Zomato : C/o লাইফ! ভাগ্যের পরিহাসে শিক্ষক থেকে জ়োম্যাটো ডেলিভারি এজেন্ট, সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে পেলেন ‘উপহার’

Zomato : পেশায় শিক্ষক। ভাগ্যের পরিহাসে লকডাউনে চাকরি হারিয়েছেন। গত চার মাস ধরে সাইকেলে চেপে জ়োম্যাটোর খাবার ডেলিভারি করেন।

Zomato : C/o লাইফ! ভাগ্যের পরিহাসে শিক্ষক থেকে জ়োম্যাটো ডেলিভারি এজেন্ট, সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে পেলেন 'উপহার'
ছবি সৌজন্যে : টুইটার
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Apr 12, 2022 | 11:20 PM

জয়পুর : এই ডিজিটাল যুগে আমরা ঘরে বসে এক ক্লিকে খাবারটুকুও পেয়ে যাই। জ়োম্যাটো, সুইগির ডেলিভারি এজেন্টরা রোদে পুড়ে, ঘামে ভিজে অর্ডার মতো বাড়ি বাড়ি খাবার পৌঁছে দেন। কারোর হয়ত বাইক আছে। কেউ আবার সাইকেল চালিয়েই মাইলের পর মাইল সফর করেন করেন কাস্টোমারের কাছে খাবার পৌঁছে দিতে। ঠাণ্ডা ঘরে বসে ডেলিভারি এজেন্টের এনে দেওয়া গরম তন্দুরি চিকেনে সুখের কামড় দিতে দিতে ভেবেও দেখি না এই ডেলিভারি এজেন্টরা কোন প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে আমাদের কাছে সময়মতো খাবার পৌঁছে দেয়। কিন্তু রাজস্থানের এক বাসিন্দা এরকম এক ডেলিভারি এজেন্টের হাতে তুলে দিলেন বাইক। সেই বাইক কেনার পিছনে কৃতিত্ব একা তাঁরই নয়। সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী অনেকেরই অবদান রয়েছে এইখানে।

প্রায় রোজই রাস্তায় কোনও খাবার ডেলিভারি এজেন্টকে সাইকেলে করে খাবার পৌঁছে দিতে দেখা যায়। কিন্তু ক’জন তাঁদের গল্প শোনেন! বাইকের বদলে সাইকেলেই বা কীভাবে তাঁরা তাড়াতাড়ি খাবার পৌঁছে দেন। রাজস্থানের এক বাসিন্দা এরকম এক ডেলিভারি এজেন্টেরে গল্প শুনলেন। শুধু শুনলেনই না তাঁর জন্য় ক্রাউড ফান্ডিংয়ের মাধ্যমে টাকা জোগাড় করে বাইকও উপহার দিলেন। ঘটনার সূত্রপাত একটি জ়োম্যাটো অর্ডারকে ঘিরে। রাজস্থানের বাসিন্দা আদিত্য শর্মা একটি জ়োম্যাটো অর্ডার করেছিলেন। তিনি জানিয়েছেন নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই তিনি তাঁর অর্ডার করা খাবারটি পেয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁকে অবাক করে ডেলিভারি এজেন্টের ‘বাহন’। বাইক নয়, সাইকেলে চেপেই ৪২ ডিগ্রি তাপমাত্রায় সেই ডেলিভারি এজেন্ট সময়ের মধ্যে খাবার পৌঁছে দিয়েছেন। মন ছুঁয়ে যায় রাজস্থানের সেই বাসিন্দার।

তিনি ডেলিভারি এজেন্টের একটি ছবি পোস্ট করে একটি টুইট করেন। তিনি সেখানে লিখেছেন, “আজ আমার অর্ডার সময়মতো আমার কাছে পৌঁছে গেছে এবং আমি অবাক হয়েছি ডেলিভারি বয় সাইকেলে করে এসেছিলেন। রাজস্থানের আজ আমার শহরের তাপমাত্রা প্রায় ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই প্রচণ্ড গরমেও তিনি সময়মতো আমার অর্ডার পৌঁছে দিয়েছেন।” তারপর তিনি সেই ডেলিভারি এজেন্টের সঙ্গে আলাপতচারিতা করেন। কথাবার্তায় উঠে আসে ডেলিভারি এজেন্টের নাম দুর্গা মিনা। তাঁর বয়স ৩১ বছর। পেশায় তিনি শিক্ষক ছিলেন। কিন্তু করোনা অতিমারিতে তিনি সেই চাকরি হারিয়েছেন। তাই বাধ্য হয়েই এই পেশায় আসা। গত চারমাস ধরে তিনি খাবার ডেলিভারিই করছেন। আদিত্য শর্মা জানিয়েছেন যে তিনি ইংরেজিতে কথা বলছিলেন।

তবে এখানেই গল্প শেষ নয়। মিনা দুর্গা তাঁর স্নাতক শেষ করেছেন। তবে এখানেই থেমে থাকতে চান না তিনি। এরপর স্নাতকোত্তর করতে চান। এছাড়াও একটি ল্যাপটপ ও বাইক কেনার জন্য টাকা জমাচ্ছেন তিনি। ল্যাপটপে অনলাইনে ছাত্র-ছাত্রীদের পড়ানোর ভাবনচিন্তা রয়েছে তাঁর। আর বাইক হলে তাঁর জ়োম্যাটোর খাবার ডেলিভারির কাজটা আরও সহজে এবং তাড়াতাড়ি হয়। মিনা বলেছেন, “সাইকেলে করে ১০-১২ টি অর্ডার ডেলিভারি করার পর নিঃশ্বাস নেওয়ার সময় পাই না আমি। আমার একটি বাইক থাকলে এই কাজ অনেক সহজ হত।” মিনার মুখ তাঁর বাইক কেনার প্রয়োজনীয়তা শুনে রাজস্থানের এই বাসিন্দা বাইকের জন্য ৭৫ হাজার টাকা ক্রাউড ফান্ডিংয়ের পরিকল্পনা করেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় আর্জি জানিয়ে তিনি একটি পোস্ট করেন। তিনি সেখানে লিখেছেন, “আমি ৭৫ হাজার টাকা ক্রাউড ফান্ডিং করতে চাই। আমি জানি অর্থের পরিমাণটা অনেক। কিন্তু যদি এই পোস্টটি ৭৫ হাজার মানুষের কাছে পৌঁছে যায় এবং সবাই ১ টাকা করেও দেন তাহলে আমরা তাঁর বাইক কেনার ইচ্ছে পূরণ করতে পারি।”

এই পোস্টের ঠিক ৪ ঘণ্টার মধ্যেই তিনি বিপুল সাড়া পান। এই অল্প সময়ের মধ্য়েই ৭৫ হাজার টাকা জোগাড় করার তাঁর লক্ষ্য পূরণ হয়ে যায়। তারপর মিনা দুর্গার জন্য একটি বাইকও কেনা হয়। আদিত্য শর্মার এই পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানিয়েছেন নেটিজ়েনরা। অনেকে আবার ভবিষ্য়তের স্বপ্ন পূরণের জন্য মিনা দুর্গাকে শুভেচ্ছাও জানিয়েছেন। সত্যিই সোশ্যাল মিডিয়া কী জিনিস!

আরও পড়ুন : PM Narendra Modi : মোদীর মুকুটে নয়া পালক, প্রথম ব্যক্তি হিসেবে পাচ্ছেন লতা দীননাথ মঙ্গেশকর সম্মান