Kashi-Gyanvapi Dispute Case : ‘মন্দির ভাঙলেও বদলায়নি চরিত্র’, কাশী-জ্ঞানবাপী মামলায় দাবি ভগবান বিশ্বেশ্বরের ‘বন্ধু’র
Kashi-Gyanvapi Dispute Case : কাশী বিশ্বনাথ মন্দির ও জ্ঞানবাপী মসজিদ নিয়ে বিবাদ বহুদিনের। পাশাপাশি দুই ধার্মিক স্থাপত্য নিয়ে ভক্তদের রেষারেষি পৌঁছেছে আদালতে। এই মামলার শুনানি চলাকালীনই মামলাকারী ‘ভগবান বিশ্বেশ্বরের বন্ধু’ আদালতে দাবি করেন, কাশী বিশ্বনাথ মন্দির হয়ত বহুবার ভাঙা হয়েছে, তবে এর ধার্মিক চরিত্র কখনও বদল হয়নি।
প্রয়াগরাজ : কাশী বিশ্বনাথ মন্দির ও জ্ঞানবাপী মসজিদ নিয়ে বিবাদ বহুদিনের। পাশাপাশি দুই ধার্মিক স্থাপত্য নিয়ে ভক্তদের রেষারেষি পৌঁছেছে আদালতে। এই মামলার শুনানি চলাকালীনই মামলাকারী ‘ভগবান বিশ্বেশ্বরের বন্ধু’ আদালতে দাবি করেন, কাশী বিশ্বনাথ মন্দির হয়ত বহুবার ভাঙা হয়েছে, তবে এর ধার্মিক চরিত্র কখনও বদল হয়নি। তাঁর দাবি, ভগবান বিশ্বেশ্বরের মন্দিরটি প্রাচীনকাল থেকেই সেখানে অবস্থিত। উল্লেখ্য, ভারতীয় আইন অনুযায়ী ভগবান কারোর মাধ্যমে আদালতে মামলা করতে পারেন। এর আগে রাম মন্দির বিবাদের সময়ও রামলালা তাঁর ‘বন্ধু’র মাধ্যমে মামলা করেছিলেন। এই ক্ষেত্রেও ভগবান বিশ্বেশ্বর তাঁর ‘বন্ধু’র মাধ্যমে এলাহাবাদ হাই কোর্টে দায়ের করেছেন মামলা। সেই মামলার শুনানি চলছে এলাহাবাদ হাই কোর্টের বিচারপতি প্রকাশ পড়িয়ার এজলাশে।
ভগবানের ‘বন্ধু’র হয়ে মামলা লড়া আইনজীবী বিজয় শংকর রস্তোগি আদালতে বলেন, “বাদীর বক্তব্য থেকে এটা স্পষ্ট যে বিবাদের মূলে থাকা সম্পত্তি, ভগবান বিশ্বেশ্বরের মন্দিরটি প্রাচীন কাল থেকে অর্থাৎ সত্যযুগ থেকেই সেখানে অবস্থিত এবং স্বয়ম্ভু ভগবান বিশ্বেশ্বর বিতর্কিত কাঠামোতে অবস্থান করছেন। মন্দিরটি যে কোনও উপায়ে ধ্বংস হয়ে গেলেও এটির ধর্মীয় চরিত্র কখনই পরিবর্তিত হয়নি। তাই, উপাসনার স্থান (বিশেষ বিধান) আইন, ১৯৯১-এর ৪ নং ধারা এই মন্দিরের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। কারণ পুরোনো মন্দিরের কাঠামোটি ১৫ শতকের আগে নির্মিত হয়েছিল।” উল্লেখ্য, এলাহাবাদ হাই কোর্টে বারাণসীর কাশী বিশ্বনাথ মন্দির কমপ্লেক্সের কাছে অবস্থিত জ্ঞানবাপী মসজিদ হিন্দুদের কাছে হস্তান্তর এবং সেখানে প্রার্থনা করার অনুমতি চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতেই এদিন হাই কোর্টে মামলাটির শুনানি হয়। এই ক্ষেত্রে, আঞ্জুমান-ই-আতজনিয়া কমিটি এবং উত্তর প্রদেশ সুন্নি সেন্ট্রাল ওয়াকফ বোর্ডের তরফে পাঁচটি পিটিশন দাখিল করা হয়েছে। বিচারপতি প্রকাশ পড়িয়ার একক বেঞ্চে এই আবেদনগুলির শুনানি হচ্ছে। শুনানিতে, উত্তর প্রদেশ সুন্নি সেন্ট্রাল ওয়াকফ বোর্ড এবং স্বঘোষিত দেবতা বিশ্বেশ্বরের পক্ষ থেকে সওয়াল জবাব উপস্থাপন করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, জ্ঞানবাপী মসজিদ বারাণসীর কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের কাছে অবস্থিত। বর্তমানে মুসলিম সম্প্রদায় সম্মিলিতভাবে দিনে পাঁচবার নমাজ আদায় করেন এই মসজিদে। মসজিদটি আঞ্জুমান-ই-আন্ত্রাজিয়া কমিটি দ্বারা পরিচালিত হয়। এর আগে ১৯৯১ সালে বারাণসীর সিভিল জজের আদালতে এই মসজিদ নিয়ে কয়েকটি আবেদন করা হয়েছিল। এই আবেদনে দাবি করা হয়েছিল যে জ্ঞানবাপী মসজিদ যে জায়গায় অবস্থিত, সেখানে আগে বিশ্বেশ্বরের মন্দির ছিল এবং শৃঙ্গার গৌরীর পূজা করা হত। মুঘল শাসকরা এই মন্দিরটি ভেঙ্গে দখল করে এখানে একটি মসজিদ নির্মাণ করেছিল। এই আবহে দাবি করা হয়েছে যে, জ্ঞানবাপী কমপ্লেক্সটি খালি করে তা হিন্দুদের হাতে তুলে দেওয়া উচিত এবং সেখানে ফের গৌরী পূজা করার অনুমতি দেওয়া উচিত। এদিকে কাশী বিশ্বনাথ মন্দির ট্রাস্টের সঙ্গে জ্ঞানবাপী মসজিদের কোনো বিরোধ নেই। এমনকি কয়েক মাস আগে উদ্বোধন হওয়া কাশী বিশ্বনাথ করিডোরের জন্য জ্ঞানবাপী মসজিদ জমিও দান করেছে। এই আবহে মন্দির ট্রাস্ট মসজিদ হস্তান্তরের এই মামলার সঙ্গে কোনও ভাবে যুক্ত নয়। তবে স্বঘোষিত দেবতা বিশ্বেশ্বর পক্ষ গত প্রায় তিন দশক ধরে তৃতীয় পক্ষ হিসেবে আদালতে এই মামলা চলছে।