‘উগ্র জাতীয়তাবাদের জন্য এই বেহাল অবস্থা’, অস্ট্রেলিয়ার প্রতিবেদনের জবাবে ভুল স্বীকার করার বার্তা দিল্লির

মোদী সরকার কী কী উদ্যোগ নিয়েছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে, সেই হিসেবও দিল ভারত সরকার (Government of India)।

'উগ্র জাতীয়তাবাদের জন্য এই বেহাল অবস্থা', অস্ট্রেলিয়ার প্রতিবেদনের জবাবে ভুল স্বীকার করার বার্তা দিল্লির
ফাইল ছবি। পিটিআই
Follow Us:
| Updated on: Apr 27, 2021 | 5:45 PM

নয়া দিল্লি: উগ্র জাতীয়তাবাদের জন্যই করোনার সুনামিতে ডুবে গিয়েছে ভারত। ভারতের বর্তমান করোনা পরিস্থিতির জন্য নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi) সরকারের ব্যর্থতাই দায়ী। এক প্রতিবেদনে এমনটাই দাবি করেছিল অস্ট্রেলিয়ার (Australia) এক সংবাদপত্র। সেই প্রতিবেদন প্রকাশের পরই ‘সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন’ বলে দাবি করে কড়া প্রতিক্রিয়া দিল ভারত। অবিলম্বে এই সংবাদপত্রকে ভুল স্বীকার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রের তরফে।

মঙ্গলবার অস্ট্রেলিয়ার ভারতীয় দূতাবাসের পক্ষ থেকে ওই সংবাদমাধ্যমকে একটি বার্তা দেওয়া হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ‘প্রতিবেদনের প্রকাশিত তথ্য সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। এর মাধ্যমে ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা হয়েছে।’ করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মোদী সরকার কী কী ব্যবস্থা নিয়েছে সেই হিসেবও দিয়ে দিয়েছে নয়া দিল্লি। ভারতীয় দূতাবাসের ওই বার্তায় স্বাক্ষর করেছেন ভারতের ডেপুটি হাইকমিশনার পিএস কার্তিকগেয়ান।

কি লেখা হয়েছিল অস্ট্রেলিয় সংবাদপত্রের ওই প্রতিবেদনে?

সোমবার ‘দ্য অস্ট্রেলিয়’ নামে ওই সংবাদপত্রে এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ভারতের দেওয়া চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে ‘দ্য টাইমস’ পত্রিকায় প্রথম ওই প্রতিবেদন লিখেছিলেন ফিলিপ শেরওয়েল। পরে ‘দ্য অস্ট্রেলিয়’ নামে ওই পত্রিকায় সেই প্রতিবেদন ছাপা হয়। প্রতিবেদনের শিরোনাম, ‘মোদী লিডস ইন্ডিয়া আউট অফ লকডাউন অ্যান্ট লিডস ইনটু ভাইরাল অ্যাপোক্যালিপ্স।’ অর্থাৎ লকডাউন থেকে বের করে ভাইরাসের মধ্যে ভারতকে ফেলে দিয়েছেন মোদী।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মোদীই ভারতকে এই কোভিড বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিয়েছেন। ভারতে ঔদ্ধত্য, উগ্র জাতীয়তাবাদ ও প্রশাসনিক ব্যর্থতার জন্যই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ভারতে যখন সংক্রমণ বাড়ছে, তখন মোদী তাঁর সভায় জমায়েত দেখে খুশি হচ্ছেন। দেশের স্বাস্থ্য পরিষেবা কার্যত ভেঙে পড়েছে। হাসপাতালে বেড পাওয়া যাচ্ছে না, অক্সিজেন নেই, স্বাস্থ্যকর্মীরও অভাব রয়েছে। মোদী ভিড় দেখে উচ্ছ্বসিত অথচ দেশের মানুষের অক্সিজেনের অভাবে দমবন্ধ হয়ে যাচ্ছে।

আরও পড়ুন: ‘ভারত যেভাবে সাহায্য করেছিল’, প্রতিদানে সাহায্যে আশ্বাস দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন

জবাবে কী লিখল দিল্লি?

সংবাদমাধ্যমকে বার্তা দিয়ে ভারতের তরফ থেকে লেখা চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘কোনও তথ্যের সত্যতা যাচাই না করে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন কথা লেখা হয়েছে প্রতিবেদনে। ভারত সরকারের কাছ থেকে এই সংক্রান্ত কোনও তথ্য যাচাই করা হয়নি। ভারতে করোনা নিয়ন্ত্রণের যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা গোটা বিশ্বের কাছে প্রশংসিত হয়েছে। আর এই প্রতিবেদনে ভারতের সেই উদ্যোগকে অপমান করা হয়েছে।’

আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ‘ভারতে বিশ্বের সবথেকে কঠোর ও দীর্ঘতম লকডাউন জারি করে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। দেশজুড়ে ব্যাপক হারে বাড়ানো হয় করোনা পরীক্ষার প্রক্রিয়া। কম সময়ে দেশজুড়ে টিকাকরণের রেকর্ড তৈরি করেছে ভারত। ‘ভ্যাকসিন মৈত্রী’ উদ্যোগে ৮০ টি দেশকে ভ্যাকসিন পাঠানো হয়েছে। পিপিই কি পাঠানো হয়েছে ১৫০টি দেশে। বিশ্ব জুড়ে কয়েক লক্ষ মানুষের প্রাণ বাঁচানো হয়েছে।  বর্তমান পরিস্থিতিতে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় করোনা নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা নিচ্ছে ভারত। আমরা আত্মবিশ্বাসী যে কিছুদিনের মধ্যেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। এই ধরনের প্রতিবেদন শুধুই ভুল খবর ছড়ায় আর নেতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরি করে। অতিমারীর বিরুদ্ধে মানুষের যে যুদ্ধ তাকে অপমান করা হয়েছে। আশা করছি দ্রুত আপনারা ভুল স্বীকার করে সেই বার্তা প্রকাশ করবেন।’