Supreme Court on Trial Court: ‘নিম্ন আদালত’ কথাটা বলা যাবে না আর, কী বলতে হবে জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট
Supreme Court on Trial Court: ট্রায়াল কোর্ট বা জেলা আদালতকে ভারতে গুরুত্ব দেওয়া হয় না বলে কিছুদিন আগেই উল্লেখ করেছিলেন বিচারপতি ওকা। তিনি একটি বক্তৃতায় বলেছিলেন, "আজও বিচার ব্যবস্থা সাধারণ মানুষের আশা পূরণ করতে পারে না। তার একটা অন্যতম কারণ হল, এ দেশে ট্রায়াল কোর্টকে গুরুত্ব দেওয়া হয় না।"
নয়া দিল্লি: বিষয়টা নিয়ে আপত্তি ছিল অনেকদিনের। ট্রায়াল কোর্ট-কে লোয়ার কোর্ট বা নিম্ন আদালত বলে অভিহিত করা নিয়ে কিছুদিন আগে এ বিষয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ও। এবার সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিল যাতে রেজিস্ট্রি-তে লোয়ার কোর্ট বা নিম্ন আদালত কথাটা আর ব্যবহার না করা হয়। বিচারপতি এএস ওকা ও বিচারপতি উজ্জ্বল ভুয়ানের ডিভিশন বেঞ্চ এই নির্দেশ দিয়েছে। একটি মামলার নির্দেশনামায় উল্লেখ করা হয়েছে সে কথা।
খুনে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন এমন দুই ব্যক্তির আবেদনের শুনানি হচ্ছিল সুপ্রিম কোর্টে। এলাহবাদ হাইকোর্টের একটি নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা করেছিলেন ওই দুই ব্যক্তি। সেই মামলায় রেজিস্ট্রারের কাছে বেঞ্চ বেশ কিছু নথি দিতে বলে। ট্রায়াল কোর্ট রেকর্ডে থাকা উত্তর প্রদেশ সরকার ও দোষী সাব্যস্ত দুজনের আইনজীবীদের বক্তব্য জানতে চায় আদালত। সেই নির্দেশনামাতেই বলা হয়েছে, রেজিস্ট্রিতে আর লোয়ার কোর্ট লেখা যাবে না, লিখতে হবে ট্রায়াল কোর্ট। এমনকী রেকর্ড-কেও লোয়ার কোর্ড রেকর্ড (LCR) না বলে ট্রায়াল কোর্ট রেকর্ড(TCR) বলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সাম্প্রতিককালে প্রধান বিচারপতি সহ শীর্ষ আদালতের একাধিক বিচারপতি ওই লোয়ার কোর্ট নামটি নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন। তাঁরা মনে করেন, এভাবে নিম্ন আদালত বলে জেলা আদালতের বিচারকদের ছোট করা হয়।
ট্রায়াল কোর্ট বা জেলা আদালতকে ভারতে গুরুত্ব দেওয়া হয় না বলে কিছুদিন আগেই উল্লেখ করেছিলেন বিচারপতি ওকা। তিনি একটি বক্তৃতায় বলেছিলেন, “আজও বিচার ব্যবস্থা সাধারণ মানুষের আশা পূরণ করতে পারে না। তার একটা অন্যতম কারণ হল, এ দেশে ট্রায়াল কোর্টকে গুরুত্ব দেওয়া হয় না। অথচ ওটাই বিচার ব্যবস্থার প্রথম ধাপ।” সেখানেই তিনি বলেছিলেন, “এত বছর ধরে আমরা জেলা আদালতকে নিম্ন আদালত বলে আসছি। কোনও কোর্টই লোয়ার কোর্ট নয়, সব আদালতই আদালত।” তিনি আরও বলেছিলেন, “সাধারণ মানুষ সবার আগে বিচার পায় জেলা আদালতে। অনেক মানুষ, যাঁদের মামলা লড়ার আর্থিক ক্ষমতা থাকে না, তাঁদের কাছে জেলা আদালতই যাওয়ার শেষ জায়গা।”
এছাড়া ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেছিলেন, “বিচার ব্যবস্থায় যাতে সমতা থাকে, সেদিকে নজর রাখা প্রয়োজন। আমরা সবসময়েই একটা অধীনতার ধারনা পুষে চলেছি। আদালতের প্রতি আমাদের মানসিকতারও পরিবর্তন দরকার।” সুপ্রিম কোর্ট বা হাইকোর্টের বিচারপতিরাই উচ্চতর এমন ভাবনার কোনও কারণ নেই বলেই মনে করেছিলেন তিনি।