Amartya Sen: হাইকোর্টের নির্দেশে স্বস্তিতে অমর্ত্য সেন, আপাতত কোনও পদক্ষেপ করবে না বিশ্বভারতী
Amartya Sen: প্রায় ১.৩৮ একর জমিতে রয়েছে অমর্ত্য সেনের বাড়ি 'প্রতীচি'। সেই বাড়ির ১৩ ডেসিমেল জায়গা বিশ্বভারতীর বলে দাবি করেছে কর্তৃপক্ষ। আগেও একাধিকবার তাঁকে নোটিস দেওয়া হয়েছে।
কলকাতা : হাইকোর্টে স্বস্তি পেলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। ৬ মে-র মধ্যে তাঁর শান্তিনিকেতের পৈতৃক বাড়ির ১৩ ডেসিমেল জায়গা খালি করে দেওয়ার কথা বলেছিল বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। নিম্ন আদালতে শুনানি না হওয়া পর্যন্ত বিশ্বভারতীর তরফে কোনও পদক্ষেপ করা যাবে না বলে জানিয়ে দিল বিচারপতি বিভাস রঞ্জন দের সিঙ্গল বেঞ্চ। নোটিসের ওপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেওয়া হল। অর্থনীতিবিদের আশঙ্কা ছিল, নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলে সশস্ত্র পুলিশ নিয়ে পৌঁছে যেতে পারে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। তবে হাইকোর্টের নির্দেশে আপাতত কোনও পদক্ষেপ করা যাবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। আগামী বুধবার নিম্ন আদালতে রয়েছে ওই মামলার শুনানি।
কয়েকদিন আগেই পৈতৃক ভিটের ১৩ ডেসিমেল জায়গা খালি করে দেওয়ার নোটিস দেওয়া হয় নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনকে। ৬ মে-র মধ্যে ওই জায়গা খালি করার নোটিস দেয় বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সেই ইস্যুতেই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন অমর্ত্য সেন। ওই নোটিসকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা করেন তিনি। জরুরি ভিত্তিতে শুনানির আর্জি জানানো হয়েছিল। বৃহস্পতিবার সকালে হাইকোর্টে শুনানি হয়।
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে বীরভূমের নিম্ন আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন অমর্ত্য সেন। কিন্তু বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ সময় বেঁধে দেওয়ায় হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন অমর্ত্য সেন। আবেদনে তিনি জানান, ৬ মে অর্থাৎ শনিবারের পর কর্তৃপক্ষ তাঁর জায়গা কেড়ে নিতে পারে। তাঁর দাবি, সিউড়ি আদালত তাঁর আবেদনের গুরুত্ব বুঝতে পারেনি।
বিশ্বভারতীর তরফে আইনজীবী সুচরিতা বিশ্বাস এদিন বলেন, ‘নিম্ন আদালত কোনও নির্দেশ দেয়নি। তার মাঝে কীভাবে নতুন মামলা! হাইকোর্ট শুনতে পারে না এই মামলা।’ ইতিমধ্যেই স্থিতাবস্থার নির্দেশ রয়েছে। ফলে পরে নিম্ন আদালতে শুনানি হলে কী সমস্যা? সেই প্রশ্ন তোলেন আইনজীবী। তিনি আরও বলেন, ‘১৩ ডেসিমেল জমি দখল করে আছেন। ইউনিভার্সিটির জমি নিয়ে আছেন। লজ্জা পাওয়া উচিৎ।’ অমর্ত্য সেনের তরফে আইনজীবী বলেন, ‘স্থিতাবস্থা থাকলেও তারা সশস্ত্র পুলিশ নিয়ে আসতে পারে। সেই আশঙ্কা করছেন অমর্ত্য সেন।’ এরপর অন্তবর্তী স্থগিতাদেশ দেন বিচারপতি।
প্রায় ১.৩৮ একর জমিতে রয়েছে অমর্ত্য সেনের বাড়ি ‘প্রতীচি’। সেই বাড়ির ১৩ ডেসিমেল জায়গা বিশ্বভারতীর বলে দাবি করেছে কর্তৃপক্ষ। আগেও একাধিকবার তাঁকে নোটিস দেওয়া হয়েছে। তবে এবার চূড়ান্ত সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
৬৯ পাতার আবেদনে অর্থনীতিবিদ উল্লেখ করেন, শান্তিনিকেতনে এই ১.৩৮ একর জমির ওপর বাড়ি তৈরি করেছিলেন তাঁর বাবা আশুতোষ সেন। ৮০ বছর ধরে সেখানেই বসবাস করছে তাঁর পরিবার। আচমকা চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ১৩ ডেসিমেল জায়গা ছাড়ার নোটিস পান তিনি। অমর্ত্য সেন আরও দাবি করেছেন, বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ যে পদক্ষেপ করেছে, তা আদতে প্রতিহিংসা আর প্ররোচণার ফল। বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিস্থিতির অবনতির কথা ঢাকতেই তাঁর বিরুদ্ধে এই ধরনের পদক্ষেপ করা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন অমর্ত্য সেন। এক্ষেত্রে অবৈধভাবে দখল করার কথা বলা যাবে না বলেও দাবি করেছেন তিনি। তাঁর দাবি, লিজের মেয়াদ শেষ হয়নি এখনও।
উল্লেখ্য, বিশ্বভারতী দাবি করেছে, আশ্রমের ১৩ ডেসিমেল জায়গা বেআইনিভাবে দখল করে আছেন অর্থনীতিবিদ। সেই জায়গাই খালি করার নোটিস দেওয়া হয়েছে। বিশ্বভারতীর এই নোটিসের বিরোধিতা করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রয়োজনে অবস্থানে বসার কথাও বলেছেন তিনি।