AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

দেশজুড়ে লক্ষদ্বীপকে বাঁচানোর আর্তি, প্রশ্নের মুখে প্রশাসক প্রফুল্ল

প্রফুল্ল পটেলের বিরোধিতা করে লক্ষদ্বীপের মানুষের পাশে দাঁড়ানোর কথা বলেছেন বিরোধী একাধিক নেতা।

দেশজুড়ে লক্ষদ্বীপকে বাঁচানোর আর্তি, প্রশ্নের মুখে প্রশাসক প্রফুল্ল
ফাইল চিত্র
| Updated on: Jun 06, 2021 | 2:06 PM
Share

নয়া দিল্লি: টুইটারে প্রতি ৩০ মিনিটে ১ হাজারের বেশি টুইট হচ্ছে যেখানে লেখা হ্যাশট্যাগ সেভ লক্ষদ্বীপ (Lakshadeep)। অর্থাৎ নেট মাধ্যমে লাক্ষদ্বীপকে বাঁচানোর আর্তি। এ বার প্রশ্ন, কেন ভারতের অন্যতম সুন্দর-সমৃদ্ধ এই দ্বীপকে বাঁচাতে হবে? সমস্যাটা কোথায়? এ বিষয়ে বিরোধী নেতারা অভিযোগের আঙুল তুলছেন লক্ষদ্বীপের প্রশাসক প্রফুল্ল খোড়া পটেলের বিরুদ্ধে। তাঁদের অভিযোগ, ‘তুঘলকি’ আইন এনে লক্ষদ্বীপের সংস্কৃতি বিঘ্নিত করার চেষ্টা করছেন প্রফুল্ল। কংগ্রেস নেতা তথা ওয়ানাদের সাংসদ রাহুল গান্ধী টুইট করে লিখেছেন, “লক্ষদ্বীপ ভারতের সম্পদ। অশিক্ষিত ধর্মান্ধরা তা নষ্ট করে দিচ্ছে। আমি লক্ষদ্বীপের মানুষের পাশে আছি।” কার্যত প্রফুল্ল পটেলের বিরোধিতা করে লক্ষদ্বীপের মানুষের পাশে দাঁড়ানোর কথা বলেছেন বিরোধী একাধিক নেতা।

লক্ষদ্বীপের শাসন পরিকাঠামো: লক্ষদ্বীপ একাধিক বিচ্ছিন্ন দ্বীপকে নিয়ে গঠিত ভারতের সবচেয়ে ছোট কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল। লক্ষদ্বীপে ত্রিস্তরীয় পরিকাঠামো রয়েছে। প্রথমত আঞ্চলিক স্তরে পঞ্চাতে, দ্বিতীয়ত সমগ্র লক্ষদ্বীপ থেকে একজন নির্বাচিত সাংসদ, তৃতীয়ত রাষ্ট্রপতি নিযুক্ত একজন প্রশাসক। এর আগে লক্ষদ্বীপের প্রশাসক ছিলেন আইপিএস দীনেশ্বর শর্মা। তাঁর আগেও আইপিএস ও আইএএস অফিসাররা লক্ষদ্বীপের প্রশাসকের কাজ করেছেন। ৪ ডিসেম্বর মৃত্যু হয় আইপিএস দীনেশ্বর শর্মার। এরপর লক্ষদ্বীপের প্রশাসক পদ পান প্রথম কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। তাঁর নাম প্রফুল্ল কে পটেল।

প্রশাসক প্রফুল্ল পটেলের বিরুদ্ধে বিরোধীদের অভিযোগ: লক্ষদ্বীপে অপরাধের হাত নগন্য। তারপরও একাধিক আইন এনে লক্ষদ্বীপের সংস্কৃতিতে আঘাত হানতে চাইছেন পটেল। পুরনো রীতির তোয়াক্কা না করে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের তোয়াক্কা না করেই আইন আনছেন তিনি। এমনটাই অভিযোগ প্রফুল্ল খোড়া পটেলের বিরুদ্ধে। গত ডিসেম্বরে প্রশাসক পদে বসার পর একাধিক খসড়া আইন এনেছেন তিনি।

কী কী খসড়া আইন?

গো-হত্যা নিষিদ্ধ: লক্ষদ্বীপের সংস্কৃতি ও কেরলের মালায়লাম জনগোষ্ঠীর সংস্কৃতির মিল রয়েছে। তাঁরা গোমাংস খান। কিন্তু প্রশাসকের পদে বসে গোমাংস নিষিদ্ধ করার আইন আনার প্রস্তাব দিয়েছেন প্রফুল্ল কে পটেল।

ভোটে লড়ার মাপকাঠি: স্থানীয় পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোটে লড়ায় বেশ কিছু শর্ত রয়েছে। তবে এক বিশেষ শর্ত জারি করার কথা বলেছেন প্রফুল্ল পটেল। যেখান বলা হয়েছে, যেসব প্রার্থীর ২-এর বেশি সন্তান রয়েছে তাঁরা ভোটে লড়তে পারবেন না। কেন এহেন আইন আনার কথা বলছেন প্রফুল্ল? তাহলে কি লক্ষদ্বীপের জন্মহার অত্যন্ত বেশি? পরিসংখ্যান বলছে সেখানে জন্মহার ১.৪। ভারতের উত্তর প্রদেশে বা বিহারে সেটা ৩ এর বেশি। অর্থাৎ জনসংখ্যা বৃদ্ধির সমস্যা নেই লক্ষদ্বীপে। সেখানকার স্থানীয়দের অভিযোগ, বহু প্রভাবশালী নেতা যাতে নির্বাচনে লড়তে না পারেন, তাই এই আইন আনতে চাইছেন প্রফুল্ল পটেল।

গুন্ডাদমন আইন: একটি গুন্ডাদমন আইন আনতে চাইছেন প্রফুল্ল পটেল। যেখানে বিচার ব্যবস্থার আগে পুলিশের ক্ষমতা বৃদ্ধি করার উদ্দেশ্য রয়েছে। অর্থাৎ কাউকে কোর্ট ট্রায়ালে না ফেলেই আটক করে রাখার ক্ষমতা থাকবে পুলিশের হাতে। লক্ষদ্বীপে অপরাধ প্রবণতা অত্যন্ত কম। তাপরেও এই আইন কেন? উঠছে প্রশ্ন।

মদ বিক্রির সিদ্ধান্ত: এ যাবৎ লক্ষদ্বীপে মদ বিক্রির অনুমতি ছিল না। কিন্তু প্রফুল্ল পটেল প্রশাসক হওয়ার পর তিনি মদ বিক্রিতে অনুমতি দেন।

Prafulla Khoda

গ্রাফিক্স- অভীক দেবনাথ

কে এই প্রফুল্ল পটেল?

প্রফুল্ল পটেল একজন আদ্যোপ্রান্ত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। ২০০৭ সালে বিজেপির বিধায়ক হন প্রফুল্ল পটেল। ২০১০ সালে অমিত শাহ সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর। তার জায়গায় গুজরাটের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হন প্রফুল্ল। এরপর ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদীর সরকার আসার পর দমন ও দিউর প্রশাসক হন প্রফুল্ল কে পটেল। ২০১৬ সালে দাদরা ও নগর হাভেলিরও প্রশাসক হন তিনি। এরপর দাদরা-নগর হাভেলি ও দমন-দিউকে জুড়ে দিয়ে দাদরা-নগর হাভেলি ও দমন-দিউ হয়ে যায়। এরপর লক্ষদ্বীপের প্রশাসক পদে বসেন প্রফুল্ল পটেল।