West Bengal Assembly: ‘সারমেয় পুষে যেটুকু শিক্ষা পেয়েছি’, অগ্নিমিত্রাকে বিধানসভার রীতি বোঝালেন পার্থ
West Bengal Assembly: সাসপেনশন তোলার জন্য বৃহস্পতিবার মোশন এনেছে বিজেপি। মোশন পাশ হয়েছে বিধানসভায়।
কলকাতা: বিধানসভার নিয়ম-কানুন সম্পর্কে কোনও জ্ঞান নেই বিরোধীদের। কী ভাবে হাউজ চলে, সেটা জানতে হবে। বিরোধীদের আনা মোশন নিয়ে আলোচনা চলাকালীন এমনটাই বললেন পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বিধানসভায় মোশন না এনে কেন বিরোধীরা আদালতে গেলেন, সেই প্রশ্নও তুলেছেন পার্থ। তাঁর দাবি, বিরোধী সদস্যরা বিধানসভায় এসে আলোচনা করবে, সেটাই কাম্য, কোনও তিক্ততা চান না তিনি। সাত বিজেপি বিধায়কের সাসপেনশন তোলার আবেদন জানিয়ে বৃহস্পতিবার মোশন আনে বিজেপি। বিধানসভায় সেই মোশন পাশ হয়েছে। ফলে, এবার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী-সহ সাত বিধায়কের বিধানসভা কক্ষে প্রবেশ করার ক্ষেত্রে কোনও বাধা রইল না।
এ দিন বিরোধীদের হয়ে মোশন আনেন বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পল। এরপরই পার্থ বলেন, ‘বিরোধী সদস্যরা বিধানসভায় এসে আলোচনা করবেন, এটাই চাই। যে ঘটনার অবতারণা করে আপনারা হাইকোর্টে গেলেন, সে বিষয়ে আমাদের কিছু বলার নেই। স্পিকার তো বলেছিলেন, আপনারা এর বিরুদ্ধে মোশন আনুন। বিবেচনা করব। সেটা না করে হাইকোর্টে গেলেন।’
স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আমি আগে বলেছিলাম, হাউজে মোশন আনলে আমরা আলোচনা করব।’
স্পিকারকে জবাব দিয়ে অগ্নিমিত্রা পল বলেন, ‘যেখানে বিরোধী দলনেতা নেই, বিরোধী মুখ্য সচেতক নেই, সেখানে কী ভাবে হাউজ চলতে পারে? আমরা আগে মোশন এনেছিলাম আপনার পছন্দ হয়নি।’
পার্থ চট্টোপাধ্যায় আরও বলেন, ‘হাউজে বিরোধীদের বড় ভূমিকা থাকে। কিন্তু, বিরোধী পক্ষ যদি আইন না মানেন, তাহলে সেটা দুঃখের। আমিও বিরোধী দলনেতা ছিলাম। আমাদের উচিত বিধানসভার নিয়ম কানুন সম্পর্কে জ্ঞান থাকা। আমাদের সকলের উচিত বিধানসভার নিয়ম মেনে নেওয়া।’
আদালতে সারমেয় নিয়ে কটাক্ষ করা হয়েছিল পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। বিচারপতি উল্লেখ করেছিলেন, পোষ্যের জন্য ফ্ল্যাট আছে পার্থ-র। এ দিন সেই প্রসঙ্গে টেনে এনে তিনি বলেন, ‘যেটুকু শিক্ষাদিক্ষা পেয়েছি সারমেয় পুষে, সেটা থেকে বলতে পারি, এই সভা চালানোর প্রধান দায়িত্ব বিধানসভার স্পিকারের।’ তিনি উল্লেখ করেন, স্পিকারের কাজে হস্তক্ষেপ আজ পর্যন্ত কেউ করেননি। তার জন্য ধন্যবাদ বিচারপতিকে।
মোশন গ্রহণ করে স্পিকার বলেন, ‘বিধানসভার ঐতিহ্য বজায় রাখতে আমি আমার বাকি সদস্যদের বলব মোশনের পক্ষে যেতে। পরিষদীয় রীতিনীতি মেনে আপনারা কাজ করবেন। আমি আর তিক্ততা বাড়াতে চাই না। কাউকে বাইরে রেখে বিধানসভা চালানোর ইচ্ছে আমাদের নেই।’
এ দিন বিধায়কদের সাসপেনশন উঠে যাওয়ার পর বিধানসভায় যায় বিজেপির কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ। বিধায়কদের মিষ্টিমুখ করান তিনি। দিলীপ ঘোষ বলেন, এটা আরও আগে হওয়া উচিত ছিল। বিজেপি বিধায়ক অশোক লাহিড়ী এ দিন ফের স্পিকারকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘আপনার আমলে যে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে, সেগুলো ইতিহাসের পাতায় লেখা থাকবে।’
উল্লেখ্য, এ দিন বিএ কমিটির বৈঠকে বিজেপি বিধায়কের সাসপেনশন নিয়ে আলোচনা হয়। পার্থ চট্টোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের মত বিধায়কেরা সাসপেনশন তোলার পক্ষে মত প্রকাশ করেন। এরপরই বিরোধীদের মোশন গৃহীত হয়।