AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

কার্যত লকডাউনের জের, পেটে টান বঙ্গবাসীর, লাওস থেকে এল সাহায্য, নেপথ্যে অভিজিৎ

পেশায় অলঙ্কার শিল্পী অভিজিৎ একদা পেটের টানে পাড়ি দিয়েছিলেন লাওসে। তারপর সেখানেই সংসার। ডোমজুড়ের নোনাকুণ্ডু গ্রামে বড় হওয়া অভিজিৎ না ভাল ইংরেজি বলতে পারেন না হিন্দি। বাংলাতেও গ্রামীণ টান।

কার্যত লকডাউনের জের, পেটে টান বঙ্গবাসীর, লাওস থেকে এল সাহায্য, নেপথ্যে অভিজিৎ
নিজস্ব চিত্র
| Updated on: Jun 03, 2021 | 12:12 AM
Share

প্রীতম দে: বঙ্গে করোনা নিয়ন্ত্রণে জারি ‘কার্যত লকডাউন’। দিন এনে দিন খেয়েই যাঁদের যাপন, বিপদে সবচেয়ে বেশি পড়েছেন তাঁরাই। উপরি পাওনা ঘূর্ণিঝড় ইয়াস (Cyclone Yaas)। তার দাপটে ভেঙেছে বাঁধ, ভেসেছে ঘর। গৃহহীন, অভুক্ত সেই মুখগুলির পাশে পরিযায়ী পাখির মতো এসে দাঁড়িয়েছে রাজনৈতিক দলগুলি। কখনও বা একটা-দুটো স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। এই পরিস্থিতিতে লাওস থেকে লাওকিপ পাঠালেন অভিজিৎ কোলে।

লাওস (Laos)। দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার একমাত্র স্থলবেষ্টিত দেশ। দেশটি পূর্বে ইন্দোচীন ইউনিয়ন তথা ফরাসি ইন্দোচিনের অংশ ছিল। ১৯৫৩ সালে দেশটি স্বাধীনতা লাভ করে। ষাটের দশকে ভিয়েতনামের যুদ্ধে জড়িয়ে পড়া এবং শতাব্দী প্রাচীন রাজতন্ত্রের খোলস ছেড়ে গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র হিসেবে নবজন্ম হয় লাওসের। এই দেশের উত্তরে চিন, পূর্বে ভিয়েতনাম, দক্ষিণে কম্বোডিয়া, পশ্চিমে থাইল্যান্ড এবং উত্তর পশ্চিমে রয়েছে মায়ানমার। মিশ্র ভাষা-ধর্ম-বর্ণ-জাতিবেষ্টিত এই ক্ষুদ্র দেশটিতে জনসংখ্যাও অনেক কম। তার থেকেও কম অর্থমূল্য। তবু চেষ্টার ত্রুটি নেই হাওড়ার ছেলে অভিজিতের। বাংলার বর্তমান পরিস্থিতির কথা ভেবেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন অভিজিৎ। লাওস (Laos) থেকেই হাওড়ার ডোমজুড় ব্লকের নোনাকুণ্ডুতে ১৬ টি গ্রামের ১১০০ পরিবারের জন্য বিনাপয়সার হাট বসানোর ব্যবস্থা করেছেন লাওসের এই প্রবাসী বাঙালি।

পেশায় অলঙ্কার শিল্পী অভিজিৎ একদা পেটের টানে পাড়ি দিয়েছিলেন লাওসে। তারপর সেখানেই সংসার। ডোমজুড়ের নোনাকুণ্ডু গ্রামে বড় হওয়া অভিজিৎ না ভাল ইংরেজি বলতে পারেন না হিন্দি। বাংলাতেও গ্রামীণ টান। এক লাও ভাষাটাই খানিক শিখে বুঝে গিয়েছেন। করোনা মহামারী উপরন্তু লকডাউনের জেরে সস্ত্রীক বিদেশেই আটকে গিয়েছেন অভিজিৎ। ফিরতে পারেননি বাংলায়। অগত্যা গ্রামের পঞ্চায়েত প্রধানের সঙ্গে যোগাযোগ করে সেখানেই বিনাপয়সায় হাট বসাানোর ব্যবস্থা করেছেন অভিজিৎ। সেই হাটে পাওয়া যাচ্ছে, চাল ডাল, তেল, নুন, সোয়াবিন, সাবান, মাস্ক, স্যানিটাইজার ইত্যাদি।

সাধারণত, ‘প্রবাসী বাঙালি’ শব্দবন্ধের সঙ্গে অর্থানুকূল্য়ের এক চিরাচরিত পরম্পরা যেন জড়িয়ে আছে। অভিজিৎবাবু তেমন কিছুই নেই। লাওকিপের অর্থমূল্য ভারতীয় মুদ্রার চেয়েও কম। ভারতে একটাকা মানে লাওসে একশো ত্রিশ টাকার কাছাকাছি। এতটাই টাকার ফারাক। তবুও নিজের সঞ্চিত অর্থ দিয়েই নিজের গ্রামের মানুষের জন্য় যথাসাধ্য় ত্রাণ দিয়ে সাহায্য় করেছেন অভিজিৎ। নিজের রোজগারও যে অনেক তা নয়, এমনকী, লকডাউনে আয় অনিশ্চিত। তবুও কেন করছেন এই সাহায্য়? লাজুক অভিজিৎ তাঁর আদি গ্রাম্য ঢঙে বলেন, “আমি নিজেও গ্রামে খুব কষ্ট করেই বড় হয়েছি। ঘূর্ণিঝড়ে মানুষের কী অবস্থা হতে পারে জানি। কোনও প্রচার চাই না। শুধু মানুষগুলো ভাল থাকুক,এটুকুই চাওয়া।”

আরও পড়ুন: ‘দিদি আপনি কেবল তৃণমূলের মুখ্যমন্ত্রী নন…পদক্ষেপ করুন’, কাতর অনুরোধ বিজেপি বুথ সভাপতির