা করতে বলা হয়েছে। যাতে কোথাও ধর্ষণ ও যৌন হেনস্থার ক্ষেত্রে অভিযোগকারিনীর দুই আঙুল পরীক্ষার পরামর্শ দেওয়া না হয়, তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।