চাকরিদাতার দেওয়া ‘টার্মস অ্যান্ড কন্ডিশনস’ নিয়ে প্রশ্ন তুলতেই পারেন কর্মী: সুপ্রিম কোর্ট
Supreme Court: উত্তর প্রদেশে নিয়ম মেনে পরীক্ষা দিয়ে চাকরি পাওয়ার পরও বেশ কয়েকজন শিক্ষক-শিক্ষিকাকে চুক্তিভিত্তিতে চাকরি দেওয়া হয়েছে। সেই সংক্রান্ত মামলার শুনানি হয় শীর্ষ আদালতে।
নয়া দিল্লি: সরকারি হোক বা বেসরকারি, প্রত্যেক চাকরিরই কিছু শর্ত রয়েছে। চাকরিতে যোগ দেওয়ার সময় সেই শর্তের তালিকা জানানো হয় কর্মীকে। সাধারণত সেই শর্ত জেনেবু ঝে, সম্মতি দিয়ে স্বাক্ষর করে তবেই চাকরিতে যোগ দেন কর্মীরা। তবে সমস্যা থাকলেও কি সেই শর্তকেই শিরোধার্য বলে মানতে হবে? চাকরি করতে গিয়ে কর্মীর কোনও ক্ষতি হয় তাহলেও কি সেই শর্ত মেনেই কাজ করতে হবে? একটি মামলায় সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে যে, নিজেকে ক্ষতিগ্রস্ত বলে মনে মনে করলে একজন কর্মী চাকরিদাতার দেওয়া শর্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলতেই পারেন। উত্তরপ্রদেশে বেশ কয়েকজন অধ্যাপক-অধ্যাপিকার করা একটি মামলায় এমনটাই জানিয়েছে শীর্ষ আদালত। শুক্রবার বিচারপতি উদয় উমেশ ললিত ও বিচারপতি অজয় রাস্তোগীর ডিভিশন বেঞ্চে হয় এই মামলার শুনানি।
কী সেই মামলা?
উত্তর প্রদেশে বেশ কয়েকজন শিক্ষক-শিক্ষিকা এই মামলা করেন। তাঁদের দাবি, সব নিয়ম মেনে পরীক্ষা দিয়ে চাকরি পেলেও স্থায়ী অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ করা হয়নি। উত্তর প্রদেশ স্টেট ইউনিভার্সিটি অ্যাক্টের নিয়ম মেনে পরীক্ষা দিয়ে চাকরি পেয়েছেন তাঁরা। সেই চাকরি নিয়োগ পত্র বা অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটারে যে শর্ত দেওয়া হয়েছে, তাতে স্থায়ী কর্মী হিসেবে কাজ পাচ্ছেন না তাঁরা। তিন বছর পর্যন্ত চুক্তি ভিত্তিতে কাজ করতে হবে। আর স্বাভাবিকভাবেই একজন স্থায়ী কর্মীর সুযোগ-সুবিধাও পাচ্ছেন না তাঁরা।
এই অভিযোগেই মামলা করেন তাঁরা। মামলাকারীরা জানান, যে নিয়মে পরীক্ষা দিয়ে তাঁরা চাকরি পেয়েছেন, তাতে তাঁদের নির্দিষ্ট স্কেলে বেতন ও অন্যান্য সুবিধা প্রাপ্য। আর এই মামলায় ইউনিভার্সিটির তরফ থেকে জানানো হয় যে, এই শর্ত মেনেই চাকরিতে যোগ দিয়েছেন অধ্যাপকেরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই দাবি নস্যাৎ করে আদালত জানায় যে একবার শর্ত মেনে নিলে, আর কোনও প্রশ্ন তোলা যাবে না এই দাবি সঠিক নয়। চাকরিতে ক্ষতি হলে অবশ্যই প্রশ্ন তুলতে পারবেন যে কেউ।
ঠিক কী বলেছে আদালত?
আদালতের তরফে বিচারপতিরা বলেন, ‘অবশ্যই চাকরি প্রার্থী বা কর্মীর থেকে চাকরিদাতার জোর বেশি। তারা শর্ত দিতেই পারেন কর্মীকে।’ আদালত জানায় যে সাধারণত সেই শর্ত নিয়ে প্রশ্ন তোলেন না কর্মীরা। তবে আদলত জানায়, যদি ওই শর্তের জন্য কর্মীর চাকরিই প্রশ্নের মুখে পড়ে, তাহলে অভিযোগ জানাতে পারেন তিনি। চাকরিদাতাই শর্তের ক্ষেত্রে শেষ কথা ও কর্মীর হাতে কোনও ক্ষমতাই থাকবে না, এমনটা ঠিক নয়। প্রশ্ন তোলার ক্ষেত্রে কোনও বাধা থাকবে না কর্মীদের।
এই মামলার ক্ষেত্রে আদালত জানায়, বিশ্ববিদ্যায়ের নিয়ম মেনে পরীক্ষা দিয়েছেন এই অধ্যাপকেরা। তাই তাদের নিয়োগপত্রে স্থায়ী হিসেবে চাকরি পাওয়ার উল্লেখ থাকা উচিৎ। ২০০৯-এর সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি অ্যাক্টের আওতায় এই অধ্যাপকদের স্থায়ী হিসেবে নিয়োগ করা উচিৎ বলে জানিয়ে দেয় আদালত।