Journalists detained: দিনভর ত্রিপুরার হোটেলেই বন্দী, সন্ধ্যায় অসমে আটক দুই মহিলা সাংবাদিক
Tripura Police: ওই দুই মহিলা সাংবাদিকের বক্তব্য, তাঁরা ত্রিপুরার যে হোটেলে রয়েছেন, সেই হোটেলে আজ সকালে পুলিশ আসে। ওই পুলিশকর্মীরা তাঁদের রীতিমতো হুমকি দিয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ।
আগরতলা : এবার খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে ত্রিপুরা পুলিশের রোষানলে পড়তে হল দুই মহিলা সাংবাদিককে। সমৃদ্ধি সাকুনিয়া এবং স্বর্ণা ঝা নামে ওই দুই সাংবাদিককে আজ সন্ধ্যায় আটক করেছে পুলিশ। আজ অসমের করিমগঞ্জ এলাকা থেকে তাঁদের আটক করে নীলমবাজার থানার পুলিশ।
জানা গিয়েছে, ওই দুই সাংবাদিকের থানায় গিয়ে ত্রিপুরা পুলিশের সঙ্গে দেখা করে তদন্তে সহযোগিতা করার কথা ছিল। কিন্তু পুলিশের দাবি, তাঁরা ত্রিপুরা ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই কারণেই ত্রিপুরা পুলিশের তরফে অসম পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় এবং তারপর তাঁদের আটক করা হয়েছে।
তাঁদের বিরুদ্ধে আগেই মামলা রুজু করেছিল ত্রিপুরা পুলিশ। ত্রিপুরা পুলিশের তরফে অবশ্য জানানো হয়েছে, ওই দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের এক সমর্থক অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই এই এফআইআর বলে জানানো হয়েছে। এদিকে ওই দুই মহিলা সাংবাদিকের বক্তব্য, তাঁরা ত্রিপুরার যে হোটেলে রয়েছেন, সেই হোটেলে আজ সকালে পুলিশ আসে। ওই পুলিশকর্মীরা তাঁদের রীতিমতো হুমকি দিয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ সমৃদ্ধি এবং স্বর্ণার।
জানা গিয়েছে, ত্রিপুরায় সাম্প্রতিক যে হিংসার খবর ছড়িয়েছিল, সেই সংক্রান্ত খবর সংগ্রহ করছিলেন তাঁরা। যদিও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, ওই হিংসার অভিযোগ ভুয়ো। অভিযোগকারী কাঞ্চন দাসের বক্তব্য, ওই দুই সাংবাদিক বিভিন্ন ধর্মীয় গোষ্ঠীর মধ্যে বৈরিতা ছড়ানোর কাজে যুক্ত ছিল এবং অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৫৩-এ ধারা এবং ১২০ -বি ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।
সমৃদ্ধি সাকুনিয়া আজ একটি টুইটে অভিযোগ করেছেন যে তাদের হোটেল থেকে বেরোতে দেওয়া হচ্ছে না। সূত্রের খবর, পুলিশের তরফে তাঁদের হাতে একটি নোটিস ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। পরে ২১ নভেম্বর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁদের হাজিরা দিতে বলা হয়েছে৷
FIR? in #Tripura@Jha_Swarnaa and I, the correspondent at @hwnewsnetwork have been booked under 3 sections of IPC at the Fatikroy police station, Tripura.
VHP filed complaint against me and @Jha_Swarnaa FIR has been filed under the section: 120(B), 153(A)/ 504.
Copy of FIR pic.twitter.com/a8XGC2Wjc5
— Samriddhi K Sakunia (@Samriddhi0809) November 14, 2021
ত্রিপুরা পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, “এফআইআর-এর ভিত্তিতে আমরা আজ ত্রিপুরার ধর্মনগর মহকুমার একটি হোটেলে থাকা সাংবাদিকদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম। আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলার অনুমতি নিয়েছিলাম। প্রাথমিক তথ্যের জন্য তাঁদের সঙ্গে কথা বলেছিলাম। আমরা তাঁদের একটি নোটিস দিয়েছি। তাঁরা আমাদের কিছু সময় দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন, যাতে তাঁরা তাঁদের আইনজীবীর সঙ্গে হাজির হতে পারেন। সেই অনুমতি দেওয়া হয়েছে।”
সমৃদ্ধি সাকুনিয়া আজ সকালে এক টুইটে অভিযোগ জানিয়েছেন, “আমাদের আগরতলার উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পূর্ণ সহযোগিতা সত্ত্বেও আমাদের যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি। আমাদের হোটেলের বাইরে প্রায় ১৬-১৭ জন পুলিশকর্মী মোতায়েন রয়েছে।”
এদিকে ত্রিপুরায় মসজিদ ভাঙা ও ধর্ষণের যে খবরগুলি বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়েছে, তা সম্পূর্ণ ভুয়ো। শনিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে বিবৃতি জারি করে এ কথা জানানো হল। বিগত কয়েকদিন ধরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় একাধিক খবর ভাইরাল হয়েছে, যেখানে ত্রিপুরার গোমতী জেলায় একটি মসজিদ ভাঙচুর ও একাধিক মহিলাকে ধর্ষণের অভিযোগ করা হয়েছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই মহারাষ্ট্রেও অশান্তি ছড়িয়েছে। ত্রিপুরা পুলিশের পর এ বার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফেও জানানো হল খবরগুলি ভুয়ো এবং তথ্য বিকৃত করে সংবাদ পরিবেশন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন : Narendra Modi: ভোটমুখী ত্রিপুরায় ‘কৌশলী’ নমো, তৈরি হবে প্রায় দেড় লাখ পাকা বাড়ি